চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন, পিসিবির বিবৃতি
Published: 25th, February 2025 GMT
পাকিস্তান ২৯ বছর পর ঘরের মাঠে আইসিসির টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে তাই বাড়তি সতর্ক দেশটি। যদিও নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে পাকিস্তান সফরে যায়নি ভারত। নিরাপত্তা চাদরের মধ্যেই বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড ম্যাচে হাতে প্লাকার্ড দিয়ে এক দর্শক মাঠে ঢুকে পড়ে।
তার হাতে ছিল পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক-এর প্রধান হাফিজ সাদ হুসেইন রিজভির ছবি সম্বলিত প্লাকার্ড। তিনি নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্রকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন।
এই ঘটনায় নতুন করে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এক বিবৃতি দিয়ে পিসিবি জানিয়েছে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে আরও সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
বিবৃতি’তে পিসিবি জানিয়েছে, মাঠে দর্শক ঢুকে পড়ার বিষয়টি পিসিবি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। খেলোয়াড় ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের নিরাপত্তা পিসিবির প্রধান দায়িত্ব। যে কারণে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
পিসিবি জানিয়েছে, মাঠে ঢুকে পড়া দর্শককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আর যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রতি ম্যাচে মাঠে দর্শক আসার খবর স্বস্তি বলে জানিয়েছে পিসিবি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রামুতে গোলাগুলিতে এক ব্যক্তি নিহত, অস্ত্র উদ্ধার
কক্সবাজারের রামুর কাউয়ারখোপ সীমান্তে চোরাই গরু পাচারকে কেন্দ্র করে দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ নবী (৪২)। তিনি ওই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী খামারপাড়ার মৃত আলী আকবরের ছেলে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চৌধুরী খামার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েক শ গরু পাচার করছিলেন রামুর কাউয়ারখোপ, কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়া ইউনিয়নের কয়েকজন প্রভাবশালী। রাখাইন রাজ্য থেকে চোরাই পথে আনা গরুগুলো প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে রেখে পরে রামুর গর্জনিয়া-উখিয়ারঘোনা সড়ক দিয়ে কক্সবাজারের ঈদগাঁও, চকরিয়া পৌঁছানো হয়। সড়কপথে গরু পাচারের সময় কয়েকটি সশস্ত্র ডাকাত দলকে গরুপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে কমিশন দিতে হয়। কমিশন পেলে ডাকাত দলের সদস্যরা গরুগুলো সশস্ত্র পাহারা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
সোমবার সন্ধ্যার দিকে রাখাইন রাজ্য থেকে পাচার করে আনা শতাধিক গরু পৌঁছে দেওয়া নিয়ে দুটি ডাকাত দলের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান মোহাম্মদ নবী। গুলিবিদ্ধ হন উভয় পক্ষে আরও অন্তত চারজন।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মিয়ানমারের চোরাই গরু টানা পার্টির (সরবরাহকারী) লোকজনের মধ্যে গোলাগুলিতে মোহাম্মদ নবী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোহাম্মদ নবীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সন্ত্রাসীদের ধরতে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। রাত ১০টার দিকে পুলিশ সন্ত্রাসীদের আস্তানা থেকে দুটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সন্ধ্যায় মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আনা শতাধিক গরু গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ নবী বাহিনীর সঙ্গে আজিজুল হক বাহিনীর তর্ক হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। গুলিতে মোহাম্মদ নবীসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। গুলি লাগে নবীর তলপেটে। আজিজুল হক বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন নিহত নবীর চাচাতো ভাই সন্ত্রাসী হোছন, হানিফসহ ১০-১৫ জন। এই দুজনের নেতৃত্বে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গরু পাচার করা হয়। নবী হত্যার ঘটনায় রাত ১০টা পর্যন্ত রামু থানায় মামলা হয়নি। ওসি ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, টানা এক বছর ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের চোলাই গরু পাচারের কারবার চলছে। মাঝেমধ্যে বিজিবি ও পুলিশের অভিযান চালিয়ে কিছু গরু ও চোরাই পণ্য জব্দ করলেও অধিকাংশ ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা ১১ মাসের সংঘাত–লড়াইয়ে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশ (২৭০ কিলোমিটার) এলাকা দখলে নেয় দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। শুরু থেকে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির কতিপয় প্রভাবশালী রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে বাংলাদেশ থেকে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, জ্বালানি, মাছ-মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ দিয়ে বিপরীতে সেখান থেকে দেশে নিয়ে আসছে হাজার হাজার গরুর সঙ্গে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথ আইস ও সোনার চালান। গরুসহ মাদকের চালান নিয়ে ডাকাত দলের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে চলেছে। গত এক বছরে গোলাগুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে; কিন্তু চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না কিছুতেই।