পাঁচ দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ চত্বর থেকে মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মেডিকেলে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের চিকিৎসক পদবি ব্যবহার নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করা হলেও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করে, কিন্তু এসএসসি পাস করে ম্যাটসের শিক্ষার্থীরা চিকিৎসক সেজে বসে রয়েছেন। এসব নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে।

আরো পড়ুন:

রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বসন্তবরণ ও পিঠা উৎসব

শিক্ষার্থীদের অবরোধ প্রত্যাহার
সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ট্রেন চলাচল শুরু

তারা আরো জানান, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে একটি যৌক্তিক মৌলিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া চিকিৎসকের স্বীকৃতি দেওয়া বন্ধসহ ৫ দফা দাবি স্বাস্থ্য খাতে একটি বিপ্লব ঘটাতে পারে। দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা ও অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনি রোগী ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। তাই সারা বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলোর সঙ্গে একমত হয়ে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। 
মঙ্গলবার আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো-
১.

এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্যা কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।

৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর ৪-৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।

৪. সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ড ক ল কল জ চ ক ৎসক ব এমড স ব যবস থ ব ড এস ম য টস

এছাড়াও পড়ুন:

কালীগঞ্জের সূর্যমুখী দেখতে দর্শনার্থীর ভিড়, বাগানে প্রবেশ ফি ৩০ টাকা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সূর্যমুখী ফুলের একটি বাগান দেখতে দর্শনার্থীদের গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা। শুরুতে প্রবেশ মূল্য ছিল ২০ টাকা। লোক সমাগম বেশি ও বাগানে ক্ষতির মাত্রা বেড়ে গেলে পরে প্রবেশ মূল্য বাড়ানো হয়। 

কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ গ্রামে একটি সূর্যমুখী ফুলের বাগানে গেলে দেখা যায়, বাগানের পাশেই বড় করে একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে “অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষেধ, প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা’’। 

প্রবেশমুখের অপর একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘‘ফুল ছিঁড়লে জরিমানা ২০০ টাকা, গাছ ভাঙলে জরিমানা ২০০ টাকা’’।

সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থী

সাওরাইদ গ্রামে সূর্যমুখী অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রচলিত দ্বি-ফসলী শস্য বিন্যাসকে তিন শস্য বিন্যাসে উন্নয়নের লক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগ একটি প্রকল্প হাতে নেয়। রবি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ওই গ্রামের কৃষক যতীন্ত্র, হিরোন, সাইফুল, জসিম, রশিদ, নয়ন, রুহি দাস, নিষ কাঞ্চন, নারায়ণ ও লিটন বিশ্বাস নামের ১২ জন সহযোগী কৃষককে নিয়ে ৬ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়। কৃষকরা বিনামূল্যে বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার সবরাহ করা হয়।   

কৃষক লিটন বিশ্বাসের ভাতিজা বিপুল বিশ্বাস বাগানে প্রবেশের পথ আটকে জনপ্রতি ৩০ টাকা প্রবেশমূল্য নিয়ে ঢুকতে দিচ্ছেন দর্শনার্থীদের। 

বাগান রক্ষক বিপুল বিশ্বাস জানান, প্রতিদিন এখানে শতাধিক দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে। তবে সৌন্দর্য উপভোগে প্রবেশ মূল্য টাকা নির্ধারিত থাকলেও সময়ের ব্যাপারে কোন নির্ধারিত সময় দেওয়া নেই। দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত ও আপ্লূত হচ্ছেন।

সূর্যমুখী বাগানে দর্শনার্থী

তিনি বলেন, “এখন বেশিরভাগ গাছে ফুল ফুটেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনে বিপুলসংখ্যক সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ বিগত ১৫ দিন ধরে ভিড় জমাচ্ছেন এই বাগানটিতে। লোকজনকে সামাল দিতে প্রতিদিন ৪ থেকে ৭ জন লোক এখানে নিয়মিত সময় দিচ্ছেন।”

কথা হয় বাগানে ঘুরতে কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। এ সময় গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল কয়ের এলাকার রাজন ঘোষ বলেন, “যদিও টিকেটের মাধ্যমে সূর্যমুখী বাগানে আসতে হয়। তবুও এখানে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আগে ২০ টাকা টিকেট থাকলেও এখন দর্শনার্থীদের চাপ বেশি থাকায় এখন ১০ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। তবু ঘোরার মত একটা জায়গা তৈরি হয়েছে এখানে।”

কালীগঞ্জ পৌরসভার ভাদার্ত্তী এলাকার শহিদুল সরকার জাকির বলেন, “রাস্তা দিয়ে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেল করে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ চোখে পড়লো সূর্যমুখীর বিশাল বাগান। অনেক মানুষের কোলাহল। তাই মোটরসাইকেল রাস্তায় পার্কিং করে দুই বন্ধু ৩০ টাকা করে টিকেট কেটে বাগানে ঘুরলাম।”

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, “ফসলের আশায় সূর্যমুখীর বাগান করলে সেখানে দর্শনার্থীদের প্রবেশ উন্মুক্ত করা উচিত নয়। এতে দর্শনার্থীর পদচারণায় বাগানের মাটি শক্ত হয়। আর তাতে গাছ ঠিক মত নিউটেশন নিতে পারেনা এবং ফুলটাও বড় হয় না। ফুলের বীজগুলো বড় হয় না এবং তেলটাও ঠিকভাবে নিতে পারে না।”

ঢাকা/রফিক/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ