অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আগামী নির্বাচন গণপরিষদ আবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন দুটোই বিবেচিত হতে পারে। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আগামী ২০২৫ অথবা ২০২৬ সালের নির্বাচনে নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য আবার গণপরিষদ সদস্য হতে পারেন। ধরা যাক, সপ্তাহে চারদিন সংসদ সদস্য হিসেবে সংসদের কাজগুলো করব, বাহাত্তরের সংবিধানের যে পরিবর্তন দরকার সেগুলো করে ফেলব। আর নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য আমরা সপ্তাহে দুইদিন গণপরিষদে বসব, বা সাতদিনই সাংসদ (সংসদ সদস্য) হিসেবে বসা হলো, সন্ধ্যার পরে তিনঘণ্টা গণপরিষদ সদস্য হিসেবে বসব। এগুলো গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। নেপালে কিছুদিন আগে তাই হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সত্যি সত্যি চাই এটা (সংস্কার) করব, তাহলে বলতে হবে আমরা একমত হয়েছি তাহলো- অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে হতে পারে। জুলাই চার্টার করে বলতে পারে- আগামী নির্বাচন জাতীয় সংসদ হবে, গণপরিষদ হবে; এই সংস্কারগুলো আমরা করব। আমরা দেখি, রাজনৈতিক দলগুলো সামাজিক সংগঠন যারা আছে তারা বড় পরিবর্তন করতে সম্মত আছে কিনা। বড় পরিবর্তন না হলে আমাদের খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। ছোট ছোট পরিবর্তন হবে। তবে ছোট ছোট পরিবর্তনের জন্য এত মানুষ জীবন দেয়নি।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে চিন্তা করে না। শুধু তাই নয়, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণও স্বাধীনতার ৫৩ বছরে নীরব থেকেছে। সামাজিক ও মানবিক বিষয়ে কেউ কথা বলেনি, সবাই রাজনৈতিক চেয়ার ও ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়েই ব্যস্ত ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯১ সাল থেকে জনগণের নির্বাচিত সরকার এসেছে, কিন্তু কোনো দল ১৯৭২ সালের সংবিধানে মৌলিক সংস্কার আনেনি। যারা সংস্কার করেছে, তারা শুধু নিজেদের স্বার্থে এবং নিজেদের এজেন্ডা প্রতিষ্ঠার জন্যই করেছে। এখন সংবিধান এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। তবে এজন্য দেশের সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের সম্মতি প্রয়োজন।’

সভায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড.

বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মারুফুল ইসলাম গবেষণাপ্রাপ্ত তথ্য উপস্থাপন করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ জরুরি: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি এ সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক হাসিনা বেগম, কামরান উল বাসেত, আবদুল্লাহ মো. ফেরদৌস খান এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান এই যৌথ বিবৃতি দেন। সেখানে বলা হয়, রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সহজ ও টেকসই সমাধান ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিশেন অথরিটির (ডিটিসিএ) অধীনে রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে কোম্পানিভিত্তিক গণপরিবহন পরিচালনা করা। রাজধানীর সব পুরোনো বাস প্রত্যাহার করে রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে মাত্র তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার হাজার আধুনিক সুবিধাসংবলিত নতুন বাস পরিচালনা করলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহারকারী বহু মানুষ বাসে চলাচল করবেন। এতে প্রাইভেট গাড়ি নিরুৎসাহিত হবে। ফলে যানজট নিয়ন্ত্রণে আসবে। যানজট কমলে মোটরসাইকেলও কমে যাবে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে বাস সার্ভিস পরিচালনা ছাড়া রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণের সহজ কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে এ জন্য সরকারের নিজস্ব বাস থাকতে হবে। নগরের পরিবহন ব্যবস্থা সব সময় সরকারের নিয়ন্ত্রণেই থাকতে হয়। রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রিত হলে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, জ্বালানি সাশ্রয় হবে, অর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে, মানুষের মানসিক এবং শারীরিক অসুস্থতা কমবে। সবকিছু মিলিয়ে একটি স্বস্তির পরিবেশ গড়ে উঠবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিশেন অথরিটির (ডিটিসিএ) রাজধানীতে রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে বাস সার্ভিস পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও পরিবহনসংশ্লিষ্ট ক স্বার্থবাদী গোষ্ঠী রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে বিআরটিএ এবং ডিটিসিএর পাশে দাঁড়িয়ে উদ্যোগটি সফল করা। রাজনৈতিক দলসমূহ ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারি উদ্যোগে সমর্থন জানালে স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা ব্যর্থ হবে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলাজনিত সমস্যাটি আসলে রাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী নির্বাচনে নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য আবার গণপরিষদ সদস্য দুটোই হতে পারেন
  • রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ জরুরি: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন