নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঢল
Published: 25th, February 2025 GMT
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, দেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, পতিত ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসরদের বিচারের দাবি, দেশ দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য অতি দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে সমাবেশ পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। এসময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি ) বিকেল তিনটায় দেশব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বিকেল শহরের ডনচেম্বারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ মাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
এদিকে কেন্দ্র ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ জেলা সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন সুসজ্জিত হয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিবের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিশেষ অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বেনজির আহমেদ টিটু, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ- অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন উদ্দিন, কাজী মনিরুজ্জামান মনির, আজহারুল ইসলাম মান্নান, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, নুরজাহান মাহবুব, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ আহমেদ টুটুল, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু, আঃ হাই রাজু, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, সাধারণ মানুষ জুয়েল আহমেদ, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল, সাধারণ সম্পাদক এড. বারী ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডাঃ শাহিন, সদস্য সচিব আলম মিয়া, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তারসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল র ল ইসল ম ব এনপ র স র রহম ন কম ট র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লাশ পুতে রেখে জায়গাটি ঘুরে ঘুরে পাহারা দেয় ইয়াসিন
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজিতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইয়াছিন। বুধবার পুলিশ চার দিনের রিমান্ডের পর তাকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ শামসুর রহমানের আদালতে হাজির করে। এ সময় ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ইয়াছিন জবানবন্দী দিয়েছেন বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানিয়েছেন।
স্ত্রী লামিয়া আক্তার, চার বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ লাবীব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারকে ইয়াছিন একাই হত্যা করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন তিনি।
ইয়াসিনকে গ্রেপ্তারের পর আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলেও চার দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার তাকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠায় পুলিশ। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা বটি উদ্ধার করে পুলিশ। একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামা-কাপড় ভরা একটি ব্যাগও উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন, ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া, তাদের সন্তান আব্দুল্লাহ ও স্বপ্নার লাশ গত ১১ এপ্রিল উদ্ধার করা হয়। একই দিন গ্রেপ্তার করা হয় ইয়াছিনকে। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলেও আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি একাই স্ত্রী সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছেন। মাদকের টাকার জন্য উচ্ছৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের মামলায় ইয়াছিনকে গত ২৭ রমজানের দিন গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঈদুল ফিতরের দুদিন আগে ইয়াছিন জামিনে ছাড়া পান। পুলিশ জানিয়েছে, তার স্ত্রী লামিয়া, সন্তান আব্দুল্লাহ এবং স্বপ্না মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ইয়াছিন জামিনে আসার পর গত ৮ এপ্রিল বাসায় যান। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় লামিয়ার বোন মানসিক রোগী স্বপ্না বটি নিয়ে তেড়ে আসেন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, স্বপ্নার কাছ থেকে ইয়াছিন বটিটি কেড়ে নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় স্বপ্না চিৎকার দিলে তাকেও কুপিয়ে গলা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করেন। শিশু আব্দুল্লাহর গলায় থাকা তাবিজের সুতা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তাকে। এরপর লামিয়া ও স্বপ্নার মাথা ও হাত-পা একটি বস্তায় এবং দেহ দুটি আরেকটি বস্তায় ভরে কাথা কম্বলে পেঁচিয়ে নেয়। পরে আব্দুল্লাহরসহ তিন লাশ রাস্তার পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, লামিয়া ও স্বপ্নার রক্তমাখা জামা-কাপড় একটি ব্যাগে ভরে সেটিসহ বটি বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন। এরপর অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় লামিয়ার বাসায় ছিলেন। ঘুরে ঘুরে লাশ চাপা দেওয়া স্থান পর্যবেক্ষণে রাখেন। গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
ওসি বলেন, আদালত ইয়াছিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড দিলেও হত্যার দায় স্বীকার করায় চতুর্থ দিনেই তাকে আদালতে জবানবন্দি দিতে পাঠানো হয়েছে। তিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লামিয়া ও স্বপ্নার বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে গত ১১ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা মামলায় লামিয়ার স্বামী ইয়াছিনকে প্রধান আসামি করা হয়। তার বাবা মো. দুলাল ও বোন শিমুকেও আসামি করা হয়েছে।