সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদ পরিবারের সদস্যগণ প্রিয়জন হারানোর এতগুলো বছর পরেও স্বজন হত্যার বিচার পেতে অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস। ২০০৯ সালের এই দিনে পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার সব শহীদের স্মরণে এখন থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এই দিনে আমি গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করি ও বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই জাতির সূর্য সন্তান, শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। একইসঙ্গে তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের জানাই সমবেদনা ও সহমর্মিতা।

ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্যরা একান্ত প্রিয়জন হারানোর এতগুলো বছর পরও স্বজন হত্যার বিচার পেতে অপেক্ষা করে আছেন। পিলখানায় বীর সেনা সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর অনেকগুলো বছর ধরে জাতি হিসেবে আমাদের নানা বিভ্রান্তিতে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এই নির্মমতার সুবিচার নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধ। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সমব্যথী হয়ে দেশ ও জনগণ শহীদ পরিবারও সব নিপীড়িতের পাশে দাঁড়াবে সেই আশাবাদ রাখছি একইসঙ্গে।

এখন থেকে এই দিনটি আমাদের চেতনা ও অনুভূতির একটি নিয়ামক হয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করার ব্রত নিয়ে পথচলা একদল সাহসী মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত নির্মম মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দেবে। তাদের এ আত্মত্যাগের স্মরণে আমরা জাতি হিসেবে যেন নিজেদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে সংকল্পবদ্ধ হই। দুঃশাসন, ষড়যন্ত্র ও আত্ম অহংকারে আর যেন কোনো প্রাণ না হারায়। মানুষ যেন আত্মসম্মান ও মানবাধিকার নিয়ে নিজের যোগ্যতা ও মেধায় তার প্রাপ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারে এ প্রত্যাশা করি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত পৃথিবী পড়ার পথে বাংলাদেশই যেন হয় আদর্শিক মাপকাঠি। জাতির শহীদ সেনাদের স্মরণে এ দিনে আমরা একটি স্বনির্ভর ও সুসভ্য বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। শহীদ সেনা দিবসে জাতির পক্ষ থেকে আমি আবারও সব শহীদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

এম জি

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: এই দ ন পর ব র স মরণ

এছাড়াও পড়ুন:

দাদা জাপটে ধরে রাখেন, বিষ প্রয়োগ করেন চাচা

নওগাঁর আত্রাইয়ে বিষ প্রয়োগ করে সানজিদা (১৬) নামে এক কিশোরীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে। শুক্রবার নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তার স্বজনরা। জমি নিয়ে কলহের জেরে সিরিঞ্জের মাধ্যমে কিশোরীর শরীরে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বজনরা দাবি করেছেন।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত কিশোরীর মামা ফজলুর রহমান। এতে বলা হয়, ৯ এপ্রিল সকালে সানজিদা প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরে। সাংসারিক কাজে মা বাইরে ছিলেন। এ সুযোগে দাদা ও চাচা তার ঘরে যান। দাদা মোসলেম মণ্ডল তার পাশে বসে জাপটে ধরেন। চাচা সাজিম মণ্ডল পকেট থেকে ইনজেকশন বের করে তার বাঁ হাতের শিরায় প্রয়োগ করেন। এ কথা কাউকে বললে বাবা ও ভাইকেও হত্যার হুমকি দেন।

মা খুশি বেগম বাড়িতে ফিরে মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় পেয়ে প্রতিবেশীর সহযোগিতায় নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে সানজিদাকে হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা।

স্বজনদের ভাষ্য, মৃত্যর আগে তার শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে দাদা ও চাচা বিষ প্রয়োগ করেছেন বলে জানিয়ে গেছে সানজিদা। তার বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করা আছে। এ ঘটনায় রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সানজিদার মা খুশি বেগম, নানা মোসলেম প্রামাণিক, চাচা সাইফুল ইসলাম ও মামা হামিদুল প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন। নিহত কিশোরী উপজেলার আন্দারকোটা গ্রামের বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসী শামসুল মণ্ডলের মেয়ে। সে ঘোষগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে পর্যায়ক্রমে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করছেন। 

শামসুলের স্ত্রী খুশি বেগম মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, বাড়ির উত্তরে বাবা মোসলেম মণ্ডলের কাছ থেকে জমি কিনে চার বছর আগে তৈরি মাটির বাড়িতে তারা থাকতেন। সেখানে পাকা বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে শামসুলের বাবা মোসলেম ও ভাই সাজিম মণ্ডল বাধা দেন। তারা দক্ষিণে নিচু জায়গায় বাড়ি করতে বলেন। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। 

বাবা ও ভাই বিদেশে থাকায় বাড়ি করা নিয়ে বিরোধের জেরে সানজিদা ও তার মায়ের সঙ্গে দাদা ও চাচার কলহ লেগে থাকত বলে অভিযোগ করেন ফজলুর রহমান। এর জেরে মোসলেম ও সাজিম গত ৯ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশ্যে সানজিদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনার পর থেকে মোসলেম ও সাজিম মণ্ডল পলাতক রয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাজিম মণ্ডলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও দু’জনকে পাওয়া যায়নি।

আত্রাই থানার ওসি মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করা হয়েছিল। রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। কিশোরীর ময়নাতদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দাদা জাপটে ধরে রাখেন, বিষ প্রয়োগ করেন চাচা