নোভারটিসের বাংলাদেশের শেয়ার স্থানান্তরের ওপর স্থিতাবস্থা
Published: 24th, February 2025 GMT
নোভারটিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের শেয়ার স্থানান্তরের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। নোভারটিস বাংলাদেশের কয়েকজন কর্মী ক্ষতিপূরণ ও অন্য সুবিধাদি পেতে নির্দেশনা চেয়ে ওই রিটটি করেন।
রিট আবেদনকারীপক্ষের তথ্যমতে, নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেড তাদের পুরো শেয়ার রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে স্থানান্তরের বিষয়ে ই–মেইলের মাধ্যমে গত ৫ ডিসেম্বর অভিমত জানিয়ে একটি চিঠি পাঠায়। এরপর আবেদনকারীরা ক্ষতিপূরণ ও চাকরির সুবিধাদি দাবি করে গত ১৩ ডিসেম্বর নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে ই–মেইল পাঠান। এতে দৃশ্যমান ফল না পেয়ে মো.
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মলয় কুমার রায় ও সৈয়দ রুবাইয়াত। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শামীমা সুলতানা দিপ্তি।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নোভারটিস আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। রিট আবেদনকারীরা চাকরিতে আন্তর্জাতিক সুবিধাদি ভোগ করেন। কোম্পানিটির শেয়ার স্থানীয় রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে স্থানান্তর হচ্ছে বলে নোভারটিস তাদের জানিয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে সব সুবিধাসহ ৮৪ মাসের বেতন দাবি করে প্রথমে নোভারটিস এবং পরে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন রিট আবেদনকারীরা। এতে ফল না পেয়ে ১২ কর্মী ওই রিটটি করেন। শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়ে নোভারটিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের শেয়ার স্থানান্তরের ওপর দুই মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ শেয়ার যে অবস্থায়, যে কোম্পানির কাছে আছে, সে অবস্থায় থাকবে।
রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, রিট আবেদনকারীদের দাবি/ক্ষতিপূরণ দিতে নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেডকে কেন নির্দেশ দেওয়া না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। রিট আবেদনকারীদের ১০ ফেব্রুয়ারি (শ্রম ও কর্মসংস্থানসচিবের কাছে) করা আবেদন নিষ্পত্তিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। রুল বিচারাধীন অবস্থায় শেয়ার স্থানান্তর এবং আবেদনকারীদের চাকরির ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থার আদেশ চাওয়া হয় রিটে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।
বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।
রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।