‘এভাবে চললে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে হয়ে যাবে’
Published: 25th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে হেরেছে বাংলাদেশ। নাজমুল শান্ত-মুশফিক-রিয়াদদের এমন পারফরম্যান্স হতাশ করেছে বাংলাদেশের সাবেক পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট মসকিন শেখকে।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান এই অ্যানালিস্টের মতে, এভাবে খেলতে থাকলে বাংলাদেশের দশা জিম্বাবুয়ের মতো হবে। এছাড়া বাংলাদেশ দলের এমন বাজে পরিণতির জন্য বোর্ডের অব্যবস্থাপনা, ঘরোয়া কাঠমো ধসে পড়া ও মেধার অবমূল্যায়নকে দায়ী করেছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান দলের অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মহসিন শেখ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট করে লেখেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতির সাধারণ সমস্যা একেবারেই এক!’
সেই সমস্যাগুলো উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘শুরুতেই ভুলটা হয়েছে দুর্বল দল নির্বাচন করে। এর সঙ্গে চরম অব্যবস্থাপনা, মেধার অবমূল্যায়ন ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে বোর্ডে। যারা বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তারা কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো ধ্বংসের পথে, অথচ সমাধানের উদ্যোগ নেই। বরং সেখানে ভুলভাল সিদ্ধান্তই বেশি অগ্রাধিকার পায়!’
তিনি আশঙ্কা করেছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অবস্থা হবে জিম্বাবুয়ের মতো। এক সময় সম্ভাবনাময় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ ছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, বর্ণবাদ ইত্যাদি কারণে জৌলুস হারিয়েছে তারা। মসহিন তাই লিখেছেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অবস্থা জিম্বাবুয়ের মতো হয়ে যাবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মহস ন শ খ
এছাড়াও পড়ুন:
এবার জিমন্যাস্টিকসে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী!
ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর আবির্ভাবের পর বাংলাদেশের ফুটবলের চেহারা বদলে গেছে। প্রিমিয়ার লিগ খেলা এ তারকার লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর পর কানাডাপ্রবাসী সামিত সোমও আগ্রহ দেখিয়েছেন। ইতোমধ্যে তাঁর পাসপোর্ট করার কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। ফুটবলের বাইরে অন্য ফেডারেশনগুলোতে প্রবাসী খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করার জন্য চিঠি দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তাদের চিঠি দেওয়ার আগে জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন খুঁজে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জ্যাক আশিকুল ইসলামকে। বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখা এ অ্যাথলেটের পাসপোর্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন। ইতোমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে চিঠিও দিয়েছে তারা।
ছেলেদের ছয়টি ইভেন্টের মধ্যে জ্যাক আশিকুল তিনটিতে বেশ ভালো। পোমেল হর্স, ফ্লোর এবং ভল্টিং ইভেন্টে তিনি অসাধারণ শৈলী দেখিয়ে মুগ্ধ করেছেন বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন কর্তাদের। ভিডিওতে তাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হলেও পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এ অ্যাথলেটকে ঢাকায় এনে ট্রায়াল দিতে চায় ফেডারেশন। ‘আগে তার পাসপোর্ট হোক। তার পরই দেশে এনে তাকে আমরা দেখব। ভিডিওতে যা দেখেছি, আশা করি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের তারকা সে হতে পারবে’–আত্মবিশ্বাসের সুরে গতকাল সমকালকে জানান বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিল।
তবে কবে নাগাদ জ্যাক আশিকুলকে পাওয়া যাবে, সেটি এখনই বলতে পারছেন না জামিল। সামনে কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমসে তাকে পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের, ‘এটি বলা যাচ্ছে না। কারণ, সবকিছু নির্ভর করছে তার পুরো প্রক্রিয়ার ওপরে। প্রক্রিয়াগুলো একটু জটিল। অনেক ধাপ আছে। এশিয়ান গেমসের মতো আসরগুলোতে তাকে পাওয়া গেলে আমাদের দলটা শক্তিশালী হবে।’ প্রতিনিয়ত আশিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন জামিল। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এ জিমন্যাস্টও বাবার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে মুখিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন জামিল, ‘বাংলাদেশে খেলার জন্য সে খুবই আগ্রহী। তার মধ্যে অন্যরকম রোমাঞ্চ কাজ করছে। আমার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলেছে সে।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ যাতে ভালো করে সেই জন্য সরকারও চাচ্ছে ভালো মানের প্রবাসীরা যেন এই দেশে আসেন। স্বপ্ন জাগিয়েও নিউজিল্যান্ডপ্রবাসী জিমন্যাস্ট আলী কাদের বেশি দিন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেননি। ২০২২ কমনওয়েলথ এবং একই বছর তুরস্কে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে অংশ নেওয়া আলী কাদের পরবর্তীতে হারিয়ে যান। এরপর থেকেই বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন নতুন প্রবাসীর সন্ধানে নামে। তারই ধারাবাহিকতায় খুঁজে পায় জ্যাক আশিকুল ইসলামকে। ১৮ বছর বয়সী এ তরুণ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তাঁর বাবা আশিকুল ইসলামের বাড়ি রংপুরে। মা আমেরিকান। মূলত চাচার মাধ্যমে জ্যাক আশিকুলের সন্ধান পায় বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন। আশিকুলের খেলার ভিডিওগুলো দেখে ভালো লেগেছে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিলের।
গতকাল সমকালের সঙ্গে নতুন এ প্রবাসী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মে মাসের দিকে যোগাযোগ হয়েছে। তার পরে দেশের পট পরিবর্তনের কারণে অনেক দিন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। এখন কাজটা দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। এখন তার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমি যতটুকু তার পারফরম্যান্স দেখেছি তাতে সন্তুষ্ট বলা যায়। আমি বলব না, একেবারে অলিম্পিক লেভেলের। সাইক সিজার যখন খেলছিল সে অন্য লেভেলের ছিল। জ্যাক ইসলামের মাত্র ১৮ বছর বয়স। এখনও ইয়ং। তার মধ্যে ভালো সম্ভাবনা আছে। পারফরম্যান্স যতটুকু দেখলাম, আমাদের জাতীয় দল যেটা করছে, তাদের মতোই কিংবা তাদের চেয়ে একটু ভালো বলা যায়।’
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আলোচিত অ্যাথলেট ছিলেন জিমন্যাস্ট সাইক সিজার। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এ অ্যাথলেট ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনি ভোল্ট, ফ্লোর এবং অলরাউন্ড ইভেন্টে পারদর্শী ছিলেন। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্ট দলের সহকারী কোচ ছিলেন সিজার। তাঁর মতো প্রতিভাবান না হলেও জ্যাক আশিকুল ইসলামকে নিয়ে আশাবাদী জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন।