শ্রীপুরে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ আটকে মানববন্ধন
Published: 25th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের সব আন্তনগর ট্রেনের নিয়মিত যাত্রাবিরতির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচির এক পর্যায়ে লাল কাপড় দেখিয়ে ঢাকা অভিমুখী আন্তনগর ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ ট্রেন থামানো হয়। স্টেশনমাস্টারের আশ্বাসে প্রায় আধা ঘণ্টা পর ট্রেনটি চলাচলের জন্য রেলপথ ছেড়ে দেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্টেশনটির প্ল্যাটফর্মে ‘সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শ্রীপুরের সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন হয়। একপর্যায়ে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস সেখানে পৌঁছালে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ট্রেনটি থামান আন্দোলনকারীরা। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনের দিকে যাত্রা করে।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, শিল্পোন্নত শ্রীপুর উপজেলাজুড়ে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন বসবাস করেন। তাঁরা সড়ক ও রেলপথে নিয়মিত যাতায়াত করেন। অথচ এ এলাকার রেলস্টেশনে কেবল একটি মাত্র আন্তনগর ট্রেন থামে। তাঁদের দাবি, শ্রীপুর তথা পুরো গাজীপুরের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে রেলযাত্রা অবারিত করতে হবে। এতে মানুষের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি সরকারি কোষাগারেও উল্লেখযোগ্য আয় জমা হবে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী তপন বণিক বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করে শ্রীপুরে যমুনা ট্রেন থামিয়েছি। এখন এই স্টেশন হয়ে যাত্রীরা যাতে অন্য আন্তনগর ট্রেনের সেবা নিতে পারেন, সে ব্যবস্থার জন্যই আমরা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আমানুল্লাহ জানান, ‘সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়ার ঘোষণা দিতে হবে। ঘোষণা না পেলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
বিষয়টি নিয়ে রেলের মহাপরিচালকের (ডিজি) সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে শ্রীপুর রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, ডিজি সাত দিনের সময় নিয়েছেন। এর মধ্যে এখন থেকে ব্রহ্মপুত্রসহ ওই রেলপথের সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র লপথ
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকারী পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। আবরার ফাহাদ কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে জিলা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়। কর্মসূচিতে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ও ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজও উপস্থিত ছিলেন।
আধা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রায় সবার হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা ফেস্টুন। তাঁরা আবরারের হত্যাকারীদের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। আগে থেকেই পলাতক (জিসান, তানিম, রাফিদ) ও সদ্য পালিয়ে যাওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুনতাসির আল জেমিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তাঁরা।
মানববন্ধনে বলা হয়, এ রকম স্পর্শকাতর একটি মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে গেছেন, যা খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা।’
মানববন্ধনে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আমি চাই না আর কোনো মায়ের কোল খালি হোক। আর কোনো বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ উঠুক। দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করে দেশের মানুষকে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল করে তুলতে হবে।’
জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর জেলাতে মানববন্ধন করতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের ইন্ধনে তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এর পেছনে ছিলেন। যাঁরা আন্দোলন করতে চেয়েছিলেন, তাঁদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতিতে ফিরতে হবে এবং ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, মানববন্ধনে অংশ নেওয়াদের মধ্যে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত আদর্শে ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে আবরারের প্রশ্নে তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আবরারের হত্যাকারী ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি যেমন নিষিদ্ধ হয়েছে, তাদের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগকেও সেভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে আবরারের আত্মার শান্তি মিলবে না।
মানববন্ধনে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে আছে পলাতক সব আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে; সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধিদল কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন।