যারা দূরে কম দেখেন তাদের অনেকেই ছোট বয়স থেকে বুঝতে পারেন, অর্থাৎ তার পাশের যিনি দূরের সবকিছু পরিষ্কার দেখছেন অথচ তিনি দেখতে পাচ্ছেন না, অথচ কাছে সবই দেখছেন। চোখের এই অবস্থাকে বলা হয় ‘মায়ওপিয়া’। আবার অনেকেই আছেন, যারা বুঝতে পারেন না তাদের বেলায় পরবর্তী সময়ে কিন্তু অনেক সময় সমস্যা হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন জাগবে কেন এই কম দেখা। আমরা যেমন সবাই সমান না। কেউ বেটে, মোটা, রোগা ইত্যাদি। তেমনি আমাদের দেহের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সমান না। কারও হাত লম্বা পা লম্বা, তেমনি চোখের আকৃতিও সবার সমান না। চোখের স্বাভাবিক আকৃতি ২৪-২৪.
লক্ষণ:
১. সাধারণত দূরে দেখার সমস্যা শিশু বয়স থেকেই ধরা পড়ে। তারা দূরের ব্ল্যাকবোর্ডের অক্ষরগুলো ভালো বুঝতে পারে না। চোখ ছোট করে পিটপিট করে দেখার চেষ্টা করে। কিংবা ঘাড় কাত করে দেখার চেষ্টা করে অথবা বাসায় টেলিভিশন দেখার সময় সে টেলিভিশনের কাছে গিয়ে দেখতে চায়। শিক্ষক, বাবা-মা খেয়াল করলে দেখবেন শিশুটি/ কিশোরটি মাথা নিচু করে বই কাছে এনে পড়াশোনা পড়ছে।
২. কম দেখার জন্য চোখ দিয়ে পানি পড়া, অল্পক্ষণ পড়ার পরে একটা অস্বস্তি লাগা, মাথাব্যথা, পড়তে পড়তে চোখ ঝাপসা লাগা।
৩. অনেক শিশুর চোখ জন্মগত বা একটু বয়স বাড়লে ট্যারা হতে পারে, যা চোখে কম দেখা কে মনে করিয়ে দেবে।
৪. চোখের কর্নিয়ার কিছু রোগ যেমন কোণাকৃতি, ভিটামিন এ ঘাটতিতে কর্নিয়া নরম হয়ে যাওয়া বা কোনো পুরাতন ঘা বা প্রদাহ অথবা চোখের আইরিশে প্রদাহ কিংবা চোখের লেন্সের ছানি বা চোখের ভেতরের ঘনকাচীয় পানির প্রতিসরণ ইনডেক্স বেড়ে গেলে চোখে দূরে কম দেখা যাবে।
৫. যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের রক্তের শর্করা তারতম্য হলে চোখ ঝাপসা হতে পারে কিংবা কিছু কিছু ওষুধ আছে, যার ব্যবহার সাময়িক দূরদৃষ্টি সমস্যা ঘটাতে পারে। তাহলে কী করবেন–
চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আপনার সন্তান বা আপনি নিজেও চোখে যখন কম দেখছেন অবশ্যই চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তিনি আপনার চোখ পরীক্ষা করে খুব সহজে বলে দেবেন আপনি কেন কম দেখছেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে আপনি সুস্থ থাকবেন। শারীরিক কোনো জটিলতা না থাকলে চোখের চশমা ব্যবহার করে সহজেই এ সমস্যা সমাধান করা যায়। এছাড়া কন্টাক্ট লেন্স কিংবা উন্নত লেজার চিকিৎসা করলে অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। তবে আসল মুক্তি মিলবে না। মোবাইল, ল্যাপটপ ব্যবহার বা কাছের পেশাজীবীদের (সেলাই, দর্জি, স্বর্ণকার) সমস্যা হতে পারে। যেহেতু এ সমস্যাটি প্রায় ক্ষেত্রে বংশগত বা পেশাগত তাই চশমা ব্যবহার এবং নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পরিবর্তন বাঞ্ছনীয়। অনেকের একটি ভুল ধারণা আছে যে চশমা ব্যবহার করলে চোখের পাওয়ার বাড়ে না কিংবা ব্যবহার করতে করতে চোখ ভালো হয়ে যায়। এসব ধারণা একদম ভুল। শিশু ৩ থেকে ৬ বছরের মধ্যে চশমা নিলে চোখের ভেতর রেটিনার উন্নতি ঘটে, যা সেই শিশুর জন্য ভবিষ্যৎ জীবনের আলো।
[চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন কনসালট্যান্ট]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কম দ খ সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত ২০
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পূর্ব বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার বিকেলে উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের কালনীরচর গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালনীরচর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল হক ও একই গ্রামের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শওকত আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে। ওইসব বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে।
সম্প্রতি একটি মামলায় ইউপি সদস্য শওকত আলীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ৮ দিন পর গত মঙ্গলবার জামিনে বের হন শওকত আলী। এরই জেরে বুধবার বিকেলে উভয় পক্ষের লোকজন বাগ্বিতণ্ডা ও পরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঞা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।