সারা দিন আলু তোলা হয়েছে। সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে রান্না। আলু ও মাছের ঘন্ট। যে শ্রমিকেরা সারা দিন আলু তুলেছেন, তাঁরাই বাজার করেছেন, তাঁরাই রান্না করছেন। তাঁরাই অনুষ্ঠানের অতিথি। মৌসুমের প্রথম আলু তোলা উপলক্ষে রাজশাহীর তানোর উপজেলার চোরখৈর গ্রামে নবান্ন উৎসবের মতো করে রোববার রাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন একজন চাষি।

প্রথম দিন এই কৃষকের জমি থেকে শ্রমিকেরা ৪০০ বস্তা আলু তুলেছেন। সেই আলু বস্তায় ভরে ট্রাকে বোঝাই করা হয়েছে। সারা দিনের এই পরিশ্রম শেষে অনুষ্ঠান চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

এই চাষির নাম রানা চৌধুরী। তিনি এবার ২৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। এর মধ্যে ১০ বিঘা পৈতৃক জমি এবং বাকি ১৪ বিঘা জমি ইজারা নেওয়া। প্রতি বিঘা জমির ইজারামূল্য ২০ হাজার টাকা। তাঁর জমিতে আলুর মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজ করেন ৫০ জন শ্রমিক। তাঁদের আনন্দ দেওয়ার জন্য তিনি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন।

বিকেলে রানা চৌধুরীর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, লাঙল দিয়ে আলুখেতে চাষ দেওয়া হয়েছে। সারি সারি আলু দেখতে অনেকটা ডিমের মতো লাগছে। আলুর মাঠে উৎসব উৎসব ভাব। সেই শ্রমিকেরাই রাতে আবার উৎসবের আয়োজন করেছেন। গ্রামের শেষ মাথায় যেখানে তাঁর খামারের শুরু হয়েছে, সেখানেই একটি বাড়িতে রানা চৌধুরী এ আয়োজন করেছেন।

সন্ধ্যার পর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ আলু আর মাছের ঘন্ট রান্না করছেন, কেউ ভাত রান্নায় ব্যস্ত। আবার কেউ হাঁসের মাংস রান্না করছেন। শ্রমিকদের খেতে বসার জন্য পেতে রাখা হয়েছে খালি আলুর বস্তা। ৭৫ কেজি আলু ধরে, এমন বস্তা কৃষক মিল থেকে বায়না দিয়ে তৈরি করে নিয়েছেন। খালি বস্তায় বসে খাওয়ার জন্য কলাপাতা ও কিছু ওয়ান টাইম প্লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকে কলাপাতায় খাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ওয়ান টাইম প্লেটে খাচ্ছেন।

এ আয়োজনের জন্য বাজার করেছেন হাফিজুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক। তিনি বলেন, ‘আলুর ঘন্ট পাকানির লাইগি আমি নিজে কলমা হাট থাইকি ছয় কেজি কাতলা মাছ কিনে আনিছি।’

ঘন্ট রান্নার জন্য সুনাম আছে শ্রমিক এমদাদুল হকের। রাতে দেখা গেল, তাঁর নেতৃত্বেই এই ঘন্ট রান্নার কাজ চলছে। তিনি বলেন, সাত কেজি আলু আর ছয় কেজি মাছ একসঙ্গে করে রান্না করা হচ্ছে। মাছ আর আলু প্রায় সমান সমান করা হয়েছে। এতে স্বাদ ভালো হয়।

অনুষ্ঠান আলু নিয়ে হলেও তানোরের ওই এলাকায় হাঁসের মাংস দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করার চল আছে। রানা চৌধুরী তাই শ্রমিকদের জন্য হাঁসের মাংস রান্না করার ব্যবস্থা করেন। সাইফুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক হাঁসের মাংস রান্না করেন।

সারা দিন আলু তোলার কাজ যারা করেন, তাঁরাই সন্ধ্যার পর থেকে রান্না–খাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র জন য কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যদি বাঁধা দেওয়া হয়, তাহলে শিল্পীদের বেঁচে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে: নুসরাত ফারিয়া

গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন জায়গায় সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নিতে গিয়ে বাঁধার মুখে পড়ছেন তারকাশিল্পীরা। আবার কোনো কোনো জায়গায় কনসার্টেও ‘মব’ সৃষ্টি করে সবকিছু পন্ড করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। এবার এসব বিষয়ে মুখ খুললেন তারকা অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) আয়োজনে গতকাল  ২২ ফেব্রুয়ারি পর্দা উঠেছে ১১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক মোবাইল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের। দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধনী দিনে অতিথি ছিলেন নুসরাত ফারিয়া। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অভিনেত্রী।

সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে খুবই কষ্টকর একটা ব্যাপার। আমার কাছে মনে হয় যে এ রকমটা হওয়া ঠিক না। কারণ আমাদের দেশের সংস্কৃতি আমাদেরই বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এই পুরো জিনিসটাকে যারা দেখছেন তারা যদি একটু ঠিকঠাকভাবে জিনিসটাকে মেইনটেইন করেন, আমার মনে হয় খুব শিগগিরই এটাও কমে আসবে। কারণ এই জিনিসটা বন্ধ হয়ে গেলে আর্টিস্টরা কী করে খাবে!’

যোগ করে তিনি বলেন, ‘সিনেমা বাদেও আমাদের অনেক কাজ আছে। আমরা চাই দর্শকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে; এমন জায়গায় যেতে, যেখানে দর্শক-ফ্যানরা আমাদের কাছে আসতে পারে। সেখানে যদি আমাদের বাধা দেওয়া হয়, আর্টিস্টদের বেঁচে থাকাটা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে।’ 

প্রসঙ্গত, স্টার সিনেপ্লেক্সের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এবারের মোবাইল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ২৮টি দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। আজ শেষ হবে এই এই চলচ্চিত্র উৎসব।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্যাংস্টারের ছেলে আর স্ট্রিপ ড্যান্সারের প্রেমের গল্প
  • ঈশ্বরদী সুহৃদের আনন্দদিন
  • নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ,
  • ‘বাংলাদেশি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে আমি গর্ববোধ করি’
  • ‘তিনশর বেশি রান করার ক্ষমতা আছে শান্তদের’
  • যে ঋণ শোধ করা যায় না
  • সাংগঠনিক আলোচনা, গান-গল্পে সুহৃদদের আনন্দময় দিন
  • শিল্পীদের বেঁচে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে: নুসরাত ফারিয়া
  • যদি বাঁধা দেওয়া হয়, তাহলে শিল্পীদের বেঁচে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে: নুসরাত ফারিয়া