সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত কুলের ব্যাপক চাহিদা ও সুনাম থাকায় কৃষকরা চলতি বছর বেশি লাভের আশা দেখছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে কুলের আবাদ।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার উৎপাদিত কুল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। মন প্রতি পাইকারি বিক্রি করছেন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে। চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বাজারে কুল রপ্তানি করার আশা করছেন জেলা কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, সাতক্ষীরার কুল সারা দেশের বিখ্যাত। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৪৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কুলের আবাদ করা হয়েছে। এসব কুলের মধ্যে রয়েছে নারিকেল কুল, থাইআপেল কুল, বল সুন্দরী ও কাশ্মীর কুল।

প্রতি বিঘায় উৎপাদন হবে ৭০ থেকে ৮০ মন। কুলের বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। প্রকার ভেদে ১৫০ থেকে ২২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে জানান চাষিরা। আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কুলের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বাজারে কুল রপ্তানি করার আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার সাতটি উপজেলায় কুল চাষ ছড়িয়ে পড়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে কলারোয়া উপজেলায় ৪৭০ হেক্টর। তালা উপজেলায় ১৬৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় ১১২ হেক্টর, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪৫ হেক্টর, শ্যামনগর উপজেলায় ২৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ২০ হেক্টর এবং দেবহাটা উপজেলায় ৪ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হচ্ছে।

তালা উপজেলার মিঠাবাড়ি এলাকার কুলচাষি পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ও মো.

মেহেদী হাসান বলেন, আমরা বহুদিন ধরে কুল চাষ করছি। এ বছর এখন পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছি। বাগানে নাইকেল কুল, থাই আপেল কুল, বল সুন্দরী, টক কুলসহ বিভিন্ন জাত রয়েছে।

এর মধ্যে নাইকেল কুলের দাম সবচেয়ে বেশি, ১৮০-২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বিঘায় ১০০ মণ কুল উৎপাদন হয় এবং খরচ বাদ দিয়ে এক লাখ টাকা লাভ থাকে। এ বছরও একই রকম লাভের আশা করছি। চলতি বছর কুলের ফলনে কম তবে দাম বেশি পাওয়ায় তারা খুশি বলে জানান কুলচাষিরা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘‘চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৪৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কুলের আবাদ করা হয়েছে। এসব কুলের মধ্যে রয়েছে নারিকেল কুল, থাইআপেল কুল, বল সুন্দরী ও কাশ্মীর কুল। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হবে ৭০ থেকে ৮০ মন। কুলের বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কুলের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বাজারে কুল রপ্তানি করার আশা করছে কৃষি বিভাগ।’’

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কুলচাষিদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলার কুল চাষিরা দেড়শ কোটি টাকার বেশি বাজার মূল্য পাবেন।’’

ঢাকা/শাহীন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল য় উৎপ দ করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

টিপকাণ্ড: লতা সমাদ্দার, সুবর্ণা মোস্তফাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় টিপকাণ্ডের ঘটনায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দার, তার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় মালা এবং শোবিজের ১৬ তারকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে চাকরিচ্যুত সেই কনস্টেবল নাজমুল তারেক মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শেরেবাংলা নগর থানাকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলেন নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী তৌহিদ খান এ তথ্য জানান।

মামলায় আরো যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য সুবর্ণা মোস্তফা, নাট্য অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন, সাজু খাদেম, প্রাণ রায়, সায়মন সাদিক, মনোজ প্রামাণিক, স্বাধীন খসরু, চয়নিকা চৌধুরী, আশনা হাবিব ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, দেবী সান, নাজনীন নাহার চুমকি, সুষমা সরকার, কুসুম সিকদার। এছাড়া শোবিজের আরো বেশ-কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে নকল সরবরাহের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার

জামালপুরে মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২২ সালে টিপ পরা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের সময় এসব তারকারা ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশের মানহানি ঘটিয়েছেন। তারা সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও বক্তব্য দিয়ে নাজমুল তারেকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন, যার ফলে তার পেশাগত ও সামাজিক জীবনে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০২২ সালের ২ এপ্রিল রাজধানীর ফার্মগেটে একটি বাইক লতা সমাদ্দারের পায়ে লাগার জেরে পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তি তাকে ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে কটূক্তি করেন-এমন অভিযোগ তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেন তিনি। এরপর বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকা লতার পক্ষ নিয়ে টিপ পরা ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদে অংশ নেন।

ঘটনার জেরে নাজমুল তারেক চাকরি হারান। পরে তিনি আইনি লড়াইয়ে যান এবং চাকরি ফেরতের আবেদনও করেন। বর্তমানে সেই মামলা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছেও চাকরি পুনর্বহালের আবেদন করেছেন তিনি।

ঢাকা/এম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ