তিন শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত ঢাবি সাদা দলের
Published: 24th, February 2025 GMT
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সাদা দল’ নামে একটিই সংগঠন আছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে একই নামে সংগঠনের যে তিনজন নিজেদের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, তাদের সঙ্গে সাদা দলের কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকবে না। এ তিনজন শিক্ষক হলেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড.
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে এ তিন শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। ওই তিনজন শিক্ষকের সঙ্গে ঢাবি সাদা দলের হয়ে কোনো ধরনের সম্পর্ক না রাখার জন্য সভায় সবাইকে পরামর্শ দেওয়া হয়। দলের এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তাদের সঙ্গে কেউ যুক্ত হলে তাদের ব্যাপারেও পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে সভায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলেন- সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক মহিউদ্দিন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মহানবী (সা.)–র রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্য
মহানবী (সা.)–এর আবির্ভাবের আগে আরবের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল নৈরাজ্যে ভরা। গোত্রভিত্তিক সমাজে ভেদাভেদই ছিল প্রধান। কলহ, যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি লেগেই থাকত। কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কেন্দ্র না থাকায় আরব সমাজ ছিল বিভক্ত। নৈরাজ্যপূর্ণ আরবে মহানবী (সা.) যে অবিস্মরণীয় রাজনৈতিক বিপ্লব সাধন করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিস্ময়কর।
মহানবী (সা.)–র রাজনৈতিক দায়িত্ব
আল্লাহ–তাআলা ঘোষণা করেছেন, তিনিই এ সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও দীনের হকসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব দীনের ওপর একে বিজয়ী করে তোলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সুরা আল ফাতহ, আয়াত: ২৮)। একই দায়িত্বের কথা তিনি সুরা তাওবা (আয়াত: ৩৩) এবং সুরা আস-সফ্ফেও (আয়াত: ৯) উল্লেখ করেছেন।
ইসলাম নামের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধানকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ছিল মহানবী (সা.)–এর দায়িত্ব, যেন তা মানবসমাজের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন হয়।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–এর হিজরত কেন মদিনায় হলো?১৫ আগস্ট ২০২৩মহানবী (সা.)–র রাজনীতির লক্ষ্য
ওপরের আয়াত থেকে বোঝা যায় মহানবী (সা.)–র রাজনীতি ছিল ইসলামের জন্য। ধর্মীয় চেতনাকে বদ্ধমূল করে আল্লাহ ভীরু চরিত্রবান মানুষ তৈরি করতে চেয়েছেন তিনি, যেন ধর্মীয় বিধান মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। তাহলেই সমাজের বর্বরতা ও নৈরাজ্য দূর করা সম্ভব। তাঁর রাজনীতির লক্ষ ছিল:
১. আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর নির্দেশিত আইন প্রতিষ্ঠা করা।
২. শিক্ষা, অর্থ, সমাজ, সংস্কৃতির সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান পরিপালনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
৩. মানুষে মানুষে বৈষম্য, অনাচার, অবিচার, অন্যায় দূর করে সাম্য, শৃঙ্খলা, ন্যায়বিচার ও সুষম শাসনের ব্যবস্থা করা।
৪. যোগ্য ও খোদাভীরু নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজ পরিচালনা করা।
৫. পরকালীন কল্যাণের পথকে সবার জন্য মসৃণ করে দেওয়া, যেন পার্থিব প্রবঞ্চনার গোলকধাঁধায় মানব জীবন বরবাদ হয়ে না যায়।
আরও পড়ুনবিয়ের পর খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পদ কী করেছিলেন১৭ আগস্ট ২০২৩মহানবী (সা.)–র রাজনীতির বৈশিষ্ট্য
মহানবী (সা.)-র রাজনীতির তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল:
১. চারিত্রিক ও নৈতিক শক্তি: সকল নবীর রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁদের চারিত্রিক ও নৈতিক শক্তি। তাঁদের নিষ্কলঙ্ক দীর্ঘজীবন যে পরার্থপর পরিচয় বহন করে, তা অন্য কোথাও মেলা ভার। মহানবী (সা.)–এর রাজনীতিতে এই বৈশিষ্ট্য ছিল সমুজ্জ্বল। ফলে তাঁর নিখাঁদ চরিত্রের প্রভাবকে শুধু রাজনৈতিক কার্যকলাপের দোহাই দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না।
২। উপায়-উপকরণের পবিত্রতা: তিনি কোনো অন্যায় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার মতো উপায় অবলম্বন করে রাজনীতি করেননি। প্রতিপক্ষের সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত আক্রোশ পোষণ করতেন না। চরম শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণ করতেন। তারা ইসলামের আদর্শ মেনে নিলে তাদের আগের সব দোষ মাফ করে দিতেন।
৩. উদ্দেশ্যের নিষ্কলুষতা: ইসলামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা তাঁর ছিল কাম্য, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা নয়। না হলে তিনি কুরাইশের প্রস্তাব মেনে নেতৃত্ব গ্রহণ করে নিতে পারতেন।
এই তিনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য স্বার্থান্বেষী ও দুনিয়াদারদের রাজনীতি থেকে মহানবী (সা.)-কে পৃথক মর্যাদা দিয়েছে।
আরও পড়ুনহজরত শোয়াইব (আ.)–এর আবির্ভাব২০ আগস্ট ২০২৩রাজনৈতিক জীবনের সূচনা
দীনে হককে আর সব দীনের ওপর বিজয়ী করা সংক্রান্ত যে দায়িত্বের কথা আল্লাহ–তাআলা কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বলেছেন, তার সবগুলো অবতীর্ণ হয়েছে মদিনায়। মদিনার সময়টি ছিল আল্লাহর বিধান প্রয়োগের সময়। মক্কার সময়টি মনন-মানসের প্রস্তুতিকাল।
৪০ বছর বয়সে নবুয়তপ্রাপ্তির মক্কায় যে সময়টুকু মহানবী (সা.) কাটিয়েছেন, তখন তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ। জাগতিক উপায়-উপকরণ বলতেও তেমন কিছু তাঁর হাতে ছিল না। তাই তিনি প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তখন। হিজরতের পর ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুনসুরা কাফে আল্লাহ বলেছেন মানুষ সৃষ্টির কারণ২০ আগস্ট ২০২৩