রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
Published: 25th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ভাই-বোনকে চাকরি দেওয়ার কথা দিয়ে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পবা উপজেলার মাসকাটাদীঘি এলাকার জিয়ারুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জিয়ারুলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদা এলাকায়। সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। তাঁর বোন কাফেলা খাতুন একই কলেজের ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনার পর থেকে তাঁরা বেকার।
জিয়ারুলের বোনের বাড়ি তাঁদের গ্রামে। মাঝেমধ্যে জিয়ারুল তাঁর বোনের বাড়িতে আসতেন। তখন পরিচয় হলে জিয়ারুল তাঁকে জানান, তিনি টাকা দিলে তাঁদের (দুই ভাই-বোন) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে চাকরি নিয়ে দেবেন। এই প্রলোভন দেখিয়ে ২০২২ সালের ১৫ জানুয়ারি ৪৫ লাখ টাকা নেন জিয়ারুল। কিন্তু তিনি দীর্ঘ তিন বছরেও তাঁদের চাকরি দেননি।
লিখিত বক্তব্যে মনিরুল ইসলাম বলেন, টাকা নেওয়ার বিপরীতে জিয়ারুল তাঁকে দুটি চেক দিয়েছিলেন। এর মধ্যে জিয়ারুলের নাফি নিহান ফার্মেসির নামে পূবালী ব্যাংকের একটি চেকে ২৫ লাখ এবং আরেকটি চেকে ২০ লাখ টাকা লিখে দেন তিনি। চাকরি দিতে না পারলে এই চেকের মাধ্যমে মনিরুল ও কাফেলার টাকা তুলে নেওয়ার কথা ছিল। চাকরি না হওয়ায় তাঁরা চেক দুটি ভাঙাতে গিয়ে দেখেন, ওই ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা নেই। এখন নানা চেষ্টার পরেও টাকা আদায় করতে পারছেন না।
জিয়ারুলকে ফোন করলে বেশির ভাগ সময় তিনি ধরেন না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি ওই দলের প্রভাবে চাকরি নিয়ে দেবেন জানিয়েছিলেন। এখন বলছেন, তাঁর কাছ থেকে কেউ টাকা আদায় করতে পারবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর আদালত চত্বরে হঠাৎ জিয়ারুলের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তখন জিয়ারুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় মনিরুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা আত্মীয়রা তাঁকে ধরে ফেলেন এবং আদালত চত্বর থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে টাকা চান। পরে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি থানায় গিয়ে উল্টো অপহরণের মামলা করে হয়রানি করছেন।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে জিয়ারুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি চাকরি দেওয়া চক্রে জড়িয়েছিলেন, এটা ঠিক। এই চক্রের মূল হোতা নাহিদ নামের এক ব্যক্তি। এই নাহিদকে তিনি চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করে দিতেন। চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে বাড়তি যে টাকা আদায় হবে, সেটি তাঁর লাভ হবে, এ রকম চুক্তি ছিল। কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী তিনি জোগাড় করে দেন। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় নাহিদ কৌশলে তাঁদের তাঁর (জিয়ারুলের) চেক স্বাক্ষর করা ও স্ট্যাম্প দিয়েছেন। এতে তিনি ‘ফেঁসে’ গেছেন। বাস্তবে তিনি লাভবান হননি।
জিয়ারুল ইসলাম দাবি করেন, তবে তাঁর মোট সাতটি চেক নাহিদের কাছে দেওয়া আছে। আরও মামলা হলেও তিনি অবাক হবেন না। তবে যাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরা নাহিদেরই লোক বলে তিনি দাবি করেন। জিয়ারুল বলেন, তাঁরা টাকা আদায় করতে আদালত চত্বর থেকে তাঁকে তুলে নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি নাহিদসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে টাকাপয়সা নিয়ে বিরোধ আছে। এটা নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান। জিয়ারুল থানায় মামলা করেছেন যে তাঁকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। মামলাটি তদন্তাধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর প র র থ কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ১৫ জন আটক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। আজ রোববার ভোরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এ সম্পর্কে বিজিবির ১৬ ব্যাটালিয়নের বিভীষণ সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাঁরা যশোর, নড়াইল, খুলনা ও মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্য ২ জন শিশু, ৯ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ।
আবদুল মান্নান বলেন, আজ ভোরে সীমান্তে টহলের সময় ওই ১৫ জনকে দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। এ সময় তাঁদের আটক করে ক্যাম্পে আনা হয়। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি। তাঁদের গোমস্তাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বারিক বলেন, পুশ-ইনের শিকার বাংলাদেশি নাগরিকেরা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।