অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. নাহিদ ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো পদত্যাগপত্রে নাহিদ ইসলাম লেখেন, আমার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করুন। প্রথমেই আমি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র-জনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য আপনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। বৈষম্যহীন, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ পড়তে আপনার নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে আমাকে সুযোগ দানের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। গত ৮ আগস্ট শপথ নেওয়া উপদেষ্টা পরিষদে আমি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাই। নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আপনার নেতৃত্বে দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট থেকেছি। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমার ছাত্র-জনতার কাতারে উপস্থিত থাকা উচিত মর্মে আমি মনে করি। ফলে আমি আমার দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া সমীচীন মনে করছি।

এমতাবস্থায়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি। আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে মহোদয়কে সবিনয় অনুরোধ করছি।

এদিকে পদত্যাগের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি মনে করেছি সরকারে থাকার চেয়ে রাজপথে থাকা বেশি প্রয়োজন, তাই পদত্যাগ করেছি। আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি, সব কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছি।

নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেই। তখন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করা আমাদের কাছে মনে হয়েছিল যৌক্তিক। গত সাড়ে ছয় মাসের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কাজ করছে। হয়ত আমরা আশানুরূপ ফলাফল এখনো পাইনি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে সরকারে একটা স্ট্যাবিলিটি এসেছে।

নাহিদ আরও বলেন, ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সরকারের বাইরে দেশের যে পরিস্থিতি, সেই পরিস্থিতিতে একটি রাজনৈতিক শক্তি উত্থানের জন্য আমার রাজপথে থাকা প্রয়োজন। ছাত্র-জনতার কাতারে থাকা প্রয়োজন,’ বলেন সদ্য পদত্যাগ করা এই উপদেষ্টা।

প্রসঙ্গত, ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করছে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। সে কারণে তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম পদত য গ গণঅভ য ত থ ন পদত য গপত র উপদ ষ ট র র জন য ন র জন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ট্রমায় আছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা নিয়ে সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে জানানো হয়।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে আয়োজিত ‘অ্যাড্রেসিং সাইকোলজি প্রবলেম এমাং আন্ডার গ্রাজুয়েট অ্যান্ড পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টস আফটার জুলাই-আগস্ট মুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। 

সেন্টার ফর রিসার্চ ইন মাল্টিডিসিপ্লিন (সিআরএম), ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিসার্চ সোসাইটি (ডিইউআরএস) এবং সেন্টার ফর সাইকোলজিক্যাল হেলথ (সিপিএইচ) এর যৌথ উদ্যোগে সেমিনারটি আয়োজিত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহ্জাবীন হকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ।

এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর সাইকোলজিক্যাল হেলথ এর পরিচালক নাজমুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ, সাইকোলজি অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির পরিচালক মো. ওমর ফারুক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডা প্রবাসী মনোবিজ্ঞানী সাদিয়া শারমিন উর্মি এবং সিআরএম এর প্রতিষ্ঠাতা মাহাদী-উল-মোর্শেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইং এর সাধারণ সম্পাদক নিশিতা জামান নিহা।

মূল প্রবন্ধে সাদিয়া শারমিন উর্মি ও মাহাদী-উল-মোর্শেদ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। যেসব শিক্ষার্থী অন্তত পাঁচদিন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তারা এক ধরনের মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলে ১৭-১৮ বছর বয়সী ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ।    

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ গবেষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বর্তমানে ব্যক্তি, পরিবারসহ সমাজের সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় চোখের সামনে রক্ত ও হতাহতের দৃশ্য দেখে মানুষের মানসিক চাপ ও অস্থিরতা বেড়ে গেছে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের এ ট্রমা কাটাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শীঘ্রই সামাজিক অস্থিরতা দূর করে একটি সুস্থ সমাজ গঠন সম্ভব হবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একদিন নাহিদ ইসলাম দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন: শফিকুল আলম
  • সরকারে থাকার চেয়ে রাজপথে থাকা বেশি প্রয়োজন, তাই পদত্যাগ করেছি: নাহিদ ইসলাম
  • নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ শুক্রবার
  • আন্দোলনের স্মৃতিময় বই 
  • রাজনীতির বইয়ে আগ্রহ
  • হাসিনা হাসপাতালে গিয়ে বলেছিলেন ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’: চিফ প্রসিকিউটর
  • সংস্কার ও নির্বাচন দুটোই হতে হবে
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব সবার: মির্জা ফখরুল
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ট্রমায় আছেন