আবরার ফাহাদ হত্যা: মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট
Published: 25th, February 2025 GMT
কারাগারের কনডেম সেল থেকে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পলায়নের ঘটনায় গভীর রাতে উত্তাল হলে ওঠে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। পলাতক আসামির দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
পলাতক আসামি হলেন, বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুনতাসির আল জেমি। তিনি গত বছর ৫ আগস্টের পর জেল থেকে পালিয়ে গেলেও বিষয়টি সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জানাজানি হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কিছু না বললেও আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ ‘জেল পালানোর’ তথ্য ফেসবুক পোস্টে নিশ্চিত করেন। ফাইয়াজ দাবি করেন, আসামি জেমির আইনজীবী সোমবার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে না আসায় পালানোর তথ্য তাদের জানানো হয়।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা বুয়েটের শহিদ মিনার থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি পলাশী মোড়, ভিসি চত্বর হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। পরে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ফাঁসির দড়ি ঝুলাই দে, সব খুনীদের গর্দানে’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনীদের ফাঁসি চাই’, ‘আবরার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে’, ‘জুলাই/২৪ এর একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘জুলাই এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, “আজ হাইকোর্টে শুনানি চলছিল। সেখানে আমরা জানতে পেরেছি আমার ভাইয়ের খুনী জেমি পালিয়ে গেছে। আমার ভাইয়ের খুনীর পলায়নের জন্য রাষ্ট্র দায়ী। বর্তমান সরকারও এ দায় এড়াতে পারবে না। সরকারের ঊূর্ধ্বতনরা এটা জানতে পেরেছিল। কিন্তু তারা সেটা লুকিয়ে রেখেছিল। আজ হাইকোর্ট জানিয়েছে, সে নাকি ৫ আগস্টের পর পালিয়েছে। আমরা এর স্পষ্ট কোন জবাব পাইনি। এটা রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক বিষয়।”
তিনি বলেন, “কোন তালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না। আমরা সরকার ও কারা বিভাগ থেকে স্পষ্ট জবাব চাই। তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হোক এবং পলায়নের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাই।”
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর চার্জশিটভুক্ত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর ৫ অক্টোবর আবরারের বাবা বরকতউল্লাহর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই মামলার সাক্ষ্য শুরু হয়।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
এ মামলায় আরো পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নিম্ন আদালতের রায় খতিয়ে দেখতে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি মামলার নথি হাইকোর্টে পৌঁছায়। গত বছরের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের জন্য নিম্ন আদালতের নথি) এবং এ মামলায় দণ্ডিত আসামিদের দায়ের করা আপিল শুনানি শেষে এটি কিউরিয়া অ্যাডভাইজারি ভল্ট (অর্থাৎ যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে) হিসেবে রেখে দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবর র ফ হ দ স মব র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তারেক রহমানের নির্দেশে সেই আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বৃহস্পতিবার এই নালিশি মামলাটি করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ইলতুৎমিশ সওদাগর। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামি আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ইলতুৎমিশ সওদাগর।
আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর প্রথম আলোকে বলেন, আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ একজন প্রতারক। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছেন। বিএনপির নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছেও এই ব্যক্তি নিজেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছেন। এ জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করেছেন তিনি (ইলতুৎমিশ সওদাগর)। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে ২৪ মার্চ জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সংগঠন তৈরির অভিযোগে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দুই নেতা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তাঁরা এসব মামলা করেন। ভুয়া সংগঠন দুটি হলো—‘জিয়া প্রজন্ম’ ও ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদ’।
অন্যদিকে ১০ মার্চ তারেক রহমানের নির্দেশে কথিত ‘জাতীয়তাবাদী চালক দল’–এর সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকার ও তাঁর ছেলে শাকিল খন্দকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সিএমএম আদালতে বাদী হয়ে এই মামলাটিও করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর। ‘অবৈধ অস্ত্র ও ছাত্র–জনতার হত্যাকারীরা’ লুকিয়ে আছে, এমন কথা রটিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি করে ৪ মার্চ ঢাকার গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাসায় লুট করার ঘটনার জেরে এ মামলাটি করা হয়।