বইমেলায় শব্দনীলের কাব্যগ্রন্থ ‘চালাকচরের ফুলপরী’
Published: 25th, February 2025 GMT
অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে শব্দনীলের কাব্যগ্রন্থ ‘চালাকচরের ফুলপরী’। চালাকচরের ফুলপরী কাব্যগ্রন্থটি নরসিংদীর আঞ্চলিক ভাষায় লেখা হয়েছে। একটি অখণ্ড প্রেম কাহিনী একাধিক কবিতায় ঘটনার পরম্পরা ঠিক রেখে বর্ণিত হয়েছে। এটির প্রচ্ছদ করেছেন, সুপ্রসন্ন কুণ্ডু। অলংকরণ করেছেন কাজী সুমাইয়া হোসাইন লিমু। মুদ্রিত মূল্য- ২০০। কাব্যগ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে ঘাসফুলের ১৮০-১৮১ নং স্টলে। প্রকাশ করেছে ঘাসফুল।
আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা লেখর কারণ জানালেন শব্দনীল। তিনি বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন জেলায় আমার শৈশব, কৈশোর এবং তারুণ্যের প্রথম প্রহর কেটেছে। যার ফলশ্রুতিতে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে। একটা সময় আমি রংপুরের আঞ্চলিক ভাষা, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা এবং শুদ্ধ ভাষার মিশ্রনে একটি অপরিচিত ভাষায় অনেকদিন কথাও বলেছি। এটাকে বলা যায়, আঞ্চলিক ভাষার গুরুচণ্ডালী দোষ। এখন অনেকটা দোষ কেটে গেলেও আমি মাটির খুব কাছাকাছি যাওয়ার ফলে জারি, সারি, ভাওয়াইয়া গানের ভাষার সুর-তাল-লয়ের প্রেমে পড়ে যাই। অন্যদিকে একটি প্রবাদ আছে, ‘পাগলা সাঁকো নাড়িস নে’। মূলত আমাদের শহুরে সভ্যতার আড়ালে বিস্ময়কর একটি বিশাল শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির ভাণ্ডার আছে। তা খোঁজার একটি নেশা ছিলো, সেই নেশায় ‘সাঁকো’ নড়িয়েছে দেবব্রত সিংহের বাঁকুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় রচিত ‘তেজ’ কবিতা। একই সঙ্গে কবি জসীমউদ্দীনের সোজন বাদিয়ার ঘাট এবং সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা ‘নূরলদীনের সারা জীবন’। ফলে আমার মনের ভেতর ঢং করে বেজে উঠলো, ‘ভাল মনে করিয়ে দিয়েছিস’। এখান থেকে আঞ্চলিক কবিতার চর্চা শুরু করি। লিখছি কারণ, আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের শিকড়ের সংস্কৃতি হারানোর ভয় মাঝে মাঝে পেয়ে বসে। এই ভয় থেকে আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা লিখছি।’’
শব্দনীল আরও বলেন, ‘‘চালাকচরের ফুলপরী কাব্যগ্রন্থ বিভিন্ন ধরণের কবিতার মিশ্রিত কোনো গ্রন্থ নয়। এই গ্রন্থটি পড়লে একটি সুন্দর গল্প পাবেন। যে গল্পটি তৈরি হয়েছে নরসিংদীর আঞ্চলিক ভাষায়। শুধু তাই নয়, আপনি যদি একটি গ্রামীণ জীবনের প্রেম কাহিনীর সঙ্গে নরসিংদীকে জানতে চান তবে আপনি অনেকটাই জানতে পারবেন চালাকচরের ফুলপরীর মাধ্যমে। গ্রন্থটি আঞ্চলিকাতার সঙ্গে আধুনিকতার পরিচয় ঘটানোর চেষ্টা করেছি পরাবাস্তববাদ বা সুরিয়ালিজমের হাত ধরে। এইটাকে কাব্যনাট্য বা কাব্যগল্প গ্রন্থ বলা যায়।’’
আরো পড়ুন:
মেলায় শাহ মতিন টিপুর ‘রোদ্দুর ভুলে গেছে বৃষ্টির গান’
স্বীকৃতিহীনতা এক অর্থে লাভজনক: রাসেল রায়হান
বইটির ফ্ল্যাপে লেখা—‘‘উদয় মাগো সোনার বাংলা তরে হাজার সেলাম পুবেতে বন্দনা করলাম’অ পুবের বানু সারো একদিকদা উদয় বানু চৌদিকে ফসর উত্তরে বন্দনা করলাম’অ হিমালয় পর্বত তার অ ইয়ালে কাঁপে সয়ালও সংসার পশ্চিমে বন্দনা করলাম’অ মৌক্কা বানু সারো মুসলমান’অ পড়ে নুমাজ আল্লাহু আকবার দক্ষিণে বন্দনা করলাম’অ কালী দশায় সে সায়রে বাণিজ্য করে চান সওদাগর চারকোনা বন্দনা করলাম’অ আসর হইলো স্থির নরসিংহদীর বন্দনা করালাম’অ জেলা হয় নসন্দী নরসিংদীর বন্দনা করলাম’অ থানা হয় শিপপুর পোস্টঅফিস নৌকাঘাটা ছুটাবন্দর ঠিকানা বন্দনা ছাড়িয়া এবার কিসসায় দিলাম মন চালাকচরের ফুলপরী তুই বুইত্যাই আপন’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে ভারত যাচ্ছেন জেডি ভ্যান্স
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স চার দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। তিনি এমন সময় ভারতে যাচ্ছেন যখন প্রতিদেশী দেশ চীনের সঙ্গে শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। দুই শক্তিশালী দেশের এই দ্বন্দ্বে বিশ্ব অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে দেনদরবারের মধ্যে এই সফরে জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। অন্যদিকে জেডি ভ্যান্সের এ সফরের ঠিক আগ মুহূর্তে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলো সফর শেষ করেছেন। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে চীনকে একটি স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শি জিনপিং এ সফর করেন। সর্বশেষ দুই দিন আগে তিনি মালয়েশিয়া সফরে ছিলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জেডি ভ্যান্সের সফরের কথা জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সফরে দুই দেশই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা-পর্যালোচনার সুযোগ দেবে।
ভ্যান্সের সফরসূচি অনুযায়ী, দিল্লি যাওয়ার আগে আজ শুক্রবার তিনি ইতালি সফরে যাবেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৃতীয় মেয়াদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভ্যান্স। এ বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প এখনও কোনো দেশ সফর করেননি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (২১ এপ্রিল) সফরের প্রথম দিন অর্থনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুতে তাদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। উভয় দেশ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া বাকি সব দেশের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। অন্যদিকে অন্য দেশগুলো উচ্চ শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন, কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এই হার ২৪৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তার জবাবে মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন এখন শুল্ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এর ফলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি গতি কিছুটা ধীর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন শুল্কনীতি ঘোষণার পরপরই দিল্লি ও ওয়াশিংটন বাণিজ্যিক সমঝোতায় দ্রুত পৌঁছাতে কাজ করে যাচ্ছে। ভারত ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্যের উপর শুল্ক কমিয়েছে এবং ট্রাম্পের হুমকির মুখে আরও বিস্তৃত পরিসরে শুল্ক কাটছাঁটের কথা বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ছিল যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পৌঁছেছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্পের অভিষেকের পরপরই ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং দুই নেতা আলোচনায় বসেছিলেন।