পুলিশ নিয়ন্ত্রিত সব সিসি ক্যামেরাই বিকল
Published: 24th, February 2025 GMT
চুরি, ডাকাতি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ দমন ও সার্বক্ষণিক নাগরিক নিরাপত্তার জন্য মির্জাপুর পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ২০১৮ সালে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। যেগুলোর নিয়ন্ত্রণ করত মির্জাপুর থানা।
পৌর এলাকার ২৮টি স্থানে স্থাপন করা হয় এসব সিসিটিভি ক্যামেরা। বর্তমানে সবক’টিই বিকল হয়ে পড়েছে। এ সুযোগে এলাকায় বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা।
জানা গেছে, আগে থেকে বিকল ছিল কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা। কিন্তু জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর থেকে সব সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল।
মির্জাপুর থানার পুলিশ ও ক্যামেরা স্থাপনকারী টেকনিশিয়ানের তথ্যমতে, পৌর এলাকায় পুরোনো ও নতুন বাসস্ট্যান্ডসহ বাজারের গুরুত্বপুর্ণ স্থানে স্থাপন করা ২৮টি সিসিটিভি ক্যামেরাই বিকল।
মির্জাপুর পৌর এলাকার পুরোনো ও নতুন বাসস্ট্যান্ড, বংশাই রোড, কালীবাড়ি রোড, কলেজ রোড, মির্জাপুর কলেজগেট, কুমুদিনী হাসপাতাল রোড, থানা রোডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি ও নভেম্বরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল থাকায় এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে পুলিশকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ওই ঘটনাগুলোর কোনো তথ্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। এ ছাড়া বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, স্বর্ণের দোকানে চুরি, রড-সিমেন্টের দোকানে চুরিসহ বিভিন্ন বাসাবাড়িতে অনেক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসবের তথ্য উদ্ঘাটনে পুলিশ বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, আগে চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেক অপরাধী শনাক্ত হয়েছে থানার নিয়ন্ত্রণাধীন সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে, যা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। থানার নিয়ন্ত্রণাধীন ২৮টি ক্যামেরা বিকল থাকায় অপরাধী শনাক্তের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিমালিকানাধীন সিসিটিভি ক্যামেরার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো দরকার।
মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী বলেন, ‘থানার নিয়ন্ত্রণাধীন সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বিকল থাকায় আমরা ব্যবসায়ীরা খুবই শঙ্কিত। ইতোমধ্যে বাজারে অনেক চুরির ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া প্রায়ই বাজারের বিভিন্ন সড়কে ছিনতাইয়ের কথা শুনি। অতিদ্রুত বিকল সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করা দরকার।’
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বিকল থাকায় এখন অপরাধী শনাক্ত করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। তাঁর দাবি, তিনি মির্জাপুর থানায় যোগদানের পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গোড়াই স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল থেকে জামুর্কী পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য অন্তত ৩০০ চিঠি দিয়েছেন। সাড়াও পাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে। পৌর এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা সচলের বিষয়ে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
মির্জাপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমানের ভাষ্য, সিসিটিভি ক্যামেরা বিকলের বিষয়ে জানতে পেরেছেন তিনি। ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করতে ইতোমধ্যে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যামেরাগুলো সচল করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পৌর এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা বিকলের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী করা যায় তা নিয়ে ভাবছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব কল থ ক য় প র এল ক র উপজ ল অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াতপন্থী সকল প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা
কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াতপন্থী সকল প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মফিজুল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে ১৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল না। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে সকলের মানোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। সোমবার ছিল চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময়। তাই ১৫টি পদে একক প্রার্থী থাকায় তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ীরা হলেন, সভাপতি পদে মো. শহিদুল্লাহ, সহ-সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, মো. এরশাদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মিজানুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মানিক, ট্রেজারার মো. মুজিবুল ইসলাম, লাইব্রেরি মোশাররফ হোসেন পাখি, এনরোলমেন্ট মো. শফিউল্লাহ, রিক্রিয়েশন মো. জহিরুল ইসলাম, আই.টি মো. সাইফুল ইসলাম এবং সদস্য পদে মো. ওবায়েদ উল্লাহ সরকার, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. কামরুল হাসান সুমন, মু. সলিমুল্লাহ খান ও মো. মাসুদ।
১৭ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনের তফসিল ঘোঘণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুসারে ৬ মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢালাওভাবে মামলার কারণে এ বছর আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন সমকালকে বলেন, গত বছরের ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মিছিলে হামলার অভিযোগে তাঁকে এবং সেক্রেটারিসহ এক সঙ্গে আওয়ামী লীগপন্থী ৩২ জন আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে। তাই মনোনয়নপত্র কিনতে আমরা আদালত চত্বরে যাওয়ার পরিবেশ পাইনি। আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় ছিল। তাই আমাদের কেউ ফরম আনতে যায়নি।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট কাজী মফিজুল ইসলাম বলেন, যারা টাকা জমা দিয়েছেন ও বৈধ ভোটার তারাই মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। তারা (আওয়ামী লীগ) আদালতে আসলে মনোনয়ন ফরম নিতে পারতেন।