২৪ বছর আগে এই দিনে মহাপ্রয়াণ ঘটেছিল সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের। ব্র্যাডম্যান-স্মরণে এ লেখা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, তাঁর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে।

প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান মাত্রই নাকি মনে করতে পারেন, জন এফ কেনেডি গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরটা তিনি কীভাবে পেয়েছিলেন। ক্রিকেটে সেই ‘জেএফকে মোমেন্ট’ স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের মৃত্যু।

স্টিভ ওয়াহর যেমন পরিষ্কার মনে আছে, খবরটা পেয়েছিলেন রাত ২টা ১৫ মিনিটে। সিডনি থেকে স্ত্রী লিনেটের ফোনে।

অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে দুঃসংবাদটা জানিয়েছিল পার্থের এক রেডিও স্টেশন। যে রেডিওর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন গিলক্রিস্ট। ধাক্কাটা সামলে ওঠার আগেই তাই প্রতিক্রিয়া জানাতে হয়েছিল শোকবিহ্বল অস্ট্রেলিয়ান সহ-অধিনায়ককে। গিলক্রিস্টের পাশের রুমেই ছিলেন শেন ওয়ার্ন। ফোনে তাঁকে ঘুম ভাঙিয়ে খবরটা দিয়েছিলেন একই হোটেলে থাকা এক টেলিভিশন রিপোর্টার।

অস্ট্রেলিয়া দলের মিডিয়া ম্যানেজার ব্রায়ান মুর্গাট্রয়েড খবরটা পান মেলবোর্ন থেকে ফোনে। ফোনটা করেছিলেন বোর্ডেরই কেউ একজন। মুর্গাট্রয়েড সঙ্গে সঙ্গে কাগজ-কলম নিয়ে টেবিলে বসে যান। ‘প্লিজ, বি অ্যাওয়্যার দ্যাট স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান হ্যাজ পাস্‌ড অ্যাওয়ে’—এ কথাটাই অনেকগুলো কাগজে লিখে তা ঢুকিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়া দলের প্রত্যেক সদস্যের দরজার নিচ দিয়ে। পরদিন সকালে অবশ্য জানতে পারেন, এটা না করলেও হতো। পরিবার অথবা মিডিয়ার মাধ্যমে সবাই যে তা আগেই জেনে গিয়েছিলেন। অনেকেই টেলিভিশন চালিয়ে সিএনএনে বিস্তারিতও। হ্যাঁ, স্যার ডনের মৃত্যু আমেরিকান চ্যানেল সিএনএনের জন্যও বড় খবরই ছিল।

শেষ ইনিংসে ৪ রান করলেই ব্র্যাডম্যানের গড় হতো ১০০—সেভাবে ক্রিকেট অনুসরণ করেন না, এমন মানুষও তা জানেন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিপ্লবের স্মৃতিজড়িত ‘পাইকতু পর্বত’ এখন গ্লোবাল জিওপার্ক

উত্তর কোরিয়ার পাইকতু পর্বতকে গ্লোবাল জিওপার্ক হিসেবে মনোনীত করেছে ইউনেস্কো। পর্বতটিকে পবিত্র পর্বত বলা হয়। এই পর্বতের সামরিক চেকপয়েন্ট ও এবড়োখেবড়ো ময়লা রাস্তা পেরিয়ে উঁচুতে উঠে গেলে চোখে পড়ে আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট একটি গভীর হ্রদ। 

পর্বতটির অবস্থান উত্তর কোরিয়া ও চীনের সীমান্তে। এই পর্বতেই কোরিয়ান উপদ্বীপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, প্রথমবারের মতো পাইকতু পর্বত গ্লোবাল জিওপার্কের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পর্বতটির প্রকৃতিকে চিত্তাকর্ষক ও এলাকাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যভুক্ত হিসেবে মনোনীত করে। তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আগ্নেয়গিরি, হিমবাহের ক্ষয় এবং পাথুরে সমভূমি পাইকতুকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য দান করেছে।   

জিওপার্কের তাৎপর্য বুঝতে হলে আপনাকে পাইকতুর ‘চোন’ হ্রদের ধারে দাঁড়াতে হবে। লেকটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭ হাজার ২০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। হাজার বছরের বেশি আগে এক বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লেকটি জন্মলাভ করে। লেকের ধারে দাঁড়ালে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বাতাসের শির শির আমেজ। 

পর্বতটিকে বলা হয়, ‘কোরিয়ান বিপ্লবের আত্মা’। পর্বতটির মেঘে ঢাকা ঢাল নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে নানা গল্প। যদি আপনি কখনও নিজে পর্বতের চূড়ায় স্থির হন, হ্রদের দিকে তাকিয়ে থাকেন এবং হিম বাতাসে শ্বাস নেন, তাহলে বুঝতে পারবেন কেন পর্বতটি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার ‘আত্মা’ ধারণ করে।

কাহিনি প্রচলিত আছে, পর্বতটি ছিল প্রথম কোরিয়ান রাজ্যের পৌরাণিক প্রতিষ্ঠাতা ডাঙ্গুনের জন্মস্থান। উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং (কিম জং উনের দাদা) ১৯৪০-এর দশকে স্বাধীনতার জন্য জাপানি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় পাহাড়টিকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। সুংকে ‘পাইকতুর কিংবদন্তি নায়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কিম রাজবংশ তাদের পারিবারিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শনের জন্য এই পর্বতটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে। এই পর্বতের নামে রকেট, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশটির নানা প্রতিষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছে। 

ইউনেস্কোর মতে, বর্তমানে ৪৯টি দেশে ২০০টিরও বেশি জিওপার্ক রয়েছে। জিওপার্কের স্থানগুলোর কিছু অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে। জিওপার্কের জন্য বিশেষ ভৌগোলিক অঞ্চলের স্বীকৃতি বা আঞ্চলিক ভূতাত্ত্বিক তাৎপর্যপূর্ণ স্থানকে অগ্রাধিকারভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির কারণে পাইকতু পর্বতকে একটি ভূপর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে পিয়ংইয়ং।   

পাইকতুর আশপাশের জীবনযাত্রা গ্রামীণ ও বিচ্ছিন্ন। ২০১৭ সালে যখন সিএনএনের প্রতিবেদক পাইকতু পর্বত পরিদর্শনে যান, তখন ক্যামেরা দেখে শিশুরা ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। হয়তো তারা কোনো বিদেশিকে কখনও দেখেনি। কাইকতুর নিকটতম শহর সামজিওন। এখানে সুংয়ের স্মৃতিস্তম্ভগুলো শোভা পাচ্ছে। ভবনগুলোতে জাপানিদের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন এখনও লক্ষ্য করা যায়। 

ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর পাইকতু এখন আর সাধারণ কোনো স্থান নয়। এটি এখন থেকে বিশ্বব্যাপী ‘বিশেষ ভূতাত্ত্বিক মর্যাদা’ লাভ করল। সিএনএন।   


 
 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাজিল নয় পর্তুগালের কোচ হচ্ছেন মরিনহো 
  • ৯ বছরের সংসার কি সত্যিই ভাঙছে
  • বিপ্লবের স্মৃতিজড়িত ‘পাইকতু পর্বত’ এখন গ্লোবাল জিওপার্ক