স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন
Published: 25th, February 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাভার সরকারি কলেজ মাঠে নিরাপদ সড়ক চাই সাভার শাখার আয়োজনে, সড়কে নৈরাজ্য, যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা রোধকল্পে সুধী ও শিক্ষার্থী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “যেভাবে দেশে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে, এতে করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও প্রকৃত অর্থে সেরকম আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে উপদেষ্টা তার যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারেননি। তারপরেও তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন না। তাই আমি মনে করি তার দক্ষতা দেখাতে পারছেন না এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চরম পর্যায়ে চলে গেছে।”
তিনি বলেন, “এই জায়গা থেকে উত্তরণ হতে গেলে বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার স্থলে শক্তিশালী একজন মানুষ উপদেষ্টা হিসেবে আসা দরকার। অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তিনি আহ্বান জানান, অনতিবলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সরিয়ে একজন যোগ্য মানুষকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হোক।
এসময় ইলিয়াস কাঞ্চন সারা দেশে সড়ক দূর্ঘটনা রোধে এবং নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে চালকদের আরও সর্তক হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নিরাপদ সড়ক চাই কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাভার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম, সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবির, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ মিয়া, সাভার উপজেলা নিরাপদ সড়ক চাই-এর সভাপতি ইসমাইল হোসেনসহ আরো অনেকে।
ঢাকা/সাব্বির/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট র ন র পদ
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদযাত্রা: সদরঘাটে চিরচেনা ভিড়
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী সোম কিংবা মঙ্গলবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। ঈদের আনন্দ পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে রাজধানী ছাড়ছেন অনেকেই। যারা ঢাকা থেকে নৌপথে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চান, তাদের বেশিরভাগের প্রথম গন্তব্য সদরঘাট নৌ টার্মিনাল। এখান থেকেই লঞ্চে করে যাত্রা করেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের উদ্দেশে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে সেই চেনা দৃশ্য—যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। নৌপথে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সদরঘাট টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। লঞ্চে প্রবেশমুখে দায়িত্ব পালন করছেন আনসার সদস্যরা।
ঈদযাত্রা নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা বাড়তি যাত্রী নিলেই বাতিল করা হবে লঞ্চের লাইসেন্স।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৫০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে যাবে। দুপুরের মধ্যে বেশকিছু লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে চলে গেছে।
টার্মিনালে দেখা গেছে, পন্টুনে নোঙর করা লঞ্চগুলোর সামনে কর্মচারীরা যাত্রীদের ডাকছেন। যাত্রীদের চাপও অনেক। লঞ্চের ডেকে যাত্রীরা বসে আছেন। কেবিনের টিকিট আগেই বুকিং হয়ে গেছে। নির্দিষ্ট সময়েই লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।
এমভি সুরভী-৭ লঞ্চের সামনে কথা হয় রাজ্জাক হোসেন নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করব। রাস্তায় যানজট হতে পারে, তাই আগেভাগেই বাসা থেকে চলে এলাম। চাহিদা বেশি থাকলেও কেবিন কম। আমাদের কেবিন বুকিং করা ছিল। লঞ্চের যাত্রায় কোনো কষ্ট নেই। তাই, বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে প্রতিবছরই লঞ্চে বরিশালে গ্রামের বাড়িতে যাই। যারা এখন আসছেন, তারা ডেকে বসে যাবেন।”
বরগুনাগামী এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চে কথা হয় আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, চার বছর আগে ঈদের সময় লঞ্চে জায়গা পাওয়া যেত না। অনেক সময় ছাদে ঝুঁকি নিয়ে যেতে হতো। আজ আগের মতো ভিড় না থাকলে যাত্রীর চাপ আছে মোটামুটি। লঞ্চ বলা হলেও এটা বিরাট একটা জাহাজ। হাজার হাজার লোক উঠলেও বোঝা যায় না। ডেকে শুয়ে-বসে যাওয়া যায়। বাসে ভ্রমণ করলে আমার পা ব্যথা করে। এ কারণে বাসে আমি যাই না।”
এমভি জামাল-৮ লঞ্চের যাত্রী আলেয়া বেগম বলেন, “আমি পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় যাব। লঞ্চ ছাড়বে সন্ধ্যা ৭টায়। রাস্তায় জ্যাম হতে পারে, তাই আগেভাগে বাসা থেকে বের হয়ে চলে এসেছি। লঞ্চের যাত্রা আরামদায়ক। এবার আরামে বাড়ি যেতে পারব।”
এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চের সুপারভাইজার কালাম হোসেন বলেন, “আমাদের লঞ্চে ৮০টি কেবিন আছে। ইতোমধ্যে সব বুকিং হয়ে গেছে। যাত্রীর চাপ ভালোই আছে।”
অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সদস্য ও এমভি অভিযান লঞ্চের মালিক হামজা লাল শেখ বলেন, আজ যাত্রীর চাপ আছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সুরভি শিপিং লাইনস কোম্পানির পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, ঢাকা সদরঘাট থেকে বরিশালে বিশেষ সার্ভিস শুরু হয়েছে। যাত্রী পরিবহনে বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি চলাচল করছে ২৬টি লঞ্চ। ২৫ মার্চ শুরু হয়েছে ঈদের বিশেষ সার্ভিস। ২৬টি লঞ্চ তিন ভাগে ভাগ হয়ে ঈদে বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করছে। বরিশাল ও ঢাকার কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করার ব্যবস্থা আছে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেছেন, নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীদের সেবা ও নিরাপত্তার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি বরদাশত করা হবে না। নির্ধারিত সময়ে পন্টুন থেকে লঞ্চ ছাড়ছে। এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
ঢাকা/এএএম/রফিক