জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে কেউ চীন সফরে যাচ্ছেন না
Published: 25th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে কেউ দেশটি সফরে যাচ্ছেন না। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক কমিটির কয়েকজন সদস্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চীন সফরে যাচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি স্পষ্টভাবে জানাতে চায় যে, তারা এ বিষয়ে অবগত নয় এবং কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে কমিটি কোনো আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পায়নি। একই সঙ্গে, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে কেউ এই প্রতিনিধি দলে অংশগ্রহণ করছেন না বা কমিটির প্রতিনিধিত্ব করছেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটির কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ছাড়া যদি কেউ কমিটির নাম ব্যবহার করে প্রতিনিধি দলে যোগ দেন বা কোনোভাবে কমিটির প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করেন, তবে তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং এর সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটির কোনো সম্পর্ক নেই।
সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কেউ যদি কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম ট র প
এছাড়াও পড়ুন:
মহানবী (সা.)–র রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্য
মহানবী (সা.)–এর আবির্ভাবের আগে আরবের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল নৈরাজ্যে ভরা। গোত্রভিত্তিক সমাজে ভেদাভেদই ছিল প্রধান। কলহ, যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি লেগেই থাকত। কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কেন্দ্র না থাকায় আরব সমাজ ছিল বিভক্ত। নৈরাজ্যপূর্ণ আরবে মহানবী (সা.) যে অবিস্মরণীয় রাজনৈতিক বিপ্লব সাধন করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিস্ময়কর।
মহানবী (সা.)–র রাজনৈতিক দায়িত্ব
আল্লাহ–তাআলা ঘোষণা করেছেন, তিনিই এ সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও দীনের হকসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব দীনের ওপর একে বিজয়ী করে তোলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সুরা আল ফাতহ, আয়াত: ২৮)। একই দায়িত্বের কথা তিনি সুরা তাওবা (আয়াত: ৩৩) এবং সুরা আস-সফ্ফেও (আয়াত: ৯) উল্লেখ করেছেন।
ইসলাম নামের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধানকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ছিল মহানবী (সা.)–এর দায়িত্ব, যেন তা মানবসমাজের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন হয়।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–এর হিজরত কেন মদিনায় হলো?১৫ আগস্ট ২০২৩মহানবী (সা.)–র রাজনীতির লক্ষ্য
ওপরের আয়াত থেকে বোঝা যায় মহানবী (সা.)–র রাজনীতি ছিল ইসলামের জন্য। ধর্মীয় চেতনাকে বদ্ধমূল করে আল্লাহ ভীরু চরিত্রবান মানুষ তৈরি করতে চেয়েছেন তিনি, যেন ধর্মীয় বিধান মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। তাহলেই সমাজের বর্বরতা ও নৈরাজ্য দূর করা সম্ভব। তাঁর রাজনীতির লক্ষ ছিল:
১. আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর নির্দেশিত আইন প্রতিষ্ঠা করা।
২. শিক্ষা, অর্থ, সমাজ, সংস্কৃতির সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান পরিপালনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
৩. মানুষে মানুষে বৈষম্য, অনাচার, অবিচার, অন্যায় দূর করে সাম্য, শৃঙ্খলা, ন্যায়বিচার ও সুষম শাসনের ব্যবস্থা করা।
৪. যোগ্য ও খোদাভীরু নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজ পরিচালনা করা।
৫. পরকালীন কল্যাণের পথকে সবার জন্য মসৃণ করে দেওয়া, যেন পার্থিব প্রবঞ্চনার গোলকধাঁধায় মানব জীবন বরবাদ হয়ে না যায়।
আরও পড়ুনবিয়ের পর খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পদ কী করেছিলেন১৭ আগস্ট ২০২৩মহানবী (সা.)–র রাজনীতির বৈশিষ্ট্য
মহানবী (সা.)-র রাজনীতির তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল:
১. চারিত্রিক ও নৈতিক শক্তি: সকল নবীর রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁদের চারিত্রিক ও নৈতিক শক্তি। তাঁদের নিষ্কলঙ্ক দীর্ঘজীবন যে পরার্থপর পরিচয় বহন করে, তা অন্য কোথাও মেলা ভার। মহানবী (সা.)–এর রাজনীতিতে এই বৈশিষ্ট্য ছিল সমুজ্জ্বল। ফলে তাঁর নিখাঁদ চরিত্রের প্রভাবকে শুধু রাজনৈতিক কার্যকলাপের দোহাই দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না।
২। উপায়-উপকরণের পবিত্রতা: তিনি কোনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার মতো উপায় অবলম্বন করে রাজনীতি করেননি। প্রতিপক্ষের সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত আক্রোশ পোষণ করতেন না। চরম শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণ করতেন। তারা ইসলামের আদর্শ মেনে নিলে তাদের আগের সব দোষ মাফ করে দিতেন।
৩. উদ্দেশ্যের নিষ্কলুষতা: ইসলামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা তাঁর ছিল কাম্য, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা নয়। না হলে তিনি কুরাইশের প্রস্তাব মেনে নেতৃত্ব গ্রহণ করে নিতে পারতেন।
এই তিনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য স্বার্থান্বেষী ও দুনিয়াদারদের রাজনীতি থেকে মহানবী (সা.)-কে পৃথক মর্যাদা দিয়েছে।
আরও পড়ুনহজরত শোয়াইব (আ.)–এর আবির্ভাব২০ আগস্ট ২০২৩রাজনৈতিক জীবনের সূচনা
দীনে হককে আর সব দীনের ওপর বিজয়ী করা সংক্রান্ত যে দায়িত্বের কথা আল্লাহ–তাআলা কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বলেছেন, তার সবগুলো অবতীর্ণ হয়েছে মদিনায়। মদিনার সময়টি ছিল আল্লাহর বিধান প্রয়োগের সময়। মক্কার সময়টি মনন-মানসের প্রস্তুতিকাল।
৪০ বছর বয়সে নবুয়তপ্রাপ্তির মক্কায় যে সময়টুকু মহানবী (সা.) কাটিয়েছেন, তখন তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ। জাগতিক উপায়-উপকরণ বলতেও তেমন কিছু তাঁর হাতে ছিল না। তাই তিনি প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তখন। হিজরতের পর ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুনসুরা কাফে আল্লাহ বলেছেন মানুষ সৃষ্টির কারণ২০ আগস্ট ২০২৩