Samakal:
2025-04-17@17:08:35 GMT

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

Published: 24th, February 2025 GMT

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

কেউ জমি থেকে সরিষা গাছ টেনে তুলছেন। কেউ মাটিতে জাল বিছিয়ে সরিষা গাছ স্তূপ করছেন। কেউ মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করছেন। মাড়াই শেষে সরিষা বস্তা ভরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এ দৃশ্য কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামের। সরিষার ভালো ফলন ও দামে খুশি গ্রামের কৃষক। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চর জগন্নাথপুর গ্রামে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ১১৯ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ছয় থেকে আট মণ। এতে ওই গ্রামে ৮-৯ হাজার মণ সরিষা ফলেছে। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এতে চরে এবার প্রায় আড়াই কোটি টাকার সরিষার উৎপাদন হবে। ভালো ফলন ও দামে চাষিরা বেজায় খুশি।
চরের কৃষক পিয়ার উদ্দিন মণ্ডল বলেন, জমি বাদে বীজ, সার, ওষুধ ও পরিচর্যা বাবদ বিঘাপ্রতি তিন-চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর টাকা ঘরে এসেছে ১৮ থেকে ২৪ হাজার টাকা। সরিষা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভ বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কৃষক জুনাব আলী খাঁ বলেন, আট-দশ বছর আগে এই চরের বেশির ভাগ এলাকা জলমগ্ন থাকত। বছরে শুধু এক ফসল আউশ ধান হতো। এখন সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ অনেক কিছু হয়। তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। গাছ ও ফল খুব ভালো হয়েছে। এ বছর ভাল অর্থ পাবেন বলে তিনি আশাবাদী। 
তাঁর ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে চর জগন্নাথপুরের চারপাশ পানিতে টইটম্বুর। মানুষ তখন নৌকায় চলাচল করে। পানি শুকিয়ে গেলে কৃষকরা প্রথমে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন এবং পরে ধানের আবাদ করেন। 
মো.

হেলাল নামে অপর কৃষক জানালেন, গত বছর কয়েক দফা বৃষ্টি ও ঝড়ে সরিষা গাছের ফুল পড়ে গিয়ে ফলন কম হয়েছিল। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বিঘাপ্রতি সাত-আট মণ ফলন হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে দুই মণ বেশি। সরিষার ফলনে কৃষকরা খুশি। 
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক নওয়াব আলী চলতি মৌসুমে প্রায় ছয় বিঘা জমি থেকে অন্তত ৪৩ মণ সরিষা পেয়েছেন। প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ পড়েছে গড়ে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। গত শনিবার কুমারখালী হাটে তিন হাজার টাকা মণ দরে ১০ মণ সরিষা বিক্রি করেছেন। এবার সরিষা আবাদ করে তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা মুনাফা করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৭৫৪ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হেক্টর বেশি। তার মধ্যে ১৫০ হেক্টর জমিতে (১ হাজার ১১৯ বিঘা) সরিষার আবাদ হয়েছে উপজেলার চর জগন্নাথপুর গ্রামে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার চরাঞ্চলে এবার সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে সরিষার বাজারমূল্যও ভালো। এ কারণে সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

এডিপির ব্যয় আগের চেয়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা কম

দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি আরও স্থবির হয়ে পড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত গত ৯ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ৩৭ শতাংশেরও কম।

গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৪২ শতাংশেরও বেশি। অন্যদিকে একক মাস হিসেবে মার্চে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৭ শতাংশেরও কম, যা গত অর্থবছরের একই মাসে ছিল ৯ শতাংশ। সব মিলিয়ে ৯ মাসের ব্যয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা কম। 

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এ বিষয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে।

এতে দেখা যায়, গত ৯ মাসে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৮২ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। আগের একই সময়ের চেয়ে ব্যয় কমেছে ২৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। একক মাস মার্চে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। এ ব্যয় গত বছরের মার্চে ছিল ২২ হাজার ১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাসের হিসাবে মার্চে উন্নয়ন ব্যয় গত বছরের মার্চের চেয়ে ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা কম। 

চলতি অর্থবছরে ১ হাজার ৩২৭টি প্রকল্প, ১৭টি উপপ্রকল্প ও উন্নয়ন সহায়তা থোক হিসেবে ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পের বিপরীতে মূল এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। তবে বাস্তবায়নে স্থবিরতার কারণে এডিপি সংশোধন করে সংশোধিত এডিপির (আরএডিপি) আকার রেকর্ড পরিমাণ ছোট করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে ব্যয় কমানো হয়েছে ১৮ শতাংশ বা ৪৯ হাজার কোটি টাকা। এতে আরএডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ