বান্দরবানের লামার সরইয়ে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বান্দরবান জেলা শহর ও চট্টগ্রামে বিক্ষোভ হয়েছে। একই সঙ্গে রিংরংসহ নিরীহ জুমচাষি ম্রোদের বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, গত শনিবার রাতে পুলিশ লামা উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের লাংকমপাড়া থেকে রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তার করে। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেডের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বেলা দুইটায় বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএসএ) সমাবেশটি আয়োজন করে। এতে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী জন ত্রিপুরা, মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি উক্যসিং মারমা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এডিশন চাকমা, বিএমএসএ সাধারণ সম্পাদক রেংলং ম্রো। সভাপতিত্ব করেন বিএমএসএ সভাপতি তনয়া ম্রো।

চট্টগ্রামেও প্রতিবাদ

এদিকে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের করা মামলায় ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে তিন সংগঠন। গতকাল নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে। সমাবেশে ম্রো ও ত্রিপুরাদের নামে করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, লামা সরইয়ে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক স্থানীয় ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র চলছে কয়েক বছর ধরে। এরই অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের কর্তৃপক্ষ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে ম্রো ও ত্রিপুরাদের জায়গা দখল করতে নির্বিচার জুম ভূমি-বাঁশঝাড় পুড়িয়ে দিয়ে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে দেয় বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন বক্তারা।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম নগর শাখার নেতা অংচাহ্লা মার্মার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের চট্টগ্রাম নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক জেসি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শুভ চাক প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব র ইন ড স ট র কম ট র ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

টেক্সাসে আবাসন প্রকল্প সম্প্রসারণ করতে গিয়ে হুমকির মুখে মুসলিমরা

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বসবাসকারী মুসলিমদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি ইমরান চৌধুরীর কাছে হুমকি দিয়ে ফোনকল আসার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

কারণটা কী

পূর্ব টেক্সাসের ইস্ট প্লানো এলাকার কাছে মুসলিমদের জন্য এক হাজার নতুন বাড়ি, একটি কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ ও ইসলামিক বেসরকারি স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন ইমরান চৌধুরী।

এক অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোনে ইমরানকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এটি এখন পর্যন্ত একটি বিকল্প পথ।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকা টেক্সাসের রক্ষণশীল, শ্বেতাঙ্গ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতারাও ইমরানের এ পরিকল্পনাকে সাদরে গ্রহণ করতে পারছেন না। তাঁরা প্রকল্পের বৈধতা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন।

ইমরান চৌধুরী বলছেন, ভুলভাল বুঝিয়ে এ চাপ তৈরি করা হচ্ছে।

ইমরান আরও বলেন, ‘অঙ্গরাজ্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত যত আইন আছে, তার সব কটিই আমরা মেনে চলার চেষ্টা করছি।’

তবে চলতি সপ্তাহে ইমরান চৌধুরীর প্রকল্পটির সাংবিধানিক বৈধতা আছে কি না, তা নিয়ে তদন্তের জন্য সিনেটর জন করনিন আহ্বান জানিয়েছেন।

ইস্ট প্লানো ইসলামিক সেন্টার বা এপিক নামে পরিচিত বিদ্যমান একটি বসতি এলাকাকে সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়েই ওই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সিনেটর জন করনিন মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে টেক্সাসের ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।

টেক্সাসের গভর্নর ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ গ্রেগ অ্যাবট এ প্রকল্পটিকে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘স্পষ্ট করে বলছি, টেক্সাসে শরিয়াহ আইন চালু হতে দেওয়া হবে না। শরিয়াহ শহর গড়তে দেওয়া হবে না। এ প্রকল্পের আওতায় যে “নো গো জোনস” গড়তে চাওয়া হচ্ছে, তা–ও গড়তে দেওয়া হবে না।’

যুক্তরাষ্ট্রে যেসব অঙ্গরাজ্যে শরিয়াহ আইনবিরোধী বিল কার্যকর করা হয়েছে, তার একটি টেক্সাস। বিদ্বেষবিরোধী সংগঠন সাউদার্ন পভার্টি ল সেন্টার শরিয়াহ আইনবিরোধী বিলকে অতি ডানপন্থী ষড়যন্ত্রগুলোর একটি বলে অভিহিত করেছে।

ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আওতায় বিশ্বাস করা হয় যে শরিয়াহ নামে পরিচিত ইসলামি আইন আমেরিকান আইনি ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। তবে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ও অন্য আইন বিশেষজ্ঞরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

জমি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ