জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধীর যুগ্ম আহ্বায়ক
Published: 25th, February 2025 GMT
পটুয়াখালীর মহিপুর থানার জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব মুসুল্লি সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়েছেন। গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি ঘোষিত হয়। সেই কমিটিতে তাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
জানা যায়, পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমান এবং তার স্ত্রী কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাকিব মুসুল্লি। তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ‘জয় বাংলা ক্লাব’ -এর মহিপুর থানা শাখার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। রাকিবের বাবা মো.
স্থানীয়দের অভিযোগ রাকিব মুসুল্লি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় সমাজসেবা সংগঠনের নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠনের আড়ালে তিনি চাঁদাবাজি করতেন। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে এই সংগঠনে অর্থ দিতে বাধ্য করতেন তিনি। এছাড়া বিএনপি ও জামায়েতপন্থি ব্যবসায়ীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করতেন রাকিব।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মতো রাকিবও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। তিনি এলাকা ছেড়ে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন। সেখানে রাকিব মুসুল্লি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সঙ্গে যুক্ত হন। সবশেষ সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পান।
আলিপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. আল সাঈদ বলেন, ‘আমার বাবা আলীপুরের একজন ব্যবসায়ী। আমরা পারিবারিকভাবে বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো মানুষের বিরোধ নেই। শুধু বিএনপি করার অপরাধে রাকিব মুসুল্লি আমার নামে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে মালামাল নিয়ে টাকা দিত না রাকিব। শুরু আমার কাছ থেকে নয়, বহু মানুষের কাছ থেকে সে নিয়মিত টাকা নিত।’
এ বিষয়ে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে এ দেশকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করেছে। সেখানে ফ্যাসিস্টের একজন দোসর কীভাবে এমন পদ পেল? আমরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের ৩৬ ঘণ্টার সময় দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে তাকে কমিটি থেকে বাদি দিয়ে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিচ্ছি। যদি প্রমাণিত হয় তিনি ফ্যাসিস্টের দোসর, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে রাকিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ উপজ ল ব যবস স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
ফরম পূরণের টাকা আত্মসাৎ, ছাত্রদল নেতাকে আটকে রাখল শিক্ষার্থীরা
ফরম পূরণের টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আকাশকে আটকে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা তাকে কলেজের বিজয় ২৪ হলের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাকে আটকে রাখা হয়েছে। এ সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সেখানে উপস্থিত রয়েছে।
কলেজ প্রশাসন জানায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের বিজয় ২৪ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কম টাকায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফরম পূরণের জন্য টাকা নেন আকাশ। এ সময় তিনি কলেজের ৯৮ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে নেন। তবে আজ তৃতীয় বর্ষের ফরম পূরণের শেষ দিন হলেও আকাশ কারও ফরম পূরণ করেননি। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ফরম পূরণের কথা জানালে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে এনে কলেজের বিজয় ২৪ হলে আটকে রাখেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন মো. জীবন। তিনি বলেন, ‘তৃতীয় বর্ষে ফরম পূরণে ৯ হাজার টাকা লাগে। আকাশ ভাই ৪ হাজার টাকা কমানোর অফার দেন আমাদের। আমরা তার কথায় রাজি হয়ে ৫ হাজার করে টাকা দিয়েছি। কিন্তু আজ লাস্ট ডেট (শেষ দিন), তিনি আমাদের কাজ করে দেননি।’
আরেক শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করেননি আকাশ। আজ রাত ১২টা পর্যন্ত সময়। তাই আমরা তাকে আটকে রেখেছি।’
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, কলেজের দরিদ্র তহবিল থেকে প্রকৃত হতদরিদ্রদের সহায়তা করা হয়। তবে কোনো দলীয় সুপারিশে তা করা হয় না। ছাত্রদল নেতা দরিদ্র তহবিল থেকে কম টাকায় ফরম পূরণ করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ ১০৩ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। কাজ না করায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেছেন।’
জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ইকবাল রাব্বী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আকাশ স্বীকার করেছেন। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় আমরা সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কারের বিষয়টি কেন্দ্রে জানিয়েছি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ জানান, ‘অভিযুক্ত আশিক কলেজে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তে পরবর্তী বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’