চুয়েটে মাদক সেবনের অভিযোগে চার শিক্ষার্থী বহিষ্কার
Published: 25th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আবাসিক হলে মাদক সেবনের অভিযোগে চার শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। অপর একজন যন্ত্রকৌশল বিভাগের। তাঁরা শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের একটি কক্ষে প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টরা অভিযান চালান। এ সময় চার শিক্ষার্থী ও দুই ক্যানটিন বয়কে কক্ষটিতে সন্দেহজনক অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে ওই কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে ২০ গ্রাম গাঁজা ও ৫০০ মিলিলিটার মদ পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে দুই ক্যানটিন বয় বলেন, তাঁরা শিক্ষার্থীদের এসব মাদক সরবরাহ করেছেন। শিক্ষার্থীদের কললিস্টেও ক্যানটিন বয়দের সঙ্গে ফোনালাপের সত্যতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া এক ক্যানটিন বয়ের মুঠোফোনে চার শিক্ষার্থীর একটি কক্ষে বসে মদ পানের ভিডিও পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীদের মাদক সেবন ও মাদক রাখার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন হল প্রভোস্ট। জব্দ হওয়া আলামত ও লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত সোমবার শৃঙ্খলা কমিটির ২৮৩তম জরুরি সভায় ওই চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ নীতিমালার বিধি অনুযায়ী আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা ওই শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে আগামী ১১ মার্চের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপপরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইমোতে প্রেম: চট্টগ্রামে তরুণী খুন, প্রেমিক গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক সন্তানের জননী টুম্পা আক্তারের সাথে ইমো অ্যাপে প্রেম গড়ে ওঠে চট্টগ্রামে বসবাসকারী বেকার ইব্রাহিম হাওলাদারের। এই প্রেমের সূত্র ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামে চলে যান টুম্পা। বিয়ে না করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন নগরীর বন্দর থানার কলসিদীঘি এলাকায়।
তবে সুখের হয়নি সে জীবন। অন্য পুরুষের সাথে টুম্পার সম্পর্ক থাকতে পারে। সবসময় এমন সন্দেহ করতেন ইব্রাহিম। সেই সন্দেহ থেকেই একদিন টুম্পার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ইব্রাহিম।
সম্পুর্ণ ক্লু লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে ঘাতক ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন উপ-কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান।
মাহবুব আলম খান জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বন্দর থানার ওয়াসিম চৌধুরী পাড়া পেলাগাজীর বাড়ি আলী সওদাগরের বিল্ডিংয়ের নিচ তলার একটি বাসা থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়ার তথ্য না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে একই এলাকার একটি দোকানের ক্যাশমেমো থেকে পাওয়া নম্বর ধরেই এগোয় তদন্ত। এরপরই শনাক্ত হয় ইব্রাহিম; যিনি চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাট যাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ইব্রাহিমকে রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকায় বাসের ভেতর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উদঘাটিত হয় খুনের রহস্য।
পুলিশ জানায়, ইমোতে প্রেমে সম্পর্কের সূত্র ধরে টুম্পা ও ইব্রাহীম বিয়ে ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করছিলেন। ভিকটিম টুম্পা আক্তার একজন গার্মেন্টসকর্মী। তার পরিচয় মূলত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের পরই জানতে পারি। তারা বন্দর এলাকার ওই বাসায় লিভ টুগেদার করত। কাগজে-কলমে তাদের বিয়ে হয়নি। দুজন ব্যক্তিকে স্বাক্ষী রেখে তাদের মুখে মুখে বিয়ে হয়।
টুম্পা আক্তার যখন কর্মস্থলে যেতেন ইব্রাহিম মোবাইল নিয়ে যেতে দিতেন না। মোবাইল বাসায় রেখে যেতেন। বাসায় রাখার পর অনেকসময় তার ফোনে পুরুষ কণ্ঠে কল আসত। ইব্রাহিমের সন্দেহ হয় তার কথিত স্ত্রীর আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। এই সন্দেহের জেরে তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়।
ঘটনার দিন এই বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের মাথার কাছে একটি শেলফে থাকা রশি দিয়ে টুম্পার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই সময় টুম্পার বাচ্চাটি পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটি ঘুম থেকে উঠলে তাকে একজন মহিলার কাছে দিয়ে ইব্রাহিম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ হতাকাণ্ডের ঘটনায় বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/এস