বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিস কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি,অভিজ্ঞতা বিনিময় ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সাম্প্রতিক জাপান সফর নিয়ে আলোচনা হয়।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগ বিষয়ে জাপানের প্রতিষ্ঠিত বৃহৎ বাণিজ্য গ্রুপ সেক্সি (নিপ্পন), মিটসুই, মারুবেনি, এইচএসবিসি, মিৎসুবিসি হেভি ইন্ডাস্ট্রি ও জেটি প্রতিনিধিদের সাথে টোকিওতে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা এদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।”

জাপানকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার ও বন্ধু রাষ্ট্র উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে।”

এ সময় আরো বেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে এদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য জাপানের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাম্প্রতিক জাপান সফর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, “এতে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।” 

এ সময় তিনি বাংলাদেশিদের জন্য বাংলাদেশে জাপানি ভাষা শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ ও এদেশ থেকে জাপানে দক্ষ জনশক্তি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

সাক্ষাৎকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ ও অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) আয়েশা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ণ জ য উপদ ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

ফলন ও দামে খুশি সরিষা চাষি

কেউ জমি থেকে সরিষা গাছ টেনে তুলছেন। কেউ মাটিতে জাল বিছিয়ে সরিষা গাছ স্তূপ করছেন। কেউ মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করছেন। মাড়াই শেষে সরিষা বস্তা ভরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এ দৃশ্য কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামের। সরিষার ভালো ফলন ও দামে খুশি গ্রামের কৃষক। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চর জগন্নাথপুর গ্রামে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ১১৯ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ছয় থেকে আট মণ। এতে ওই গ্রামে ৮-৯ হাজার মণ সরিষা ফলেছে। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এতে চরে এবার প্রায় আড়াই কোটি টাকার সরিষার উৎপাদন হবে। ভালো ফলন ও দামে চাষিরা বেজায় খুশি।
চরের কৃষক পিয়ার উদ্দিন মণ্ডল বলেন, জমি বাদে বীজ, সার, ওষুধ ও পরিচর্যা বাবদ বিঘাপ্রতি তিন-চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর টাকা ঘরে এসেছে ১৮ থেকে ২৪ হাজার টাকা। সরিষা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভ বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কৃষক জুনাব আলী খাঁ বলেন, আট-দশ বছর আগে এই চরের বেশির ভাগ এলাকা জলমগ্ন থাকত। বছরে শুধু এক ফসল আউশ ধান হতো। এখন সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ অনেক কিছু হয়। তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। গাছ ও ফল খুব ভালো হয়েছে। এ বছর ভাল অর্থ পাবেন বলে তিনি আশাবাদী। 
তাঁর ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে চর জগন্নাথপুরের চারপাশ পানিতে টইটম্বুর। মানুষ তখন নৌকায় চলাচল করে। পানি শুকিয়ে গেলে কৃষকরা প্রথমে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন এবং পরে ধানের আবাদ করেন। 
মো. হেলাল নামে অপর কৃষক জানালেন, গত বছর কয়েক দফা বৃষ্টি ও ঝড়ে সরিষা গাছের ফুল পড়ে গিয়ে ফলন কম হয়েছিল। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় বিঘাপ্রতি সাত-আট মণ ফলন হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে দুই মণ বেশি। সরিষার ফলনে কৃষকরা খুশি। 
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক নওয়াব আলী চলতি মৌসুমে প্রায় ছয় বিঘা জমি থেকে অন্তত ৪৩ মণ সরিষা পেয়েছেন। প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ পড়েছে গড়ে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। গত শনিবার কুমারখালী হাটে তিন হাজার টাকা মণ দরে ১০ মণ সরিষা বিক্রি করেছেন। এবার সরিষা আবাদ করে তিনি প্রায় ১ লাখ টাকা মুনাফা করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৭৫৪ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হেক্টর বেশি। তার মধ্যে ১৫০ হেক্টর জমিতে (১ হাজার ১১৯ বিঘা) সরিষার আবাদ হয়েছে উপজেলার চর জগন্নাথপুর গ্রামে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার চরাঞ্চলে এবার সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে সরিষার বাজারমূল্যও ভালো। এ কারণে সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষক। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ