মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের সমালোচনায় ভারতীয় কিংবদন্তি
Published: 25th, February 2025 GMT
আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে আবারও ব্যর্থতার চক্রে আটকে গেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ২২৮ রানের অলআউট হয়ে ৬ উইকেটে হেরে যায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪১ রানের লো-স্কোরে থেমে ৫ উইকেটে হেরে বিদায় নেয় টুর্নামেন্ট থেকে। এত কম রানের পুঁজি নিয়েও লড়াই করেছে বোলাররা, যদিও এমন পুঁজি লড়াইয়ের জন্য যথেষ্ট না। মোটাদাগে বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনীর কারণেই দুই ম্যাচে হার দেখতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
এদিকে বাংলাদেশের ব্যর্থতার বড় কারণ হিসেবে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাজে পারফরম্যান্সকে দায়ী করেছেন সাবেক ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই দুই ব্যাটারই দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে দ্রুত ফিরে যান, যার ফলে ২৭ ওভারেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল। একসময় বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ জাফর সরাসরিই বলেছেন, আইসিসি ইভেন্টে পারফর্ম করতে পারেন না সিনিয়র ক্রিকেটাররা।
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাফর বলেন, ‘আমরা সম্ভবত সাকিব আল হাসানকে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দেখেছি, যেখানে তিনি ছিলেন ব্যাট হাতে উজ্জ্বল খেলোয়াড়। কিন্তু আমি জানি না এটা কীরকম চাপ? তারা কি বেশি চাপ নিয়ে ফেলছে? কারণ তারা বড় মঞ্চে এসে পারফর্মই করতে পারে না।’
মাহমুদউল্লাহর আইসিসি ইভেন্টে ভালো পারফর্ম করার ইতিহাস আছে। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এছাড়াও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। এবারের আসরে তিনি প্রথম ম্যাচে চোটের কারণে দলে ছিলেন না আর দ্বিতীয় ম্যাচে জায়গা পেলেও দায়সারা ব্যাটিং নিয়েই ফিরতে হয়েছে মাত্র ৪ রানে।
জাফর বলেন, ‘আজকের যে শট সিলেকশন আমরা দেখেছি, তা খুবই হতাশাজনক ছিল। মুশফিক সেই শট খেলেছে, মাহমুদউল্লাহও সেই বেপরোয়া শট খেলেছে। আর এটা একটি সহজ জয়ের ম্যাচ ছিল। তারা সবসময় ভালো করার কথা বলে। তবে দুঃখজনকভাবে, আইসিসি ইভেন্টে সবসময়ই তারা ব্যর্থ।’
রাওয়ালপিন্ডির মাঠে বাংলাদেশ অন্তত ৫০-৬০ শর্ট রান নিতে পারতেন বলে মনে করেন জাফর। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তারা সহজেই সেই পিচে ৩০০ এর অধিক রান করতে পারত। তাই তাদের নিজেদেরকেই দোষ দিতে হবে। বোলিং ইউনিট থেকে এটি অনেক বেশি চাওয়া যে তারা নিউজিল্যান্ডকে ২৪০ রানের নিচে অলআউট করে ফেলবে।’
সাবেক কিউই পেসার শেন বন্ড মনে করেন, বাংলাদেশের বোলিং বিভাগ প্রতিভাবান হলেও ব্যাটিং ইউনিটই দলের বড় সমস্যা। বাংলাদেশের ফিল্ডিং ব্যর্থতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ম্যাচে রাচিন রবীন্দ্র ২৬ রানে রান আউটের সুযোগ পান, কিন্তু বাংলাদেশ তা হাতছাড়া করে। এরপর ৯৩ ও ১০৬ রানে দুইবার ক্যাচ মিস করেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ।
বন্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ ভালো, তাদের গতিময় বোলার আছে, একজন বাঁহাতি পেসার আছে, যা নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের মতো দলের নেই। কিন্তু ছোটখাটো ভুলগুলোই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেয়। ক্যাচ মিস ও রান-আউট হাতছাড়া করা জয়ের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
২২ রান তুলতে শেষ ৭ উইকেট, পাকিস্তানের নাটকীয় হার
‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান আবারও সেই পরিচিত রূপে! জয়ের পথে থেকেও হঠাৎ পথ হারানোর ঘটনা তাদের ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ঘটল সেই চেনা কাহিনি। শেষ ২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ৭৩ রানের ব্যবধানে হেরে গেল পাকিস্তান।
প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৪৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। জবাবে পাকিস্তান মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই ২৪৯ রান করে ফেলে। শেষ ৬৯ বলে ৭ উইকেট হাতে রেখে প্রয়োজন ছিল ৯৬ রান। তবে সেখান থেকেই ধসে পড়ে পাকিস্তান ব্যাটিং লাইনআপ। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৩৫ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় ২৭১ রানে।
টস জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫০ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট তুলে নেয় পাকিস্তান, কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। মার্ক চাপম্যান ও ড্যারিল মিচেল গড়েন ১৯৯ রানের রেকর্ড জুটি, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ।
মিচেল ৮৪ বলে ৭৬ রান করে ফিরলেও চাপম্যান ছিলেন দুর্দান্ত। ১৩২ রানের ইনিংসে ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ দিকে অভিষিক্ত মুহাম্মদ আব্বাস মাত্র ২৬ বলে ৫২ রানের ক্যামিও খেললে ৩৪৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় কিউইরা।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে ইরফান খান ৩ উইকেট নিলেও ৫ ওভারে দেন ৫১ রান। দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন আকিফ জাভেদ ও হারিস রউফ। এদিন অতিরিক্ত থেকেই পাকিস্তান দেয় ৪৩ রান, যা আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
৩৪৫ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন উসমান খান ও আবদুল্লাহ শফিক। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৮৩ রান। তবে ৮৮ রানের মধ্যেই দুজনই ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে দল। এরপর বাবর আজম ও অধিনায়ক রিজওয়ান মিলে গড়েন ৭৬ রানের জুটি। ১৬৪ রানে রিজওয়ান আউট হলেও পাকিস্তানের জয়ের পথে বড় ধাক্কা ছিল না। বাবরের সঙ্গে ৫৯ বলে ৮৫ রানের ঝড়ো জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন সালমান আলী আগা।
কিন্তু ২৪৯ রানে বাবর আউট হওয়ার পরই নামে পাকিস্তানের ইনিংসে ধস। শেষ ২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রানে অলআউট হয় তারা। শেষ ৬ ব্যাটারের মধ্যে তিনজন শূন্য এবং তিনজন মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
পাকিস্তান তাই জেতার মতো পরিস্থিতিতে থেকেও ম্যাচ হেরে গেল ৭৩ রানের ব্যবধানে। এই হারে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেল তারা।