চট্টগ্রামে তৃতীয় দিনের মতো ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত
Published: 25th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই আন্দোলন চলছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কাজে যোগ না দেওয়ায় রোগীদের সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসকদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পাঁচ দফা দাবিতে দেশের অন্য মেডিকেল কলেজগুলোর মতো গত রোববার সকাল আটটা থেকে টানা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। পাঁচ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে রোববার থেকে ক্লাস বর্জন কর্মসূচিও চলছে চমেকের শিক্ষার্থীদের।
চমেকের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব হোসেন বলেন, তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। আজ দুপুরে এ–বিষয়ক একটি রিটের আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই আদেশের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় ব্যাঘাত ঘটেছে। সাধারণত ওয়ার্ডগুলোয় স্থায়ী চিকিৎসকদের পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। রোগীর কাছাকাছি থাকেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রোগীরা এখন ডাকাডাকি করেও সহজে চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসকদ র
এছাড়াও পড়ুন:
খুমেক হাসপাতালে পাঁচ দফা দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে এই কর্মবিরতি চলছে। এতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) সভাপতি ডা. আরাফাত হোসেন বলেন, “শেখ হাসিনা সরকার ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যখাতের বিপ্লব সাধনের জন্য ৫ দফা দাবি পেশ করেছি। দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করব আমরা।”
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষে আহত নেতার মৃত্যু
হেলিকপ্টারে এসে পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ব্যতিক্রমী বিদায়
পাঁচ দফা দাবি হলো:
১. এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না। বিএমডিসি এর উক্ত আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন শুধুমাত্র এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ম্যাটসদেরকে বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছিল, এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট এর বাইরে ড্রাগ প্রেসকিবেল করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্ট এর বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে:
ক. দ্রুত ১০ হাজার জন ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে।
খ. প্রতিবছর ৪/৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
৪. সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ সমূহ বন্ধ করে দিতে হবে। ইতোমধ্যে এসএসসি পাশ করা (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, এই ৫ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছে। তারা দাবি পূরণের কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতায় সবাই ক্ষুব্ধ। ইন্টান চিকিৎসকরা মনে করে, তারা আমাদের দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের অন্যান্য সকল মেডিকেল কলেজের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জাতীয় একটি ইস্যুতে কর্মবিরতি পালন করছে। তাদের এই দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে। কর্মবিরতিতে যাতে রোগীদের কোনো ধরণের ক্ষতি না হয় এবং প্রত্যেক রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত হয়, সে জন্য আমরা মিড লেভেলের চিকিৎসক যেমন সহকারী রেজিস্ট্রার, অনরারি মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসারকে আরো একটিভ হয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ