Samakal:
2025-04-18@03:37:05 GMT

রক্তশূন্যতা কেন হয়?

Published: 24th, February 2025 GMT

রক্তশূন্যতা কেন হয়?

বয়স ও লিঙ্গভেদে হিমোগ্লোবিন যখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রার নিচে অবস্থান করে, তখন আমরা একে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা বলি। হিমোগ্লোবিন শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেয় সঞ্জীবনী অক্সিজেন।
রক্তশূন্যতা হলে কী হয়?
হিমোগ্লোবিন কমতে থাকলে ক্লান্তি দানা বাঁধে। শরীরে ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। স্বল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠে শরীর। হৃৎপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এমনকি তীব্র রক্তশূন্যতা হার্ট ফেইলিওর পর্যন্ত করতে পারে। তখন গায়ে-পায়ে পানি জমে যায়। শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট লাগে। রক্তশূন্যতার কারণে ঠোঁটের কোণে ক্ষত হয়, জিহ্বায় ঘা হয়। জিহ্বার গোড়ায় থাকা পাপিলা ক্ষয় হয়ে হতে পারে মাংসের মতো লালচে। চুলের ঝলমলে উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। চুল ফেটে যায়। নখ ফেটে যায়। এর ফলে দেখা দিতে পারে স্নায়বিক দুর্বলতা। দীর্ঘস্থায়ী রক্তশূন্যতায় খাদ্যনালি ওপরের দিক চেপে যায়। ফলে ঢোক গিলতে কষ্ট হয়। নারীর মাসিক হয়ে পড়ে অনিয়মিত। লোহিত কণিকা ভেঙে রক্তশূন্যতা হলে জন্ডিস দেখা দেয়। সুতরাং রক্তশূন্যতার লক্ষণ কারণভেদে বিভিন্ন হতে পারে।
কেন রক্তশূন্যতা হয়?
এটি হতে পারে আয়রনের অভাবে। এ ছাড়া লোহিত কণিকা ভেঙে গেলে এমনটি হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন– কিডনি কিংবা লিভার বিকল, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, আর্থ্রাইটিস, ক্যান্সার, যক্ষ্মাসহ নানাবিধ রোগে হতে পারে রক্তশূন্যতা। হিমোগ্লোবিনের নিজস্ব রোগ, যেমন– থ্যালাসেমিয়াসহ অসংখ্য রোগে সৃষ্টি হতে পারে রক্তশূন্যতা। আয়রন ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা সারাবিশ্বে সবচেয়ে বেশি। এর পেছনে রয়েছে অপুষ্টি, পেপটিক আলসার, বেদনানাশক ওষুধ ও স্টেররয়েডের ফলে পাকস্থলীর ক্ষত, কৃমির সংক্রমণ, পায়খানা কিংবা রজঃস্রাবের সময় রক্তক্ষরণ, ঘন ঘন গর্ভধারণ ইত্যাদি। 
করণীয়: 
রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত হলে প্রথমে পরখ করে নিতে হবে এর তীব্রতা কতটুকু। এর পেছনের কারণ খুঁজে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেহেতু আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, সে জন্য খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে লৌহসমৃদ্ধ খাবার। এ ছাড়া ভিটামিন বি-১২ এবং ফলিক এসিডের ঘাটতি হলেও হতে পারে রক্তশূন্যতা। লাল মাংস, গিলা, কলিজা, ছোট মাছ, লালশাক, কচুশাক, সবুজ শাকসবজি আর ফলমূলের জোগান বাড়াতে হবে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়। ক্ষেত্রবিশেষে ফলিক এসিড ভিটামিন খেতে হবে। কোনো কোনো রক্তশূন্যতায় আয়রন গ্রহণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সেটিও জানতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে। 

লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও 
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কারণে প্রবৃদ্ধি কমলেও বৈশ্বিক মন্দার ঝুঁকি নেই: আইএমএফ

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও এ কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থাটি গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে এক পূর্বাভাসে এ কথা জানায়।

আইএমএফ বলেছে, বাণিজ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বব্যাপী শেয়ারের দাম কমেছে। দেশগুলোর আস্থায় ফাটল ধরার বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি।

আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘পূর্বাভাস অনুযায়ী, আমাদের নতুন প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্নমুখী হবে। কিন্তু এতে মন্দা দেখা দেবে না।’

গতকাল আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় ‘সব দেশকে অবশ্যই নিজেদের ঘর সামলানোর প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে’।

ইউরোপের উদ্দেশে জর্জিয়েভা বলেন, ‘পরিষেবার বেলায় অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের বিধিনিষেধ’ কমাতে হবে এবং একক বাজারকে ‘গভীর’ করতে হবে।

২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নানা হারে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ন্যূনতম বা সর্বজনীন শুল্ক। এটি ঘোষণার দিন থেকেই কার্যকর হয়। অন্যদিকে নতুন উচ্চ শুল্ক ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন হঠাৎ তা চীন ছাড়া বিশ্বের বাকি দেশগুলোর জন্য ৯০ দিন মেয়াদে স্থগিত করেন তিনি।

চীনের বিষয়ে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পরামর্শ, দেশটিকে সামাজিক সুরক্ষার জাল বাড়াতে হবে, যাতে মানুষ কম ‘সতর্কতামূলক সঞ্চয়’ করে।

অন্যদিকে মার্কিন সরকারকে ঋণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন জর্জিয়েভা।

২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নানা হারে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ন্যূনতম বা সর্বজনীন শুল্ক। এটি ঘোষণার দিন থেকেই কার্যকর হয়। অন্যদিকে নতুন উচ্চ শুল্ক ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন হঠাৎ তা চীন ছাড়া বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য ৯০ দিন মেয়াদে স্থগিত করেন তিনি। পরে চীনসহ সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার, মুঠোফোনসহ যাবতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানিতে ঘোষিত পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার করে ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার সঙ্গে বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস নামে। সে ধস এখনো কাটেনি। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বে মন্দা দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অর্থনীতিবিষয়ক কোনো কোনো সংস্থা। এই অনিশ্চয়তার মুখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যয় ও বিনিয়োগ কমাতে শুরু করেছে। কিছু দেশ নিজেদের মতো করে ট্রাম্পের শুল্ক মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, আমাদের নতুন প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্নমুখী হবে। কিন্তু এতে মন্দা দেখা দেবে না। —ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক

গত বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) পূর্বাভাসে বলেছে, ট্রাম্পের শুল্কের কারণে চলতি বছর বিশ্ববাণিজ্য কমবে।

এরপর যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও একই ধরনের মন্তব্য করে। তারা বলেছে, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ঝুঁকির উপাদান বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। এ পরিস্থিতি আর্থিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছে।

গতকাল ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) বলেছে, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে তারা মূল সুদের হার কমিয়েছে।

এসব পূর্বাভাসের তুলনায় আইএমএফের সতর্কতাকে কিছুটা কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হয়।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি: মন্দার চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির শঙ্কাচীনের যেভাবে ট্রাম্পের শুল্কের জবাব দেওয়া উচিতট্রাম্পের শুল্কাঘাত মোকাবিলায় আসিয়ানের যা করা উচিত১৮ ঘণ্টায় কী ঘটেছিল, যা ট্রাম্পকে শুল্কনীতি স্থগিত করতে বাধ্য করেছিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ