যুক্তরাজ্যে ৩৫০টি বড় রাষ্ট্রীয় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে ৪৩ শতাংশের বেশি সদস্য নারী। সরকারের তৈরি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, নেতৃত্বের ভূমিকায় নারীদের প্রতিনিধিত্ব আরও বাড়াতে বেশি বেশি কাজ করতে হবে।

‘এফটিএসই উইম্যান লিডার্স রিভিউ’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে এফটিএসইর (যুক্তরাজ্যের সর্বাধিক পরিচিত পুঁজিবাজার) ৩৫০ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৪০ দশমিক ২ শতাংশ।

এর মধ্যে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ নারী পর্ষদে নেতৃত্বের ভূমিকায় রয়েছেন। আগের বছর ছিল ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

এফটিএসইর ১০০ কোম্পানিতে ২০২৪ সালে পরিচালনা পর্ষদে নারী প্রতিনিধি ছিল ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ। শীর্ষ নেতৃত্বের ভূমিকায় নারীদের হার ৩৬ দশমিক ৬। উভয় ক্ষেত্রেই আগের বছরের তুলনায় নারী প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে।

পরিচালনা পর্ষদে সেসব পদ রয়েছে, সেখানে অনির্বাহী পদও অন্তর্ভুক্ত। ওই সব পদে প্রধান নির্বাহীর মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকে না।

পরিচালনা পর্ষদে নারীদের সংখ্যা বাড়লেও এফটিএসইর ৩৫০ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী পদে নারীর সংখ্যা কমে গেছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২১, ২০২৩ সালে ২০ এবং ২০২৪ সালে তা ১৯–এ নেমে এসেছে।

প্রধান নির্বাহী পদে নারীর সংখ্যা কমে গেলেও সার্বিক পরিস্থিতিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে যুক্তরাজ্য সরকার।

ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের মতো যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত সরকারি কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক কোটা রাখার ব্যবস্থা নেই।

তবে আইনে বলা আছে, কোম্পানিগুলোর উচিত পরিচালনা পর্ষদে অন্তত ৪০ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখা।

এফটিএসইর ৩৫০ কোম্পানির মধ্যে তিন–চতুর্থাংশই ৪০ শতাংশের ওই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে বা ছাড়িয়ে গেছে।

যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস বলেছেন, ‘পরিচালনা পর্ষদে লিঙ্গভিত্তিক (জেন্ডার) সমতা প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাজ্য, কিন্তু আমাদের নিজেদের এই কৃতিত্বে খুশি হয়ে চেষ্টা ছেড়ে দিলে হবে না। আমাদের অবশ্যই নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভূমিকায় যেতে যে বাধার দেয়াল, তা ভেঙে দিতে হবে, যেন সবচেয়ে প্রতিভাবানেরা যুক্তরাজ্যজুড়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দিতে পারে।’

রেচেল রিভস যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী।

যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তিমালিকানাধীন ৫০টি কোম্পানিতে পরিচালনা পর্ষদে নারী সদস্যদের হার ৩১ বলেও ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রীয় কোম্পানির তুলনায় যা বেশ কম।

আরও পড়ুনকী করতে চলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভস০৭ জুলাই ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

কোটি টাকার ব্যবসা, তবু খাজনা দেন না মালিকরা

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেসার্স কাদেরিয়া ব্রিকস ইটভাটায় বছরে ৩০ লাখ ইট তৈরি করা হয়। ইটের ব্যবসা থেকে আয় আড়াই থেকে ৩ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৪ সালে ১২ হাজার টাকার ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) সরকারকে পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। পরিবেশ অমান্য করে ইটভাটায় পোড়ানো হয় জ্বালানি কাঠ। নেই জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স হালনাগাদ। এসব অনিয়মের কারণে ৮ ফেব্রুয়ারি কাদেরিয়া ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপকর্ম আড়াল করতে নিয়মিত প্রশাসনকে লাখ টাকা চাঁদা দিত প্রতিষ্ঠানটি।  
শুধু এ ইটভাটাই নয়; অবৈধ কাঠ ব্যবহার, হালনাগাদ লাইসেন্স না থাকার অপরাধে মেসার্স কর্ণফুলী ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা, মেসার্স গোল্ডেন ব্রিকসকে ৫০ হাজার, মেসার্স সাঈদ আহম্মদ ব্রিকসকে ১ লাখ এবং মেসার্স ন্যাশনাল ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারা সরকারের ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা খাজনা পরিশোধ করেনি। এ পাঁচ ইটভাটার মতো চট্টগ্রামের ২৭৬টি ভাটার মালিক ২০২৪ সালে সরকারের নির্ধারিত খাজনা পরিশোধ করেনি। এতে সরকারের গচ্চা গেছে ৪১ লাখ টাকা। যদিও বছরে প্রতিটি ইটভাটা মালিক ১ থেকে ৩ কোটি টাকার ইট বিক্রি করে থাকেন। 
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ইটভাটা থেকে 
২০২৪ সালে কাঙ্ক্ষিত ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়নি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজস্ব বিভাগ কর আদায়ে কাজ 
করে যাচ্ছে। 

যদিও মাসিক সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম চট্টগ্রামের ৩৭৩ ইটভাটার বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। তার পরও ভ্রাম্যমাণ আদালত বেশ কয়েকটি উপজেলায়  অভিযান পরিচালনা করে। 
মেসার্স বখতেয়ার ইটভাটার মালিক বখতেয়ার উদ্দিন বলেন, আগস্টের পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ ইটভাটার মালিকানায় পরিবর্তন এসেছেন। আগে যারা মালিক ছিলেন, তাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-সমর্থক হওয়ায় গা-ঢাকা দিয়েছেন। আড়ালে থেকে তারা নতুন পার্টনার নিয়ে ইটভাটাগুলো চালাচ্ছেন। এখন যারা নতুনভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন, তারা খাজনা দিতে হবে– তা না জানার কারণে খাজনা বকেয়া রয়ে গেছে। 

আরেক ইটভাটার মালিক নিজাম উদ্দিন বলেন, বড় ইটভাটায় বছরে ২০-৩০ লাখ ইট তৈরি হয়। ২ থেকে ৩ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। কর্মচারী খরচ, প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা লাভ হয়। অবহেলার কারণে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা খাজনাটা দেওয়া হয়ে ওঠে না।
চট্টগ্রামে ৩৭৩ ইটভাটা থাকলেও মহানগর এবং পটিয়া উপজেলায় কোনো ইটভাটা নেই। জেলার অন্য ১৪টি উপজেলায় ইটভাটা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ইটভাটা রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও চন্দনাইশ উপজেলায়। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় ৭০টি, সাতকানিয়ায় ৫৩টি, রাউজানে ৪৭টি, ফটিকছড়িতে ৪৩টি, লোহাগাড়ায় ৪২টি, হাটহাজারী ও চন্দনাইশে ৩২টি করে, মিরসরাইয়ে ১৪টি, সন্দ্বীপে ১৬টি, সীতাকুণ্ডে আটটি, বোয়ালখালীতে দুটি, কর্ণফুলীতে আটটি, আনোয়ারায় দুটি ও বাঁশখালীতে চারটি ভাটায় ইট তৈরি হচ্ছে। 
অনেকের অভিযোগ, অবৈধভাবে কাঠ পোড়ানোসহ নানা অনিয়ম চালু রাখতে লাখ টাকা প্রশাসনকে চাঁদা দেওয়ার কারণে মালিকরা খাজনা দিতে অনীহা দেখান। 
এসব ইটভাটার মধ্যে জেলা প্রশাসন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) আদায় নির্ধারণ করে ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। ১৪ উপজেলার মধ্যে শুধু সীতাকুণ্ডের ইটভাটাগুলো শতভাগ খাজনা পরিশোধ করেছে। রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও বাঁশখালী উপজেলার কোনো ইটভাটা খাজনা পরিশোধ করেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদনের সময় বৃদ্ধি
  • গোল্ডেন হার্ভেস্টের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন
  • রিংসাইন টেক্সটাইলসের পর্ষদ সভা ২৭ ফেব্রুয়ারি
  • কোটি টাকার ব্যবসা, তবু খাজনা দেন না মালিকরা
  • সিএসইতে যোগ দিলেন জামাল ইউসুফ
  • শেয়ারের দাম বাড়ার কারণ জানে না ইয়াকিন পলিমার
  • পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
  • ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের নাম পরিবর্তনে ডিএসইর সম্মতি
  • ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ০.৪১ শতাংশ