ব্রিটিশ–আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি তাদের কারখানায় নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছে, গতকাল কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, বিএটির ঢাকা ও সাভার কারখানায় ২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে লেজার জেট প্রিন্টার স্থাপন করা হবে। এই দুই কোম্পানির ৩৬টি এসএমডি প্যাকিং লাইনে এসব প্রিন্টার স্থাপন করা হবে। আরও বলা হয়েছে, প্রিন্টারের দাম পড়বে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে প্রিন্টার স্থাপনে ব্যয় হবে ১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

কোম্পানির এই ঘোষণা থেকে বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিএটি নিজেদের কারখানায় উৎপাদনপ্রক্রিয়া আরও দক্ষ করতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তারা বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে চায়। নতুন লেজার প্রিন্টার স্থাপন করা হলে বিএটির উৎপাদিত সিগারেটের প্যাকেটের মান আরও উন্নত হবে। একই সঙ্গে তা কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ব্রিটিশ–আমেরিকান টোব্যাকো বা বিএটি বাংলাদেশ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি ওই সময়ের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ৩০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। এর আগে গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটি আরও ১৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

বড় অঙ্কের লভ্যাংশ দিলেও গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা কিছুটা কমেছে। সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩২ টাকা ৪২ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩৩ টাকা ১১ পয়সা ছিল।

এর আগে বিএটি ২০২৩ সালে ১০০ শতাংশ, ২০২২ সালে ২০০ শতাংশ, ২০২১ সালে ২৭৫ শতাংশ, ২০২০ সালে ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৫১৮ টাকা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ২৫৯ টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ: পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াই পাঠানো হচ্ছে সম্মুখসারিতে, প্রাণ হারাচ্ছেন হাজারো মানুষ

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গতকাল সোমবার তিন বছর পূর্ণ হয়ে চার বছরে পড়ছে। এই যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৯৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিবিসির তথ্য বিশ্লেষণে এই তথ্য উঠে এসেছে।

এই পরিসংখ্যানে দনবাসে স্বঘোষিত দুটি প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিহত মানুষের সংখ্যা ধরা হয়নি। এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে মারা গেছেন আরও ২১ থেকে সাড়ে ২৩ হাজার যোদ্ধা।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিবিসি রাশিয়া, স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী মিডিয়াজোনা এবং স্বেচ্ছাসেবকেরা মৃত্যুর খবর রাখছিলেন। তাঁদের তালিকায় কেবল রাশিয়ার সরকারি প্রতিবেদন, সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, নতুন স্মৃতিসৌধ এবং সমাধির তথ্য যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হওয়া নিহত ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুনইউক্রেন যুদ্ধের ৩ বছর: ‘ট্রাম্প একজন অপ্রত্যাশিত বিজয়ী’২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫নিয়োগ ও ছুড়ে ফেলা

ড্যানিল দুদনিকভ (২১) দোনেৎস্ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে। সাঁতার ছিল তাঁর শখ।

রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় হামলার প্রথম দিন ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি স্বঘোষিত দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের (ডিপিআর) কর্তৃপক্ষ ড্যানিলকে জোর করে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়। তাঁকে খারকিভ অঞ্চলে পাঠানো হয়।

নিয়োগের ঠিক এক মাসের মাথায় ২৫ মার্চ ড্যানিল লড়াই চলাকালে নিখোঁজ হন। তাঁর ইউনিটে ১৮ জন সেনাসদস্য ছিলেন, তাঁদের কেউ ফিরে আসেননি। এই লড়াইয়ে ১৩ জন নিহত হন এবং পাঁচজন বন্দী হন। চার মাস পরে এক বন্দিবিনিময়ের মাধ্যমে জীবিত সেনারা ফেরত আসেন। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ড্যানিলও ছিলেন বলে তাঁরা নিশ্চিত করেন।

স্বঘোষিত দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের (এলপিআর) হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যে কী ঘটেছে, ড্যানিলের গল্প থেকে সেটার একটি প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়। ইউক্রেনের পূর্ব দিকের প্রধানত রুশ ভাষাভাষী কিছু অঞ্চল নিয়ে মস্কোর সহায়তাপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৪ সালে এই দুই প্রজাতন্ত্র গঠন করেন।

রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতা। ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়ায়, ১০ অক্টোবর, ২০২২

সম্পর্কিত নিবন্ধ