অন্তর্বর্তী  সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন,  ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মাঠে থেকে কাজ করার লক্ষ্যে পদত্যাগ করেছি।’

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গণ-অভুত্থানে অংশগ্রহণকারী শক্তিকে সংহত করতে আমি মনে করেছি সরকারের থেকে সরকারের বাইরে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে।’

আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব  শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।  

নাহিদ ইসলাম বলেন,  ছয় মাসে তিনি দুটি মন্ত্রণালয়ের বাইরেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। ছয় মাস খুবই কম সময়। তারপরও তিনি চেষ্টা করেছেন বলে জানান। বলেন, তাঁর কাজের মূল্যায়ন জনগণ করবে।

নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, নতুন যে রাজনৈতিক দল গঠন হচ্ছে সেখানে অংশগ্রহণ করার তাঁর অভিপ্রায় আছে।

আজ দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো.

নাহিদ ইসলাম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন নাহিদ ইসলাম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হবে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। সে কারণে তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল।

আরও পড়ুনপদত্যাগ করলেন নাহিদ ইসলাম ৫১ মিনিট আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ন হ দ ইসল ম উপদ ষ ট র প সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

ছোট বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গতি কম

অপ্রচলিত বা নতুন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তবে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির গতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো বড় বাজারের তুলনায় বেশ কম।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) নতুন বাজারে ৫১২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হওয়া ৪৮০ কোটি ডলারের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। অথচ চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইইউতে ১১ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ শতাংশ ও কানাডায় ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৩ হাজার ২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ইইউতে ৫০, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯, যুক্তরাজ্যে ১১, কানাডায় ৩ ও নতুন বাজারে ১৭ শতাংশ তৈরি পোশাক যায়।

নতুন বাজারের মধ্যে রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে। আবার অস্ট্রেলিয়া ও চীনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে খুবই কম। ফলে সার্বিকভাবে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে।

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অপ্রচলিত সবচেয়ে বড় বাজার জাপান। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এ বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় বড় বাজার অস্ট্রেলিয়ায় চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের তৃতীয় শীর্ষ নতুন বাজার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৫৪ কোটি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। চতুর্থ শীর্ষ নতুন বাজার তুরস্ক। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৩৫ কোটি ৭২ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। তুরস্কের কাছাকাছি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়, ৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম।

বিজিএমইএর তথ্যানুযায়ী, রাশিয়ার বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে এ বাজারে রপ্তানি হয়েছে ২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বসেছে অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ। ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করলেও ইতিমধ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজারে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদেরা।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গত বৃহস্পতিবার এক সংলাপে বলেন, এশিয়ায় বড় বাজার রয়েছে। চীন বছরে ২ হাজার ৮০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। ভারত আমদানি করে ৭৫০ কোটি ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত চীনে ১ বিলিয়ন ও ভারতে ২ বিলিয়ন ডলারের কম রপ্তানি করে। এ জায়গা মনোযোগ দেওয়া গেলে পণ্য ও বাজার বহুমুখী করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো সম্ভব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ