পরবর্তী তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে যাঁকে নিয়ে আলোচনা
Published: 25th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।
নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর এখন এই দুই মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে আসছেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণত উপদেষ্টার পদ শূন্য হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার কাছে ন্যস্ত হয়। তিনিই উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টন করেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদে আজই দপ্তর পুনর্বণ্টনের সম্ভাবনা কম। তবে শিগগিরই তা হতে পারে। সরকারি একটি সূত্র জানিয়েছে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদে সরকারের আরেক উপদেষ্টা মো.
মাহফুজ আলম গত বছরের ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। তবে তিনি কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন না। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ২০ দিনের মাথায় ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক করেছেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মাহফুজ আলম। আন্দোলনে তিনি রাজনৈতিক-বুদ্ধিবৃত্তিক সহযোগীর দায়িত্বে ছিলেন। গণ–অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র, নাগরিক ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার জন্য গঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনির্দিষ্টকালের জন্য কুয়েট বন্ধ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সিন্ডিকেটের ৯৯তম জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের পাবলিক রিলেশনস অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুয়েট সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।
এদিকে, কুয়েট শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে তালা না দিয়ে ফিরে গেছে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে তালা ভেঙে বাসভবনে প্রবেশ করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদ। এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে ভিসির বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে বাসভবনে বৈঠক করছিলেন। বেলা ১২টার দিকে ১৮-২০ জন শিক্ষার্থী ভিসির বাসভবনের সামনে এসে ভেতরে কেউ থাকলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে আসতে মাইকে ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষকরা বেরিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানান। এ সময় প্রায় আধাঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষকরা। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে তালা না দিয়ে ফিরে যায়।
কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। মঙ্গলবার ছিল প্রতিবেদন দাখিলের শেষ দিন। তবে, কমিটিকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আরো ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি এবং কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এম. এম. এ. হাসেমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সময় বৃদ্ধি করা হয়।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা প্রথমে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৫ দফা দাবি ঘোষণা করে। পরে উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দফার আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দেয়।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এনএইচ