নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আদালতের নির্দেশে কবর থেকে ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীর লাশ তোলা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার চরহাজারী, রামপুর ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশগুলো উত্তোলন করা হয়।

উত্তোলন করা লাশ তিনটি হলো উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে বাবলুর (২০)। তাঁদের মধ্যে সাইফুল বামনী ডিগ্রি কলেজের ও আবদুল আজিজ বসুরহাট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং শিবিরকর্মী ছিলেন। আর বাবলু পেশায় একজন রংমিস্ত্রি ও জামায়াতের কর্মী ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশের পর আজ সকালের দিকে পারিবারিক কবরস্থান থেকে আবদুল আজিজ ও বেলা পৌনে তিনটার দিকে সাইফুলের ও বিকেল পাঁচটার দিকে বাবলুর লাশ উত্তোলন করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোম্পানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পৃথক তিনটি কবর খুঁড়ে তিন ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা লাশের ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। তিনি জানান, উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে লাশ তিনটি উত্তোলন করা হয়েছে।

এসআই মঈনুল ইসলাম জানান, এর আগে একই ঘটনায় নিহত মতিউর রহমান সজীব (১৭) নামের আরও এক শিবির কর্মীর লাশ গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির মোশাররফ হোসাইন বলেন, ‘নিহতের স্বজন ১১ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা করেছেন। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের আসামিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এই বিক্ষোভ মিছিলে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক সমবেত হন। জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, বিক্ষোভ মিছিলটিতে পুলিশ বাধা দেয়। পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় জামায়াত ও শিবিরের সাতজন নেতা-কর্মী নিহত হন। যাঁদের মধ্যে তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়, তখন মামলাও হয়নি।

এ ঘটনায় গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর নিহত সাইফুলের বড় ভাই মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের করা মামলায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

নুরুজ্জামান, থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুধীর রঞ্জন বড়ুয়াসহ ১১২ জনকে আসামি করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম কর ম র তদন ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পরপর চারটি ইনজেকশন প্রয়োগ, মুহূর্তেই ছটফট করে নারীর মৃত্যু

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ঘরেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন স্ট্রোকের রোগী নাজমা বেগম (৫০)। সেখানে অসুস্থ নাজমাকে চিকিৎসার নামে দেওয়া হয় পরপর চারটি ইনজেকশন। মুহূর্তেই ছটফট করে মারা যান ওই নারী। এ ঘটনার নিহত নাজমা বেগমের সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন (৬৫) ও ইদ্রিস চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় পুরোনো দাইয়া বাড়িতে বোনের বাসায় ছিলেন নাজমা বেগম। ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। এরপর গতকাল রাতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে নিহত নাজমার বর্তমান স্বামী সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আজ সকালে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আক্তার হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার দশদনা গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের হাজীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গ্রেপ্তার অপর ব্যক্তি ইদ্রিস চৌধুরীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম। তিনিও আগ্রাবাদ এলাকায় থাকতেন। ইদ্রিস নিজেকে পল্লিচিকিৎসক বলে দাবি করেন। নাজমাকে ইনজেকশনও দিয়েছিলেন তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নাজমা বেগম ২ ফেব্রুয়ারি স্ট্রোক করেন। তাঁর শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে পড়েছিল। পরে তাঁর স্বামী সাহাব উদ্দিন তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর চিকিৎসক নাজমা বেগমকে বাসায় নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা করাতে বলেন। এরপর ছাড়পত্র নিয়ে নাজমা সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

গতকাল শনিবার দুপুরে নাজমার সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন ইদ্রিস চৌধুরী নামের একজন পল্লিচিকিৎসককে নিয়ে ফৌজদারহাটের বাড়িতে যান। এরপর পল্লিচিকিৎসক নামধারী ইদ্রিস চৌধুরী তাঁকে পরপর চারটি ইনজেকশন দেন। এতে নাজমার মৃত্যু হলে স্থানীয় বাসিন্দারা আক্তার ও ইদ্রিসকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।

এসআই আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত নারীর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসআই আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইদ্রিস চৌধুরী নিজেকে পল্লিচিকিৎসক দাবি করলেও কোনো ধরনের সনদ দেখাতে পারেননি। ফার্মেসিতে কাজ করে তিনি চিকিৎসা করা শিখেছেন বলে দাবি করেন। সেই আলোকে তিনি নাজমা বেগমের শরীরে ইনজেকশন প্রয়োগ করেছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মায়ের কবরে শায়িত হলেন শহীদজায়া সারা আরা মাহমুদ
  • রাজধানীর কাওলা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • নড়াইলে অস্ত্রসহ ১৭ মামলার আসামি ধলা বাবুল ও তার ভাই গ্রেপ্তার
  • স্টুডিওতে ‘যৌন হয়ারানির’ শিকার মাদরাসা শিক্ষার্থী, আটক ১
  • শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্ত্রীর মৃত্যু
  • পরপর চারটি ইনজেকশন প্রয়োগ, মুহূর্তেই ছটফট করে নারীর মৃত্যু
  • সড়কের মাটি খোঁড়ার সময় পাওয়া গেল সাতটি কঙ্কাল