বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম আকাশ, মেহেদী হাসান ও যুগ্ম সদস্য সচিব শেফাউর রহমান শিপনের ওপর হামলার ঘটনায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৯ থেকে ১০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার সংগঠনটির জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে রাতেই সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। 

মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বাদির লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত সুমন, কিরণ ও নাজমুল নামে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিদের বাড়ি শহরের বিভিন্ন মহল্লায়।

এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের পৌর পার্কের শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা পরিকল্পিত হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। 

এসময় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন ছাত্রনেতারা। একই সঙ্গে হামলার ঘটনার সময় সদর থানার ওসিসহ পুলিশের নীরব ভূমিকায় প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী কুটির শিল্প ও পণ্য মেলায় একদল দুর্বৃত্ত ছাত্র নেতাদের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ধারালো ছোড়া দিয়ে আঘাত করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম আকাশ, মেহেদী হাসান ও যুগ্ম সদস্য সচিব শেফাউর রহমান শিপন আহত হন।

পরে তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সদর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

মাহমুদ আল হাসান ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সদর হাসপাতালে যান। এসময় আহতদের খোঁজখবর নিয়ে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থার আশ্বাস দেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদর থ ন সদস য ঘটন র শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হত্যার বিচার চাইলেন আব্বাস 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, শেখ হাসিনা তো পনেরো বছর ক্ষমতায় ছিল ভোট ছাড়া। আপনারাও থাকুন, আমরা না করবো না। কিন্তু মানুষ আপনাদের ছাড় দিবে না। আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা কথা বলতে চাই।  দরকার হলে বলে দেন বাংলাদেশে আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের মেট্রোহল মোড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন,বিএনপিতে অসৎ লোকের কোন জায়গা নেই। ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক নেতা মামুনকে হত্যা করা হয়েছে গুলি করে কয়েকদিন আগে। আমি এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি। 

তিনি আরো বলেন,আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না। 

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছে। অনেকে বলে ওমুক ভাইকে সেখানে দেখতে চাই, ওখানে দেখতে চাই৷ বিএনপির কোন নেতাকর্মী যেন এসকল কথা না বলে। আমরা জেল খেটেছি, মামলা খেয়েছি এ নির্বাচনের জন্য নয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য। আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য লড়াই করিনি।

তিনি বলেন, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে এর পেছনে বিশাল ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তার একটাই কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এটা হয়ে গেলে তাদের অনেক সুবিধা হয়। কারণ গ্রামে গঞ্জে অনেকের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে পায়ের তলায় মাটি আনতে চান।

আমরা জেনেছি বিডিআর হত্যা হয়েছিল বাইরের একদল প্রশিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোকদের দিয়ে। তারা এদেশে থাকে না। তারা বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তাদের বিচার হয়নি। যাদের বিচার হয়েছে তারা আসলে নির্দোষ। জেলে তাদের দেখে আমরা আমাদের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।

যারা জেলে আছে তাদের ব্যাপারে কোন কথা শুনতে চাই না। তারা বিগত পনেরো বছর ধরে জেলে পঁচে মরছে। তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে না আমরা জানি না। আমরা চাই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক। 

 

আমাদের দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে গেছে৷ কারা করছে আপনারা জানেন। যারা বলে দিনের বেলা আমরা হাঁটতে না পারলে রাতে ওদের ঘুমোতে দিবো না। কারা বলে এ কথা দিল্লী বসে। যারা এদেশের সর্বনাশ করে ভারতে বসে আছে তারাই চক্রান্ত করছে কীভাবে এ দেশকে অশান্ত করা যায়।

এদেশের মানুষের ঐক্যকে আপনারা ভাঙতে পারবেন না। এদেশের মানুষ শান্তি চায়। মানুষ বাঁচতে চায়। আপনারা আমাদের রাতে শান্তিতে ঘুমোতে দিবেন না, লুটপাট করবেন, আগুন দিবেন বলেছেন আপনারা। চেষ্টা করে দেখুন, মানুষ আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দিবে না।

এদেশের মানুষ এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা সবাই তাদের সমর্থন দিয়েছি। আমরা বলেছি এ সরকার ব্যার্থ হলে দেশ ব্যার্থ হয়ে যাবে। সুতরাং এ সরকারকে ব্যার্থ হতে দেয়া যাবে না। আমরা বলেছিলাম নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করবো, কিন্তু আজীবন তো অপেক্ষা করবো না।

একজন বলে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবেনা। আরেকজন বলে নির্বাচন যারা চায় তারা দেশের মঙ্গল চায় না। আরে সতেরো বছর কোথায় ছিলেন আপনি। সতেরো বছর আন্দোলন করেছি এই নির্বাচনের জন্য। জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই সরকার গঠন করবে। তারা ধরেই নিয়েছে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। কারণ বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল। এ জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করতে একশ্রেনীর লোক মাঠে নেমেছে।

বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে কতিপয় ব্যাক্তি বিএনপি আওয়ামী লীগের মত হয়ে গেছে বলে। বিএনপিকে ভারতের দালাল বলে। বিএনপি কখনও ভারতের তাঁবেদারি করেনি। ভারতের তাঁবেদারি করলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আজ জীবিত থাকতেন।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলাম একটা মিটিংয়ে। সেদিন ভয়ে ভয়ে এসেছিলাম। তখন তো কারও জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। আজ আমাকে সার্কিট হাউজে রেস্ট নিতে দিয়েছে। গত সতেরো বছর হোটেলে থাকতাম, ভয়ে ভয়ে থাকতাম। সেবার শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছিলাম। আজ মুক্ত অবস্থায় লাখো লোকের সামনে মিটিং করে গেলাম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ