ঢাবিতে ধর্ষকের শাস্তি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি
Published: 24th, February 2025 GMT
সারাদেশে অব্যাহত হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ও বামপন্থি সংগঠনের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবে এসব বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন বিচার ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন নারী শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ধর্ষকদের শাস্তি, দিতে হবে দিতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে ঢাবি শিক্ষার্থী পলি বলেন, “যে সরকার জুলাই বিপ্লবে নারীদের বিপ্লবী ঘোষণা দিয়েছে, সেই সরকার কি বুঝতে পারছে না আমরা বাইরে নিরাপদ নই। গতদিন স্ত্রীকে ধর্ষণের জন্য ধর্ষককে হত্যা করায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু সেই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”
শিক্ষার্থী সামিয়া বলেন, “আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি, যেখানে ধর্ষণের জন্য পোশাক দায়ী করা হয়। ধর্ষণের পর অপদস্থ হতে হয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশ্নের বানে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। সারা দেশে ধর্ষণ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এ সঙ্কট আরো বাড়বে।”
অন্যদিকে, সন্ধ্যা ৭ টায় অব্যাহত হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে যৌথ মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে পুনরায় টিএসসিতে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে তারা ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, জবাব চাই দিতে হবে’, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, করতে হবে করতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, “সরকারকে যখন ধর্ষণের কথা বলা হয়, তখন তারা ইংল্যান্ডের উদাহরণ দেন। তারা বলেন, ইংল্যান্ডে সারাদিনে যত ধর্ষণ হয়, বাংলাদেশে তার চেয়ে কম। এই একই কথা বিগত স্বৈরাচারী সরকার বলত। গতকাল রাত ৩টার সময় সংবাদ সম্মেলন করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্লজ্জভাবে সমস্ত দায় আওয়ামী লীগকে দিয়েছেন। এভাবে দায় এড়ানো যায় না।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্লজ্জভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আজ সবচেয়ে বেশি জুলুমের ঘটনা ঘটছে নারীদের উপর। এটা কোন তুচ্ছ ঘটনা নয়।”
তিনি বলেন, “আপনারা যদি জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে অনতিবিলম্বে চেয়ার ছেড়ে দিন। যতগুলো মব ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তার বিচার আমরা দেখতে চাই। এই ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ করতে হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় ঈদের দিনে যুবককে গুলি করে হত্যা
ফতুল্লায় মাদকের টাকার লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে মো. পাভেল নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতরের দিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
এরআগে রোববার চাঁদরাতে পাভেল ও পাশের বাড়ির সকালে রায়হান বাবু ওরফে ‘কবুতর বাবুর’ মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এ ঘটনায় ঈদের দিন সকালে ‘কবুতর বাবু’ পিস্তল দিয়ে পাভেলের বুকে গুলি করে পালিয়ে যান। নিহত পাভেল (৩৭) ফতুল্লা থানার কাশিপুর মধ্যপাড়া এলাকার হাসমত উল্লাহর ছেলে।
নিহত পাভেলের বড় ভাই মাসুম জানান, ঈদের দিন সকালে ‘কবুতর বাবু’ পিস্তল দিয়ে পাভেলের বুকে গুলি করে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় পাভেলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, ভোর ৪টার ঘটনা। তখন পাভেল নামে ওই যুবক রাস্তায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়েছিল।
পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি মারা যান।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্ত ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি অভিযুক্ত রায়হান বাবু এলাকায় মাদক সেবনসহ মাদক ব্যবসা করতেন। পাভেল তার পূর্ব পরিচিত। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক এবং যাওয়া আসা ছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, মাদক কেনাবেচার টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় মামলা হবে এবং আমরা তদন্তসহ অভিযুক্ত রায়হান বাবুকে আটকের চেষ্টা করছি।