পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) পরিচালনা পর্ষদ লেজার জেট প্রিন্টার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এ কাজের জন্য কোম্পানিটি ২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগ নিজস্ব ফান্ড ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে করবে বিএটিবিসি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়

শেয়ারের দাম বাড়ার কারণ জানে না ইয়াকিন পলিমার

এর আগে, সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।

তথ্য মতে, কোম্পানিটি ঢাকা এবং সাভার কারখানায় ৩৬ এসএমডি প্যাকিং লাইনে লেজার জেট প্রিন্টার স্থাপন করবে। যার জন্য আনুমানিক ব্যায় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। যেখানে প্রিটারের দাম ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ এবং সেটা স্থাপনের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটির আভ্যন্তরীণ উৎস এবং ক্যাশ-ফ্লো ভিত্তিক ব্যাংক অর্থায়ন হতে এ ব্যয় বহন করা হবে।

ঢাকা/এনটি/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বিচারে ধীরগতি, হতাশা কাটে না ভুক্তভোগীদের

রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বিচার শেষ হয়নি এখনও। এ ঘটনার তিনটি মামলার একটি উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে আটকে আছে। সাক্ষী না আসার কারণে অন্য দুটির বিচার চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের উদাসীনতার অভিযোগও উঠছে।

এদিকে মামলার প্রধান আসামি সোহেল রানা ছাড়া অন্য সবাই জামিনে মুক্ত। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পোশাকশিল্পের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজেডির বিচার নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। হাজারো ভুক্তভোগী শ্রমিক ও হতাহতের পরিবারে দেখা দিয়েছে হতাশা।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভারে আট তলাবিশিষ্ট রানা প্লাজা ধসে পড়লে ১ হাজার ১৩৬ পোশাক শ্রমিক নিহত হন। পঙ্গুত্ববরণ করেন ১ হাজার ১৬৯ জন। জীবিত উদ্ধার করা হয় প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিককে। ঘটনার পরের দিন অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ২১ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। এ ছাড়া ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে আরেকটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। দুর্নীতি দমন কমিশন ভবন নির্মাণ-সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে মামলা করে। হত্যা মামলার ৩৯ আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন কেবল রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা। অন্যদের মধ্যে সাতজন পলাতক এবং ৩১ জন জামিনে আছেন। 

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিনুল হক আমিন বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের উদাসীনতার কারণে ভয়াবহ এই ট্র্যাজেডির বিচার আজও শেষ হয়নি। বিচার বিভাগেরও দায় রয়েছে। এখন অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব।’ 

দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণ করেছেন সাভারের শিউলি খানম। এক যুগেও বিচার না হওয়ায় তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার ডান পাশ অবশ হয়ে গেছে। ভারতে গিয়ে তিনবার চিকিৎসা নিয়েছি, চার মাস পর আবার যেতে হবে।’ 

প্রায় সাত বছর আগে শিউলির স্বামী মারা গেছেন। এখন তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং সুচিকিৎসা প্রত্যাশা করেন তিনি।

হত্যা মামলার পরিস্থিতি

হত্যা মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ভবন মালিক, গার্মেন্ট মালিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্তরের ৪১ জনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বর্তমানে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। ৫৯৪ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৯৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। 

১৫ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল, কিন্তু সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আগামী ১৯ মে।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল কালাম খান সমকালকে বলেন, ‘মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সিটি করপোরেশন কর্মকর্তাসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এখনও নেওয়া হয়নি। বিচার শেষ করতে হলে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।’

তিনি জানান, সাক্ষীরা হাজির না হলে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন জানানো হচ্ছে। এতে সাক্ষী অনুপস্থিতির সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে।

ইমারত আইনে মামলায় স্থগিতাদেশ

ভবন নির্মাণে ত্রুটি ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে করা মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জুন ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। তবে চার্জ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এই স্থগিতাদেশ এখনও প্রত্যাহার না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ইশতিয়াক হোসেন বলেন, ‘উচ্চ আদালত ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি প্রত্যাহারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শিগগির অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে হাইকোর্টে আবেদন করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চেষ্টা করা হবে।’

ভবন নির্মাণে দুর্নীতির মামলায়ও ধীরগতি

রানা প্লাজা ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ জিয়াউর রহমানের আদালতে। ২০১৭ সালের ২১ মে সোহেল রানাসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র ১৪ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন (জাহাঙ্গীর) সমকালকে বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল, কিন্তু সাক্ষী উপস্থিত হননি। আগামী ১২ মে পরবর্তী শুনানি হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ