সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করল প্রশাসন
Published: 25th, February 2025 GMT
মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রিসোর্ট, কটেজ, রেস্তোরাঁর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে পর্যটকদের সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠান মো. সাইদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
সাজেকে আগুনে পুড়ছে রিসোর্ট
সাভারে কারখানার গুদামে আগুন, এক ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাঙাামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘঠিত হওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হলো।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌনে ১টার দিকে ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকে সাজেক ভ্যালিতে ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে প্রায় ৯০-৯৫টির বেশি রিসোর্ট-কটেজ, দোকান ও বসতঘর পুড়ে গেছে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুনে নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা/শংকর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সৈকতে উৎসবে মাতল ২১ জাতিগোষ্ঠীর মানুষ
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গত দুই দিন ছিল অন্যরকম আমেজ। বসন্তের মৃদু হাওয়ার দোলায় এমনিতেই মন উতলা হয়, এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার সেই অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দেয় ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’। চাকমা, মারমা, ম্রো, বাঙালিসহ ২১টি জাতিগোষ্ঠী এই উৎসবে অংশ নেয়। সেখানে একুশের গান এবং দেশের গান থেকে শুরু করে ‘মারমা পাখা নৃত্য’, ‘বম জীবনধারা নৃত্য’সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চে শুক্র ও শনিবার ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ হয়। এ উৎসবকে ঘিরে পর্যটকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২১টি জাতিগোষ্ঠীর পরিবেশিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’-এর মূল লক্ষ্য। উৎসবে অংশ নেয় চাকমা, মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, মণিপুরি, সাঁওতাল, মাহালী, ওরাওঁ, মালপাহাড়িয়া, গারো, হাজং, কোচ, রাখাইন সম্প্রদায়ের শিল্পীরা। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের বাঙালি শিল্পীরাও উৎসবে যোগ দেন।
শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন ভাষায় ‘একুশের গান’ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’ গানটি। এরপর ‘মারমা পাখা নৃত্য’, ‘বম জীবনধারা নৃত্য’ এবং ‘সংগীত’ পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া ‘খুমি মাছ ধরা নৃত্য’, ‘ময়ূর নৃত্য’, ‘চাকমা গান’, ‘তঞ্চঙ্গা নৃত্য’, ‘ম্রো জুম নৃত্য’, ‘ত্রিপুরা গান’ ‘চাকমা প্রদীপ নৃত্য’, ‘লুসাই বাঁশ নৃত্য’, ‘সংগীত ও সম্প্রীতি নৃত্য পরিবেশিত হয়। ‘দেশাত্মবোধক গান’ (মাহালী সাঁওতালি পাহাড়িয়া) পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমতলের শিল্পীদের পরিবেশনা শুরু হয়। তার পর ‘দাসাই নৃত্য’ (সাঁওতালি), ‘পাহাড়িয়া নৃত্য’ এবং ‘কমেডি’ পরিবেশন করা হয়।
এ ছাড়া শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘ওরাওঁ নৃত্য’ ও ‘মাহালী নৃত্য’। সবশেষে ‘মণিপুরি মৃদঙ্গ নৃত্য’ ও ‘মণিপুরি রাস নৃত্য’। একইভাবে বান্দরবান জেলার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীদের নৃত্য ও গানের মধ্য দিয়ে শনিবার রাতে শেষ হয় দুই দিনের ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’। শুক্রবার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
তিনি বলেন, শিল্পকলা একাডেমি জনগণের মাঝে জনবান্ধব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করতে চায়। সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার ফাহমিদা আকতার বলেন, কক্সবাজার সৈকতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এ রকম একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখে এবারের ভ্রমণ সার্থক হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, কক্সবাজার সৈকতে ২১টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ পর্যটকদের ভিন্নভাবে বিনোদন দিয়েছে।