‘অন্যায় করিনি, সরল বিশ্বাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম’
Published: 24th, February 2025 GMT
‘কোনো অন্যায় করিনি, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেইনি। অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সরল বিশ্বাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ বেস্ট হোল্ডিংস কোম্পানির কাছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকের পাওনা ঋণকে শেয়ারে রূপান্তরে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে শুনানিতে আত্মপক্ষ সমর্থনে একথা বলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বহুল সমালোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ড.
২০১১ সালের শেয়ারবাজার ধসের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেনকে চেয়ারম্যান করে বিএসইসি কমিশন পুনর্গঠন করে। টানা ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের ক্রীড়নকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে একের পর এক মন্দ কোম্পানির আইপিও অনুমোদন করেছেন। ওই কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোই এখন বন্ধ বা রুগ্ণ।
গতকাল বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ বেস্ট হোল্ডিংস ইস্যুতে শুধু ড. খায়রুল এবং শিবলী কমিশনের সব চেয়ারম্যান ও কমিশনারকে শুনানীতে ডাকে। অভিযোগ ছিল, তারা পৃথক সময়ে বেস্ট হোল্ডিংসের ঋণকে বন্ড ও শেয়ারে রূপান্তর এবং ২০২৩ সালে আইপিও অনুমোদনে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। শুনানি গ্রহণ করেন বিএসইসির কমিশনার মো. আলী আকবর। মানি লন্ডারিং মামলায় জেলে থাকায় অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত–উল ইসলাম হাজির হতে পারেননি। শিবলী কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক রুমানা ইসলাম লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিয়েছেন। তবে খায়রুল ও তাঁর সময়কার কমিশনার অধ্যাপক হেলাল নিজামীসহ উভয় কমিশনের বাকি কমিশনাররা হাজির হন। এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও খায়রুল হোসেন সাড়া দেননি। শুনানিতে অংশ নিয়ে সবাই লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিয়েছেন। কমিশনের প্রশ্নের মুখে তারা সবাই দাবি করেন, কমিশনের চেয়ারম্যান বা কমিশনার পদে দায়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কোনো অন্যায় করেননি।
খোন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে বিগত দুই কমিশনের সময়ের ১২টি সুনির্দিষ্ট অনিয়ম উদ্ঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি করে। ওই কমিটি বেস্ট হোল্ডিংসসহ সাতটি বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
আইপিও প্রক্রিয়ায় ৩৫০ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার বিক্রি করে গত বছর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বেস্ট হোল্ডিংস। বিগত সরকারের সময়কার আর্থিক খাতের অনিয়মের ‘বরপুত্র’ চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের প্রভাবে কোম্পানিটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংক থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে প্রথমে বন্ড ইস্যু করে। বন্ডের কূপনসহ মূল টাকা ফেরত না দিয়ে ১০ টাকা দরের শেয়ার ৬৫ টাকা করে গছিয়ে দেয় ব্যাংকগুলোকে। এর পর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করে। সবটা জেনেবুঝে বন্ড এবং আইপিওর অনুমোদন দেয় খায়রুল ও শিবলী কমিশন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ব এসইস অন য য় আইপ ও
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিক নেতাদের প্রতিবাদ: নোয়াবের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সংবাদপত্রে তিন দিন বন্ধের ঘোষণার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি)।
বুধবার এক যুক্ত বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বিএফইউজে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, ইআরএফের সভাপতি দৌলত আখতার মালা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এবং ডিএসইসির সভাপতি মোক্তাদির অনীক ও সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান বলেন, সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো নোয়াবের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ঈদ ছুটি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে ছিল। কিন্তু নোয়াব এখনও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় এবং সাংবাদিকদের দাবি আমলে না নেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
নোয়াবের ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১ এপ্রিল ছুটি থাকবে। তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল ফিতর ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলে সে ক্ষেত্রে পরদিন ২ এপ্রিল সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে। নোয়াবের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, এবার ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছেন। ঈদে টানা পাঁচ দিন সরকারি ছুটির সঙ্গে এবার আগে-পরেও মিলছে স্বাধীনতা দিবস, শবে কদর ও সাপ্তাহিক ছুটি। সবকিছু মিলিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মার্চের শেষ সপ্তাহ ও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ যাবে ছুটির মধ্যে। অথচ সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের কথা বিবেচনায় না নিয়ে নোয়াবের মাত্র ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা চরম নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছু নয়।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, আমরা নোয়াবের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ছুটি বৃদ্ধির দাবি করছি। কারণ, সারা জাতি যখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন নোয়াব গণমাধ্যমকর্মীদের নতুন করে বৈষম্যের দিকে ঠেলে দেওয়া অমানবিক-নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছু না। সাংবাদিক সমাজের যৌক্তিক দাবিকে আমলে নিয়ে ছুটি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।