ঋণের কিস্তি ও সুদ বোঝা হয়ে গেছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
Published: 25th, February 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, ‘‘ওয়ার্ল্ডের মধ্যে এত কম ট্যাক্স কোনো জাতি দেয় না। এটা কিন্তু সত্য কথা। আমরা একটা ঋণগ্রস্ত জাতিতে পরিণত হয়েছি। কারণ, আমরা ৫২-৫৩ বছর ধরে প্রতিবছর ঋণ করে করে আমাদের বাজেট বড় হয়েছে। সেই ঋণের কিস্তি দেওয়া এবং এর সুদ দেওয়া বিরাট বারডেন হয়ে গেছে।’’
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী বিভাগের সব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়। রাজশাহী চেম্বার এর আয়োজন করে।
সভায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘‘আমাদের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বাড়াতে হবে। না হলে এই দেশ এগোতে পারবে না। আমরা এখন অটোমেশনের দিকে জোর দিচ্ছি। সারাদিনের সব চিন্তা আমাদের অটোমেশিনকেন্দ্রীক। এবার ১৪ লাখ ৩২ হাজার মানুষ অনলাইনে রিটার্ন দিয়েছেন।’’
ট্যাক্স আদায়ে জোর দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আমাদের ১ কোটি ১২ লাখ টিআইএনধারী আছে। রিটার্ন দেয় ৪০ লাখ। তার মধ্যে ২৫-২৬ লাখই খুব একটা ট্যাক্স দেয় না, দিলেও একেবারে মিনিমাম ট্যাক্স। আর বাকিদের আমরা চেইজ করতে পারছি না। এটা নিয়ে আমরা সিরিয়াসলি কাজ করছি। প্রতিদিন এক ঘণ্টা কমিশনারদের সঙ্গে জুম মিটিং করছি। যারা রিটার্ন দিচ্ছেন না, তাদের নোটিশ করা হোক। তাদের অর্থের ট্রানজেকশন ট্র্যাক করা হোক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সম্পদ খোঁজা হোক।’’
প্রাক-বাজেট সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু। সভায় এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ব্যবসায়ীরা সভায় তাদের মতামত তুলে ধরেন।
ঢাকা/কেয়া/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশকে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া বিষয়ে ট্রাম্পের তথ্য ভুল: ডিসমিসল্যাব
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ২৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রকল্প নিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভুল তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাংলাদেশের মাত্র দুজন ব্যক্তি মিলে চালানো একটি ছোট প্রতিষ্ঠানকে ২৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার খবরটি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই নয়, ভারত ও বাংলাদেশেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিনিয়োগের ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। তা ছাড়া এ ঘটনায় অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বলে মনে করে ডিসমিসল্যাব।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাংলাদেশে মার্কিন করদাতাদের ২৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ হওয়ার আগেই ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ’ (এসপিএল) নামের একটি প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিল করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডজ) যে খবর প্রকাশ করেছে, সেটি বিভ্রান্তিকর। কারণ, ২৯ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশি দুজন ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের কাছে যায়নি। মূলত এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল, যাদের বিভিন্ন দেশে ২১৮টি প্রকল্প আছে। বাংলাদেশেও প্রতিষ্ঠানটির ১২টি প্রকল্প রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিসমিসল্যাব।
ইউএস স্পেন্ডিং ডট গভের ওয়েবসাইট ঘেঁটে ডিসমিসল্যাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশে সুশাসন, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও নাগরিক সমাজের উন্নয়নে যত প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ২৯ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি একটি প্রকল্পই আছে। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ সাল থেকে স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্পটির আওতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছে। এর মধ্যে পলিটিকস ম্যাটার্স বাংলাদেশ নামক ই–লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট, পিস প্রেশার গ্রুপ, ইয়াং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম অন্যতম। ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ৫৩৬ জন তরুণ নেতাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের ২০২০ সালের একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, এসপিএলের অধীনে ২৩৬টি কর্মশালার মাধ্যমে ৫ হাজার ৪১০ জন রাজনৈতিক নেতা–কর্মী অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ভিন্নমত সহনশীলতা এবং দলীয় পরিচয়ের বাইরে একসঙ্গে কাজ করার দক্ষতা অর্জন ও অনুশীলন করেছে এবং এরা মূলত তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে ডিসমিসল্যাব।
মিডিয়া গবেষণা প্ল্যাটফর্ম ডিসমিসল্যাব বলছে, যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুত টাকার একটি অংশ প্রায় ২ মিলিয়ন পাউন্ড যায় আরেক মার্কিন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেমসের (আইএফইএস) কাছে। প্রতিষ্ঠানটি স্টুডেন্টস এগেইনস্ট ভায়োলেন্স এভরিহোয়ার বা সেভ কর্মসূচির অধীনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
সেভ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, যেখানে তারা সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বুঝতে পারবে, শান্তিপূর্ণ রাজনীতির ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হবে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।