Samakal:
2025-02-24@21:44:29 GMT

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

Published: 24th, February 2025 GMT

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

কেউ জমি থেকে সরিষা গাছ টেনে তুলছেন। কেউ মাটিতে জাল বিছিয়ে সরিষা গাছ স্তূপ করছেন। কেউ মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করছেন। মাড়াই শেষে সরিষা বস্তা ভরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এ দৃশ্য কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামের। সরিষার ভালো ফলন ও দামে খুশি গ্রামের কৃষক। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চর জগন্নাথপুর গ্রামে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ১১৯ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ছয় থেকে আট মণ। এতে ওই গ্রামে ৮-৯ হাজার মণ সরিষা ফলেছে। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এতে চরে এবার প্রায় আড়াই কোটি টাকার সরিষার উৎপাদন হবে। ভালো ফলন ও দামে চাষিরা বেজায় খুশি।
চরের কৃষক পিয়ার উদ্দিন মণ্ডল বলেন, জমি বাদে বীজ, সার, ওষুধ ও পরিচর্যা বাবদ বিঘাপ্রতি তিন-চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর টাকা ঘরে এসেছে ১৮ থেকে ২৪ হাজার টাকা। সরিষা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভ বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কৃষক জুনাব আলী খাঁ বলেন, আট-দশ বছর আগে এই চরের বেশির ভাগ এলাকা জলমগ্ন থাকত। বছরে শুধু এক ফসল আউশ ধান হতো। এখন সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ অনেক কিছু হয়। তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। গাছ ও ফল খুব ভালো হয়েছে। এ বছর ভাল অর্থ পাবেন বলে তিনি আশাবাদী। 
তাঁর ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে চর জগন্নাথপুরের চারপাশ পানিতে টইটম্বুর। মানুষ তখন নৌকায় চলাচল করে। পানি শুকিয়ে গেলে কৃষকরা প্রথমে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন এবং পরে ধানের আবাদ করেন। 
মো.

হেলাল নামে অপর কৃষক জানালেন, গত বছর কয়েক দফা বৃষ্টি ও ঝড়ে সরিষা গাছের ফুল পড়ে গিয়ে ফলন কম হয়েছিল। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বিঘাপ্রতি সাত-আট মণ ফলন হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে দুই মণ বেশি। সরিষার ফলনে কৃষকরা খুশি। 
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক নওয়াব আলী চলতি মৌসুমে প্রায় ছয় বিঘা জমি থেকে অন্তত ৪৩ মণ সরিষা পেয়েছেন। প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ পড়েছে গড়ে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। গত শনিবার কুমারখালী হাটে তিন হাজার টাকা মণ দরে ১০ মণ সরিষা বিক্রি করেছেন। এবার সরিষা আবাদ করে তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা মুনাফা করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৭৫৪ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হেক্টর বেশি। তার মধ্যে ১৫০ হেক্টর জমিতে (১ হাজার ১১৯ বিঘা) সরিষার আবাদ হয়েছে উপজেলার চর জগন্নাথপুর গ্রামে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার চরাঞ্চলে এবার সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে সরিষার বাজারমূল্যও ভালো। এ কারণে সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াতপন্থী সকল প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা

কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াতপন্থী সকল প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মফিজুল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে ১৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল না। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে সকলের মানোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। সোমবার ছিল চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময়। তাই ১৫টি পদে একক প্রার্থী থাকায় তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। 

বিজয়ীরা হলেন, সভাপতি পদে মো. শহিদুল্লাহ, সহ-সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, মো. এরশাদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মিজানুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মানিক, ট্রেজারার মো. মুজিবুল ইসলাম, লাইব্রেরি মোশাররফ হোসেন পাখি, এনরোলমেন্ট মো. শফিউল্লাহ, রিক্রিয়েশন মো. জহিরুল ইসলাম, আই.টি মো. সাইফুল ইসলাম এবং সদস্য পদে মো. ওবায়েদ উল্লাহ সরকার, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. কামরুল হাসান সুমন, মু. সলিমুল্লাহ খান ও মো. মাসুদ।

১৭ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনের তফসিল ঘোঘণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুসারে ৬ মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢালাওভাবে মামলার কারণে এ বছর আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন সমকালকে বলেন, গত বছরের ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মিছিলে হামলার অভিযোগে তাঁকে এবং সেক্রেটারিসহ এক সঙ্গে আওয়ামী লীগপন্থী ৩২ জন আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে। তাই মনোনয়নপত্র কিনতে আমরা আদালত চত্বরে যাওয়ার পরিবেশ পাইনি। আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় ছিল। তাই আমাদের কেউ ফরম আনতে যায়নি।

যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট কাজী মফিজুল ইসলাম বলেন, যারা টাকা জমা দিয়েছেন ও বৈধ ভোটার তারাই মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। তারা (আওয়ামী লীগ) আদালতে আসলে মনোনয়ন ফরম নিতে পারতেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ