জগন্নাথপুর উপজেলার শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কে ৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সরাসরি যান চলাচল। এতে করে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০টি গ্রামের মানুষ ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
গত বছরের আগস্ট মাসে সিলেট এলাকায় হওয়া টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে ভাঙন শুরু হয় কুশিয়ারা নদীর তীরসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায়। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্থানীয় সড়ক ব্যবস্থা; যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়ক। এ সড়কের অধিকাংশ জায়গা বিলীন হয়ে গেছে নদীতে।
জগন্নাথপুরের অলৈতলী ভাঙাবাড়ি নামক স্থানে গিয়ে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর পারঘেঁষা এ এলাকায় সড়কটির একাংশ প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এক পাশে যে সরু অংশটুকু টিকে আছে, সেটি ব্যবহার করে হেঁটে চলাচল করছে মানুষ। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল।
জানা যায়, গত বছরের আগস্টে টানা বৃষ্টির ফলে পানি বেড়ে যায়। এ সময় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জগন্নাথপুর-বেগমপুর সড়ক ডুবে যায়। পরে বন্যার পানি নেমে গেলেও অব্যাহত থাকে কুশিয়ারা নদীর ভাঙন। এক পর্যায়ে স্থানীয় সড়কের বড় একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত এ সড়কের কারণে উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর, খানপুর, আলীপুর, নতুন কসবা, গোতগাঁও, সোনাতলা, কদমতলা, মশাজান, কাতিয়া, অলৈতলী আলাগদি এবং আশারকান্দি ইউনিয়নের কালনিচর, আটঘর, খালাইনজুড়া, মিলিক, বড়ফেচি, ছোট ফেচিসহ প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। কারণ, উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়ক। এ ছাড়াও সড়কটি ব্যবহার করে বেগমপুর হয়ে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলসহ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে উপজেলাবাসী। 
কাতিয়া গ্রামের সেলিম খান বলেন, বন্যা ও নদীভাঙনের কবলে পড়ে গত ৬ মাস ধরে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যে কারণে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভোগান্তিতে রয়েছেন। কোনো কাজের জন্য অন্য কেউ বাইরে থেকে আসতে গেলেও পড়ছেন বিপত্তিতে। 
কসবা গ্রামের সাবলু মিয়া জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত তাদের উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এছাড়া এ সড়ক দিয়ে বেগমপুর হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। গত ৬ মাস ধরে এ সড়ক দিয়ে সরাসরি কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।
পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নজমুদ্দিন জানান, বন্যার ঢল আর কুশিয়ারার ভাঙনে গ্রামীণ সড়কটি ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে চলে যাওয়ায় ৫০০ থেকে ৬০০ ফুট দূরত্ব হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, দু-তিন দিন আগে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে বিকল্প রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এলজিইডি প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানান, নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানে পাউবোর উদ্যোগে প্রকল্পের কাজ চলছে। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল বলেন,  হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হলেই চলাচলে সুবিধা পাবে এলাকাবাসী।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ ব ল ন হয় এ সড়ক সড়ক র উপজ ল সড়ক দ

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারহীন ১৭ বছর

সড়ক হওয়ায় ২৩ বছর পেরিয়ে গেছে। এর পর আর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি সংস্কার বা মেরামতের। এ চিত্র বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধানডোবা এলাকার গ্রামীণ সড়কের।
জানা গেছে, ২০০২ সালে নীলখোলা বাসাইল ভায়া চেঙ্গুটিয়া সড়কের ধানডোবা গোমস্তা বাড়ির সামনে থেকে রামসিদ্দি বাজার পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কটি এলজিইডির রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট-১৯ প্রকল্পের আওতায় পিচ-পাথর দিয়ে পাকা করা হয়। ধীরে ধীরে সড়কটির পিচ-পাথর উঠে যেতে শুরু করে। এতে যানবাহন ও মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম কাজল জানান, এলাকাটি বিএনপি অধ্যুষিত। এ কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও গত ১৭ বছরে সড়কটি মেরামতের প্রয়োজন মনে করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। ৫ আগস্টের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আব্দুল্লাহ খান সরেজমিন সড়কটি দেখেছেন। বেহাল সড়ক দেখে তিনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
একই এলাকার শফিকুল ইসলাম সিকদার, রজ্জব সরদার ও মাসুদ খান বলেন, পিচ-পাথর উঠে ইট বেরিয়ে গেছে। পুরো এলাকা লাল মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্ত। পুরো সড়ক ভেঙেচুরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুর রহমান জানান, সড়কটি এলজিইডির আইডিভুক্ত নয়। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদকে সড়ক এলজিইডির আইডিভুক্ত করতে উপজেলা পরিষদে প্রস্তাব পাঠাতে হবে। মাসিক সমন্বয় সভায় প্রস্তাবটি পাস হলেই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাব।
বার্থী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, রাস্তাটির আইডি নম্বর নেই। নতুন আইডি নম্বর করার জন্য অনেক আগেই উপজেলা পরিষদে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নতুন করে পাঠাতে হলে সে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আব্দুল্লাহ খান বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির উন্নয়নের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে জেলা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। পরিষদের সভায় অনুমোদন পেলে দরপত্র আহ্বান করে দ্রুতই সড়কটি মেরামতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারহীন ১৭ বছর