পুলিশকে আঘাত করে হাতকড়াসহ ধর্ষণের আসামির পলায়ন
Published: 25th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হাতকড়া পরানো হলে পুলিশের ওপর তার পরিবারের সদস্যদের আঘাত করার মধ্যে পালিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় আহত একজন এসআই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) রাত ১০টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধনারচর গ্রামে অভিযানে যায় পুলিশ।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, পুলিশের ওপর হামলা করে হাতকড়াসহ পালিয়ে গেছে ধর্ষণ মামলার আসামি শাহনেওয়াজ আবির রাজু। অভিযান চালিয়ে হাতকড়া উদ্ধার করা হয়েছে, তবে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
থানায় দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী, আসামি রাজু (৩০) যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও মাদক কারবার করার অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারসহ স্থানীয়দের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ বলছে, রৌমারী থানার এসআই আউয়াল হোসেনকে আঘাত করে হাতকড়াসহ পালিয়ে যান রাজু। তিনি রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক প্রতিবন্ধী স্কুলশিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন রাজু। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামবাসীর তোপের মুখে পড়েন রাজু ও তার পরিবার। তারা ধনারচর গ্রামে তাদের খালা ও সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে এসআই আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল ধনারচরে শিরিনা আক্তারের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে কয়েক পিচ ইয়াবাসহ রাজুকে আটক করে হাতকড়া পরায় পুলিশ। এসময় রাজু, তার মা এবং খালাতো বোন ( শিরিনার মেয়ে) পুলিশের ওপর হামলা করে। এসআই আউয়ালের হাতে কামড় দেয় এবং তার অণ্ডকোষে আঘাত করে। সুযোগ পেয়ে হাতকড়াসহ পালিয়ে যায় রাজু।
ওসি লুৎফর রহমান বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই আউয়ালকে উদ্ধার করে। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে রাজুর মা আবেদা আক্তার রাজিয়া (৪৮) এবং খালাতো বোন রুনা আক্তারকে (২৩) আটক করে থানায় আনা হয়। তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মাদক ও রামদা পাওয়া গেছে।
চাদুরচর ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন বলেন, “সোমবার রাতে পুলিশের অভিযান হয়েছে। এ সময় পুলিশকে আঘাত করে আসামি রাজু হাতকড়াসহ পালিয়ে গেছেন।”
রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা.
ঢাকা/বাদশা/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল শ র ওপর পর ব র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
পরপর চারটি ইনজেকশন প্রয়োগ, মুহূর্তেই ছটফট করে নারীর মৃত্যু
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ঘরেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন স্ট্রোকের রোগী নাজমা বেগম (৫০)। সেখানে অসুস্থ নাজমাকে চিকিৎসার নামে দেওয়া হয় পরপর চারটি ইনজেকশন। মুহূর্তেই ছটফট করে মারা যান ওই নারী। এ ঘটনার নিহত নাজমা বেগমের সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন (৬৫) ও ইদ্রিস চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় পুরোনো দাইয়া বাড়িতে বোনের বাসায় ছিলেন নাজমা বেগম। ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। এরপর গতকাল রাতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে নিহত নাজমার বর্তমান স্বামী সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আজ সকালে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আক্তার হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার দশদনা গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের হাজীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গ্রেপ্তার অপর ব্যক্তি ইদ্রিস চৌধুরীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম। তিনিও আগ্রাবাদ এলাকায় থাকতেন। ইদ্রিস নিজেকে পল্লিচিকিৎসক বলে দাবি করেন। নাজমাকে ইনজেকশনও দিয়েছিলেন তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নাজমা বেগম ২ ফেব্রুয়ারি স্ট্রোক করেন। তাঁর শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে পড়েছিল। পরে তাঁর স্বামী সাহাব উদ্দিন তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর চিকিৎসক নাজমা বেগমকে বাসায় নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা করাতে বলেন। এরপর ছাড়পত্র নিয়ে নাজমা সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
গতকাল শনিবার দুপুরে নাজমার সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন ইদ্রিস চৌধুরী নামের একজন পল্লিচিকিৎসককে নিয়ে ফৌজদারহাটের বাড়িতে যান। এরপর পল্লিচিকিৎসক নামধারী ইদ্রিস চৌধুরী তাঁকে পরপর চারটি ইনজেকশন দেন। এতে নাজমার মৃত্যু হলে স্থানীয় বাসিন্দারা আক্তার ও ইদ্রিসকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
এসআই আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত নারীর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এসআই আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইদ্রিস চৌধুরী নিজেকে পল্লিচিকিৎসক দাবি করলেও কোনো ধরনের সনদ দেখাতে পারেননি। ফার্মেসিতে কাজ করে তিনি চিকিৎসা করা শিখেছেন বলে দাবি করেন। সেই আলোকে তিনি নাজমা বেগমের শরীরে ইনজেকশন প্রয়োগ করেছিলেন।