Risingbd:
2025-02-25@10:13:23 GMT

সাজেক যেন ‍যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরী

Published: 25th, February 2025 GMT

সাজেক যেন ‍যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরী

মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রিসোর্ট, কটেজ, রেস্তোরাঁর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে পুড়ে গেছে ৩৪টি রিসোর্ট, সাতটি রেস্টুরেন্ট, ১৮টি দোকান ও ৩৬টি বসত ঘর। বর্তমানে সেখানে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

এদিকে, গতকাল সোমবার সাজেকে যেসব পর্যটক অবস্থান করছিলেন, তারা মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে গন্তব্যে ফিরে গেছেন। পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসন নিরুৎসাহিত করার কারণে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার এই পর্যটন কেন্দ্রটিতে আজ কেউ ভ্রমণে আসেননি।

সাজেকে ভ্যালির যে অংশে আগুনে লেগেছে, হঠাৎ দেখলেই মনে হবে, যেন এটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোনো নগরী। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুনের বাকি অংশ নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছেন সেখানে। বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট লাইন সচলে কাজ করছেন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটের কর্মীরা। 

আরো পড়ুন:

সাজেকে অগ্নিকাণ্ড: তদন্ত কমিটি গঠন

সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করল প্রশাসন

এলাকাবাসী জানান, আজ সকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আগুনে পুড়ে যাওয়া তাদের প্রতিষ্ঠানের পোড়া টিন ও ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেন। এত বড় ক্ষতি কীভাবে সামাল দেবেন সেই চিন্তায় রয়েছে সবার চোখে মুখে।

ব্যবসায়ীরা জানান, সাজেকের অধিকাংশ রিসোর্ট কাঠ ও বাঁশের তৈরি। এ কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাজেক ভ্যালিতে ফায়ার সার্ভিসের কোনো স্টেশন নেই। প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। আগুন লাগার তথ্য জানতে পেরে খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রওনা দেন। তবে, পাহাড়ি পথের কারণে তাদের সাজেকে পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এরপর তারা কাজ শুরু করলেও পানি না থাকায় দূর গ্রাম থেকে বারবার পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। পাশাপাশি বাতাসের তীব্রতার কারণেও আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে সবাইকে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিতভাবে কাজ করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসী  

সাজেক কটেজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, “সাজেকে আমাদের মোট ১২৬টি রিসোর্ট-কটেজ, ৬৪টি দোকান ও ২১টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এরমধ্যে পুড়েছে ৩৪টি রিসোর্ট, সাতটি রেস্টুরেন্ট ও ১৮টি দোকান। সে হিসেবে আগুনে পুড়েছে এক তৃতীয়াংশ রিসোর্ট, দোকান ও রেস্টুরেন্ট। বাকিগুলো ঠিক আছে। আমাদের যাদের রিসোর্ট পুড়ে গেছে, তাদের তো এমনিতেই লোকসান, তার ওপর বাকি যাদের ব্যবসা হওয়ার কথা, সেগুলোও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সবাই লোকসানে থাকবে। তাই সাজেকে পর্যটনের কথা চিন্তা করে অন্তত পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসন যে নিরুৎসাহিত করেছে, সেটা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানাই।”

তিনি বলেন, “অনেকেই লেখালেখি করছেন, এখানে নাশকতা থাকতে পারে কিনা, কিন্তু আমরা জানি এখানে কোনো নাশকতা ঘটেনি। এটা একটা দুর্ঘটনা। নাশকতার কোনো হুমকি নেই। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা অনেক পরিশ্রম করেছেন। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “ভবিষ্যতে আগুন থেকে সাজেকবাসীকে রক্ষা করার জন্য এই পর্যটন কেন্দ্রে একটি ফায়ার স্টেশন এবং পানির রিজার্ভার প্রয়োজন।”

১৬৭ নম্বর রুইলুই মৌজার হেডম্যান লাল থাঙ্গা লুসাই বলেন, “আগুনের ঘটনায় আমার বাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা পুড়ে গেছে।”

শতরঞ্জি ইকো রিসোর্টের মালিক নাইমুল ইসলাম বলেন, ‌“আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি আমার রিসোর্ট উদ্বোধনের কথা ছিল। আগুনে পুড়ে আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। অন্তত ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার।”

বিজিবি খাগড়াছড়ি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো.

আ. মোস্তাকিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন গিয়ে বলেন, “এটা কোনো নাশকতার ঘটনা নয়। যেহেতু রিসোর্টগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, তাই কোনো একটা রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এরপর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাজেকে একটা ফায়ার স্টেশন থাকা জরুরি।”

বাঘাইছড়ি সেনা জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল আমিন বলেন, “ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখানে পানির রিজার্ভার থাকা প্রয়োজন। পানির রিজার্ভার থাকলে আগুনের ক্ষয়ক্ষতি আরো কম হতো।”

সাজেক কটেজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক চাই থোয়াই চৌধুরী জয় বলেন, “গতকাল রাতে যেসব পর্যটক ছিল, তারা আজ সকালে চলে গেছেন। তাদের কারো কোনো সমস্যা হয়নি।”

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, “ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা চলছে। কটেজ মালিক সমিতি পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহের বিষয়ে আমাদের জানিয়েছেন, যেন সেটা তুলে নেওয়া হয়। আমরা বিষয়টি বিবেচনার জন্য মিটিং আহ্বান করেছি।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ভ রমণ র জন য র ঘটন ন শকত

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সূচকের বড় উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

এদিন ডিএসই ও সিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। একইসঙ্গে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩২.৯৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২৬৭ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬.৯৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩.৮৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:

সিএসইতে যোগ দিলেন জামাল ইউসুফ

পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা

ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১৯৬ কোম্পানির, কমেছে ১৫৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৪টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ৬০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৭৯.৯৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৯২২ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৫.৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ৭০৫ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৯.০১ পয়েন্ট বেড়ে ৯৫৪ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৫৬.৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ২৩৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১২৯টি কোম্পানির, কমেছে ৮২টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫টির।

দিনশেষে সিএসইতে ১৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ