জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংশোধন করে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের আবাসনব্যবস্থাসহ ১৯ দফা দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র ফ্রন্টের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম এবং দপ্তর সম্পাদক তৌকির আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভান তাহসীভ বলেন, ‘বর্তমানে আমরা খুবই ভয়াবহ ও সংকটপূর্ণ সময় পার করছি। মানুষের নিরাপত্তা, নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররা রাস্তায় নামছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও উঠছে। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফ্রন্ট ছাত্রদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানাই।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি খাদিজা তুল কুবরা, সাংগঠনিক সম্পাদক আপেল আহমেদ, প্রচার সম্পাদক খিজির আল সিফাত, অর্থ সম্পাদক সিদ্ধার্থ রায়, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক পল্লব কুমার, সমাজকল্যাণ সম্পাদক দীপংকর রায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আহাম্মদ নাঈম, সদস্য মিশকাতুল সৌমিক ও সৌরভ আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিমের কাছে ১৯ দফা দাবির স্মারকলিপি জমা দেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের আদালতে ঝুলে রয়েছে ৫ কোটি মামলা

অভূতপূর্ব সংকটের মুখোমুখি ভারতের বিচারব্যবস্থা। বিভিন্ন আদালতে জমে থাকা মামলার সংখ্যা গত বছর ৫ কোটি ছাড়িয়েছে। ‘ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট, ২০২৫’ এই হিসাব দিয়েছে। রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত উচ্চ ও নিম্ন আদালতে মুলতবি মামলার সংখ্যা ৫ কোটিরও বেশি। গত চার বছরে এই হার বৃদ্ধি হয়েছে ৩০ শতাংশ। রিপোর্টের মতে, যা গভীর উদ্বেগের। দেশের বিচারব্যবস্থা এই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ।

রিপোর্টের পর্যবেক্ষণ, ই-ফাইলিং ও ডিজিটাইজেশনের মতো প্রযুক্তির সাহায্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হলেও সমস্যা দূর হচ্ছে না কাঠামোগত সমস্যার সমাধান না হওয়ায়। কাঠামোগত সংস্কারের অভাবের দরুন প্রযুক্তির ব্যবহারও মামলার জোয়ার ঠেকাতে পারছে না। ফলে জনমনে হতাশা বাড়ছে। নড়ে যাচ্ছে বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের ভরসা। কারাগারগুলোয় উপচে পড়ছে ভিড়। এ কারণে সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরনের সংকট।

ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশের উচ্চ আদালতগুলোয় মোট মুলতবি মামলার ৫১ শতাংশ ঝুলে রয়েছে পাঁচ বছর ধরে। উচ্চ আদালতগুলোর মধ্যে পাঞ্জাব-হরিয়ানা ও এলাহাবাদ হাইকোর্টে মুলতবি থাকা মামলার হার সবচেয়ে বেশি। ৬০ শতাংশ। উচ্চ আদালতের তুলনায় নিম্ন আদালতগুলোর হাল কিছুটা ভালো। ২২ রাজ্যের নিম্ন আদালতে দায়ের হওয়া মামলার ২৫ শতাংশ ঝুলে রয়েছে তিন বছর ধরে। এই রাজ্যগুলোর মধ্যে বিহারের হাল সবচেয়ে খারাপ। সেখানে নিম্ন আদালতে তিন বছরের বেশি ঝুলে আছে ৭১ শতাংশ মামলা। পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা ও উত্তর প্রদেশে এই হার ৪৫ শতাংশ। দেশের ১০ রাজ্যের নিম্ন আদালতের ২৫ শতাংশ মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মুলতবি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিচারের আশায় মামলাকারীদের কাটাতে হচ্ছে দশ–দশটা বছর।

ইন্ডিয়া জাস্টিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সংকটের প্রধান কারণ, বিচারকদের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি। ২০২২ সালে রেকর্ডসংখ্যক বিচারক নিয়োগ সত্ত্বেও দেশের নিম্ন আদালতগুলোয় গড়ে ২১ শতাংশ ও উচ্চ আদালতে গড়ে ৩৩ শতাংশ পদ এখনো খালি। উচ্চ আদালতে প্রতি তিনজনে একটি ও নিম্ন আদালতে প্রতি পাঁচজনে একটি পদ শূন্য। ফলে বিচারপতিদের ওপর সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় চাপ। বিচারব্যবস্থা ভুগছে গতিমন্থরতায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ