বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়িতে দেশীয় অস্ত্রসহ বিকসান মিয়া (৩৪) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে জারুলিয়াছড়ি লামার পাড়া এলাকায় তামাক ক্ষেত থেকে তাকে আটক করা হয়।
বিকসান মিয়া নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নেহের সোলাইমান গ্রামে মোহাম্মদ সোলাইমান মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গভীর রাতে বেশ কয়েকজন সমবেত হয়ে ডাকাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে স্থানীয়রা সেখানে অভিযান চালায়। এসময় ডাকাত দলের একজন উত্তেজিত হয়ে এনামুল হক নামে একজনের মাথায় অস্ত্র তাক করে। পরে অস্ত্রসহ ঐ ডাকাতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিৎকার শুরু করলে আশেপাশে থাকা লোকজন গিয়ে তাকে আটক করে। লোকজন দেখে সেসসময় ডাকাতদের অন্য সদস্যরা ভয়ে এদিক সেদিক পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাশরুরুল হক বলেন, “ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ডাকাত দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। একইসাথে দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও দুই রাউন্ড রাইফেল গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/চাইমং/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষি পরিবারের বউ হয়ে এসেছিলেন, হয়েছেন দেশসেরা কৃষক
চৈত্রের দুপুরে খর রোদে যেন আরও শীর্ণ হয়েছে ফরিদপুর শহরের কুমার নদ। তাপ উঠে আসছে মাটি থেকেও। শহরের অম্বিকাপুরের আলো–হাওয়ায় পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের কলমে উঠে এসেছিল ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’–এর মতো সাহিত্যগাথা। ২ এপ্রিল দুপুরে প্রখর রোদের ভেতর গিয়ে দেখা গেল, পল্লিকবির বাড়ির কাছে অম্বিকাপুরের গোবিন্দপুরে যেন আরেক ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ বানিয়েছেন কৃষক সাহিদা বেগম।
সাহিদা মাঠজুড়ে ফলিয়েছেন ‘কালো সোনা’ বলে পরিচিত পেঁয়াজের দানা। কদমের মতো সাদা কেশরের ফুল ফুটে আছে সেখানে। মৌমাছি কমেছে বলে আশপাশে রয়েছে হলদে রঙের ‘হরপা’ নামের একধরনের ফুল গাছ। ওই দিন দুপুরে চড়া রোদে মাঠে ফসলের তদারক করছিলেন সাহিদা। তিনি ফরিদপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নত জাতের পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করে পরিচিতি পেয়েছেন।
সাহিদা বললেন, ‘পেঁয়াজের সাদা কদম শুকিয়ে গেলে ঝরে পড়ে কালো দানা কিংবা বা বীজ। এ বীজের দাম অনেক। ফুলগুলো বড় করতে হয় অনেক ধৈর্য নিয়ে।’ তিনি জানান, মাঠ থেকে তুলে নিয়ে শুকিয়ে মলন দিয়ে বের করতে হয় সেই কালো সোনা। এ কাজে ঝুঁকি অনেক। কারণ, কয়েক মাস ধরে মাঠে বড় করতে হয়। বৃষ্টিপাত, গরম—সবকিছু প্রভাব ফেলে উৎপাদনে। যদিও এখানে যত ঝুঁকি, তত লাভ।
পরিশ্রমী সাহিদা দেশসেরা নারী কৃষকদের একজন। ২০০৪ সালে মাত্র ২০ শতাংশ জায়গায় তিনি চাষাবাদ শুরু করেছিলেন। এ বছর তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ১০ হাজার শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেছেন।
প্রতিদিন সাহিদার কাজকর্ম শুরু হয় ভোরে। পরিবারের সদস্যসহ কৃষিশ্রমিকদের জন্য নিজে রান্না করেন। সকালের খাবার খেয়ে চলে যান খেতে। জমিতে কাজের তদারক করেন। সেখানেই বিকেল গড়ায়। কোনো এক ফাঁকে হয়তো বাসায় ফেরেন। কাজের চাপ থাকলে শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে বসে যান থালা হাতে, দুপুরের খাবার নিয়ে।কাজ শুরু করেন ভোরেপ্রতিদিন সাহিদার কাজকর্ম শুরু হয় ভোরে। পরিবারের সদস্যসহ কৃষিশ্রমিকদের জন্য নিজে রান্না করেন। সকালের খাবার খেয়ে চলে যান খেতে। জমিতে কাজের তদারক করেন। সেখানেই বিকেল গড়ায়। কোনো এক ফাঁকে হয়তো বাসায় ফেরেন। কাজের চাপ থাকলে শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে বসে যান থালা হাতে, দুপুরের খাবার নিয়ে।
অথচ শুরুটা ছিল অভাবের সংসারে একটু সচ্ছলতার প্রত্যাশায়। এখন পেঁয়াজ তোলার সময় সাহিদার ফসলের মাঠে কাজ করে তিন শর বেশি শ্রমিক। মৌসুম ছাড়াও রোজ থাকেন ৫০ থেকে ৬০ জন করে। তাই সাহিদাকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবেও চেনে মানুষ।
নিজের ফসলের খেতে নারী কৃষক সাহিদা বেগম