নির্মাণাধীন বিমানঘাঁটিতে হামলা-গুলি, যুবক নিহত
Published: 25th, February 2025 GMT
কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, সংঘর্ষ ও গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশে সমিতিপাড়ায় এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় শিহাব কবির নাহিদ (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি সমিতিপাড়ার প্রবীণ শিক্ষক নাছির উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় বিমানবাহিনীর চার সদস্য আহত হন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমানবাহিনীর ‘রুলস অব এনগেজমেন্ট’ অনুযায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। স্থানীয় জনসাধারণের ওপর কোনো গুলি ছোড়া হয়নি। বিমানবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমিতিপাড়ার পাশের কুতুবদিয়াপাড়ার জাহেদ হোসেন নামের এক তরুণের সঙ্গে বিমানবাহিনীর একটি তল্লাশিচৌকিতে হেলমেট পরা নিয়ে কর্তব্যরত বিমানবাহিনীর সদস্যদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর জাহেদের আত্মীয়স্বজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিমানবাহিনীর নির্মাণাধীন ঘাঁটি ও সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। আধাঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলার একপর্যায়ে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এ সময় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন শিহাব কবির নাহিদ। আহত হন আরও তিনজন স্থানীয় বাসিন্দা। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিহাবকে মৃত ঘোষণা করেন। হেলমেট পরা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ানো জাহেদ হোসেন কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম শাখা বিএনপির সভাপতি ছাবের আহমেদের ছেলে।
শিহাবের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় কয়েকশ মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে বিমানবাহিনীর ঘাঁটির দিকে যেতে থাকে। তখন সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। সর্বশেষ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল আরোহী একজনকে বিমানবাহিনীর তল্লাশিচৌকিতে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সমিতিপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। এলাকার লোকজন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে।
স্থানীয় সমাজসেবক মোস্তফা সরওয়ার বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করলেও বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়াপাড়ার লোকজনের সঙ্গে বিমানবাহিনীর কোনো বিরোধ নেই। এলাকায় অবস্থানের কারণে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মোটরসাইকেল চলাচলে হেলমেট নিশ্চিত করা হচ্ছে। এর পরও ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে যেভাবে বিমানঘাঁটিতে হামলা করে একজন সিনিয়র কর্মকর্তাসহ চারজন বিমানবাহিনীর সদস্যকে যেভাবে আহত করেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। এ ছাড়া হামলাকারীরা বাহিনীর সদস্যদের থাকার জন্য বানানো স্থাপনায়ও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।
জানা যায়, কক্সবাজার বিমানবন্দরে সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়াসহ ২১টি গ্রাম-মহল্লা নিয়ে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড। ৭০ হাজার বাসিন্দার ৯০ শতাংশই জলবায়ু উদ্বাস্তু। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি হারিয়ে কুতুবদিয়া, পেকুয়া, মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি খাসজমিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেন। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য ওই এলাকার ৬৮২ একর জমি সিভিল এভিয়েশনকে দিয়ে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এর পাশে কয়েক বছর ধরে কিছু এলাকায় বিমানঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব জায়গা থেকে উচ্ছেদ হওয়া লোকজনের জন্য তিন কিলোমিটার দূরে খুরুশকুলে ১৩৭টি পাঁচতলা ভবনের বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। দুই বছর আগে ২০টি ভবনে ৬০০ পরিবারকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখন আরও ৮৫টি ভবন প্রস্তুত করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সঠিক লোকজনকে ফ্ল্যাট বরাদ্দে না দেওয়া এবং যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের অধিকাংশ আগের জায়গায় চলে এসেছে।
বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা প্রসঙ্গে ১ নম্বর ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, উচ্ছেদের সঙ্গে হামলার সম্পৃক্ততা নেই। হামলার ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় কুতুবদিয়া পাড়ার মোটরসাইকেল আরোহী এক তরুণের হেলমেট না পরার ঘটনা নিয়ে। গুলিতে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি।
নিহত শিহাবের বাবা নাছির উদ্দিন কক্সবাজার পিটিআইয়ের সাবেক সুপার। মা আমেনা খাতুন কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে কয়েক বছর আগে অবসর গ্রহণ করেন। থাকেন সমিতিপাড়ায়। গুলিতে ছেলের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে আমেনা খাতুন বলেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় শিহাব ঘরের দরজার সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ একটি গুলি মাথায় এসে লাগে। গুলিতে মাথার খুলি উপড়ে মগজ বেরিয়ে আসে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সাবোক্তগীন মাহমুদ বলেন, দুপুরে হাসপাতালে আনার কয়েক মিনিটের মধ্যে শিহাবের মৃত্যু হয়েছে। আঘাতে তাঁর মাথার পেছনের অংশ (খুলি) উড়ে গেছে। গুলিতে নাকি ইটপাটকেলের আঘাতে মাথায় জখম হয়েছে, তা এখন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
আইএসপিআর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কক্সবাজারে বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতিপাড়ার কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্ত সোমবার বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। বিয়াম স্কুলের পাশে বিমানবাহিনীর চেকপোস্ট থেকে একজন স্থানীয় ব্যক্তির মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় বিমানবাহিনীর প্রভোস্ট কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সমিতিপাড়ার দুই শতাধিক স্থানীয় লোকজন বিমানবাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিমানবাহিনীর চেকপোস্ট এলাকায় বিমানবাহিনীর সদস্য ও সমিতিপাড়ার কিছু দুষ্কৃতকারীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা বিমানবাহিনীর সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। তখন ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন। যার মধ্যে বিমানবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ও তিনজন বিমানসেনা রয়েছেন। শিহাব কবির নাহিদ নামে এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় জনগণের ইটপাটকেলের আঘাতে বিমানবাহিনীর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এ ছাড়াও স্থানীয় জনগণ ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, যা বেশি ছড়াতে পারেনি। এমন অবস্থায় একটি কুচক্রী মহল বিমানবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে বিমানবাহিনীর গুলিতে ওই যুবক নিহত হয়েছেন। এক্ষেত্রে গুলির খোসার ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, খোসাটি ফাঁকা গুলির (ব্ল্যাঙ্ক কার্টিজ) যা প্রাণঘাতী নয় এবং শুধু শব্দ তৈরি করে। যুবক নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে।
এ ছাড়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের নাম বিমানবাহিনী ঘাঁটি শেখ হাসিনা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, যা সত্য নয়। ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারি প্রজ্ঞাপনে ওই ঘাঁটির নাম পরিবর্তন করে বিমানবাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার রাখা হয়, যা বর্তমানেও বহাল রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য এল ক য় সরক র অবস থ র ঘটন কজন র ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএমডিএর আরো ২ প্রকৌশলী সাময়িক বরখাস্ত, ব্যাখ্যা তলব
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলামকে জোরপূর্বক দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনায় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর পর আরো দুই প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া, বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আছাদুজ্জামানের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে তাদের বরখাস্ত করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা ও সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ।
গত ২৩ মার্চের ওই ঘটনার দুইদিন পর অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় এই দুই প্রকৌশলীসহ আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদী, সহকারী মেকানিক মো. আপেল ও মেহেদী হাসান, গুদামরক্ষক মো. নুরুজ্জামান, মজিবুর রহমান, আব্দুল কাইয়ুম খান, ক্যাশিয়ার শফিকুল ইসলাম, গাড়িচালক মো. শাহাবুল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শমসের আলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম। মামলায় ৫০-৬০ জনকে নাম না জানা আসামি করা হয়েছে।
রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তারা আত্মগোপনে আছেন।
এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত সচিব আহমেদ ফয়সল ইমাম। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আছেন উপসচিব মো. মনিরুজ্জামান। বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরক ও মো. জাফরুল্লাহ, জেলা প্রশাসনের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার জন্য গত বৃহস্পতিবার বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আছাদুজ্জামানের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে তাকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জ রিজিয়নের দায়িত্বে ছিলেন, কিন্তু তিনি অনুমতি ছাড়া রাজশাহীতে চলে আসেন এবং অতিরিক্ত সচিবকে হেনস্তার ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইডি শফিকুল ইসলামকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। তবে, রিলিজ অর্ডার না পাওয়ায় তিনি দপ্তর ছাড়তে পারেননি। ২৩ মার্চ দুপুরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে তার দপ্তরে প্রবেশ করে তাকে জোরপূর্বক বের করে দেন। তখন একটি চিঠি প্রস্তুত করা হয়, যাতে লেখা ছিল- শফিকুল ইসলাম দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন এবং জাহাঙ্গীর আলম খান দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
শফিকুল ইসলাম মামলায় উল্লেখ করেছেন, তাকে এই চিঠিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়।
এই ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম কৃষি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন এবং ২৫ মার্চ রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। তার অভিযোগ, মন্ত্রণালয়ের রিলিজ স্লিপ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি বিএমডিএতে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার নির্দেশনা পেয়েছিলেন। প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন।
বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরক বলেন, “বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালকের পদটি প্রশাসন ক্যাডারের একজন অতিরিক্ত সচিবের জন্য সংরক্ষিত। শফিকুল ইসলাম বদলি হওয়ার পরও যদি তিনি দায়িত্বে থাকেন, সেটি মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে, একজন কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করা এবং চেয়ার দখল করা গুরুতর অপরাধ।”
তিনি আরো বলেন, “মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমরা আশা করছি।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ