পোশাক রপ্তানি আয় বেড়ে ১ হাজার ৩৭ কোটি ডলার
Published: 25th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন রপ্তানি আয় বেড়েছে ৮৫ কোটি ডলার নিট রপ্তানি হয়েছে ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রপ্তানির ৮০.৫৩ শতাংশ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র জার্মানিসহ ৯টি দেশ থেকে
দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক খাত। বিগত আওয়ামী সরকারের আমল থেকেই এই খাতের রপ্তানিতে নিম্মমূখী প্রবণতা ছিল। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে এ খাতের রপ্তানি আয় বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের শেষ প্রান্তিক বা অক্টোবর-ডিসেম্বর মাসে রেডিমেড গার্মেন্টস (আরএমজি) থেকে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬ কোটি ৯১ লাখ ডলার। যা আগের প্রান্তিক বা জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আসা রপ্তানি আয়ের চেয়ে ৮৫ কোটি ডলার বেশি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ছিল ৯৫১ কোটি ২১ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানির শীর্ষ গন্তব্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, কানাডা এবং বেলজিয়াম। এই নয়টি দেশ থেকে বাংলাদেশ (আরএমজি থেকে) ১ হাজার ৩৬ কোটি কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেছে, যা মোট আরএমজি রপ্তানির ৮০ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, তৈরি পোশাকের নিট রপ্তানি (আরএমজি রপ্তানি মূল্য থেকে কাঁচামাল আমদানি মূল্য বিয়োগ করে নির্ধারিত) ছিল ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ ডলার বা মোট আরএমজি রপ্তানির ৬১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে যে আয় দেশে এসেছে, এর মধ্যে নিটওয়্যার এগিয়ে আছে।
আলোচ্য সময়ে নিটওয়্যার থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ৫৪৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার। অপরদিকে, ওভেন থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ৪৮৮ কোটি ২০ লাখ ডলার।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতের জন্য কাঁচামাল আমদানি করা হয়েছে ৪০৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলারের। এ সময় রপ্তানি করা হয়েছে ১ হাজার ৩৬ কোটি ৯১ লাখ ডলারের পোশাক। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানি বাদ দিয়ে নিট রপ্তানি আয় হয়েছে ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। আর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নিট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৬১ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে নিট রপ্তানির পরিমাণও বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানির আয় বাড়াতে সরকার নানা সুবিধা দিয়ে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট সুবিধা। করোনা-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি ঋণ সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে। এ তহবিল থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য ঋণ সুবিধাসহ সুদহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা হয়েছে, যা ২০২৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এছাড়া, তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে রপ্তানির ওপর ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তার সুবিধা দেয় সরকার। একইসঙ্গে রয়েছে ২ শতাংশ হারে বিশেষ নগদ সহায়তা।
রপ্তানিকারকদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫ হাজার কোটি টাকার গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড রয়েছে, যা থেকে রপ্তানিমুখি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানির জন্য অর্থায়ন করে। এছাড়াও আছে ১০ হাজার কোটি টাকার এক্সপোর্ট ফ্যাসিলিটেশন ফান্ড এবং এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। এসব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দেশের তৈরি পোশাক খাত দিন দিন রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে শক্তিশালী খাত হিসেবে গড়ে উঠেছে। এর মধ্যেই চলতি অর্থবছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে আগের প্রান্তিকের চেয়ে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় কমেছে।
এএ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: ম বর প র ন ত ক আয় ব ড় র জন য আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
২ জুন বাজেট দেবে অন্তর্বর্তী সরকার
প্রতি অর্থবছরে জুন মাসের কোনো বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার রেওয়াজ থাকলেও এবার এর ব্যতিক্রম হচ্ছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করা হবে ২ জুন সোমবার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হতে পারে।
সচিবালয়ে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিল ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এবারের বাজেট হচ্ছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট।
ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট ঘোষণা করা হবে। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরু থেকে। এ কারণে ২ জুন ঘোষণা করা হবে নতুন বাজেট। বাজেট ঘোষণার পরদিন রেওয়াজ অনুযায়ী বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনও করবেন অর্থ উপদেষ্টা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো এ তথ্য জানায়।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী বাজেটের মূল আকার ৭ হাজার কোটি টাকা কমতে পারে।
জাতীয় সংসদ না থাকায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী বাজেট উপস্থাপন করবেন টেলিভিশনের পর্দায়। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এ বাজেট ঘোষণা করা হবে। প্রচলিত বিধান অনুযায়ী, রাজনৈতিক সরকারের অর্থমন্ত্রীরা সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন। রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকায় এ বছর সেটি হবে না।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করা হবে। সর্বশেষ ২০০৭-০৮ সালে টেলিভিশনে ভাষণের মাধ্যমে দুটি বাজেট ঘোষণা করেছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এর আগে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘নানা কারণে আগামী বাজেট ছোট করতে হচ্ছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকারও ছোট হবে। নতুন করে বড় কোনো প্রকল্প নেওয়া হবে না। তবে যেসব বড় প্রকল্প আছে, সেগুলোতে অর্থায়ন চলমান থাকবে।’
সূত্রগুলো জানায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হবে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। বরাদ্দের দিক থেকে আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বাজেটের সিংহভাগ অর্থের জোগান দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী অর্থবছরে সংস্থাটির জন্য ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। চলতি বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা বাজেটে থাকবে বলে জানা গেছে। প্রায় দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। আর চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের নিচেই রাখা হবে। আগামী অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।