ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মার্সেইতে রাশিয়ার কনস্যুলেটে তিনটি ‘ককটেল’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি কনস্যুলেট লক্ষ্য করে ‘মলোটভ ককটেল’ ছুড়ে পালিয়ে যায়। খবর রয়টার্সের।

মার্সেই পুলিশ জানিয়েছে, তিনটির মধ্যে দুটি ডিভাইস বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।  বিস্ফোরক ডিভাইসগুলো কনস্যুলেটের বাগানে গিয়ে পড়েছিল।

হামলার পর পুলিশ কনস্যুলেটটি ঘিরে ফেলে। তদন্তকারীরা ‘মলোটভ ককটেল’ হিসেবে ব্যবহৃত তিনটি সোডার বোতলের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করছেন।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হতে পারে এই সপ্তাহে: হোয়াইট হাউজ

আড়াই শতাধিক ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনে হামলা রাশিয়ার

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা রুশ সাংবাদিকদের বলেন, “মার্সেইতে রুশ কনস্যুলেট জেনারেলের চত্বরে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণগুলোর সব চিহ্নই সন্ত্রাসী হামলার নির্দেশ দেয়।”

ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়া এই ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ফ্রান্সের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। 

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, মস্কো এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে। 

ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বার্ষিকীতে এবং ইউরোপীয় ও কানাডিয়ান নেতারা চলমান ইউক্রেনের যুদ্ধ-প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানাতে কিয়েভে জড়ো হওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটল।

এদিকে, ফ্রান্স দ্রুত এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, “ফ্রান্স কূটনৈতিক স্থাপনার নিরাপত্তা লঙ্ঘনের যেকোনো প্রচেষ্টার নিন্দা জানায়।”

২০২২ সাল থেকে ফ্রান্স ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের বিরুদ্ধে একাধিক বিক্ষোভ দেখেছে, যার মধ্যে মার্সেই, প্যারিস এবং অন্যান্য শহরে বিক্ষোভও রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কনস য ল ট ইউক র ন ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ নিয়ন্ত্রিত সব সিসি ক্যামেরাই বিকল

চুরি, ডাকাতি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ দমন ও সার্বক্ষণিক নাগরিক নিরাপত্তার জন্য মির্জাপুর পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ২০১৮ সালে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। যেগুলোর নিয়ন্ত্রণ করত মির্জাপুর থানা।
পৌর এলাকার ২৮টি স্থানে স্থাপন করা হয় এসব সিসিটিভি ক্যামেরা। বর্তমানে সবক’টিই বিকল হয়ে পড়েছে। এ সুযোগে এলাকায় বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা।
জানা গেছে, আগে থেকে বিকল ছিল কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা। কিন্তু জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর থেকে সব সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল।
মির্জাপুর থানার পুলিশ ও ক্যামেরা স্থাপনকারী টেকনিশিয়ানের তথ্যমতে, পৌর এলাকায় পুরোনো ও নতুন বাসস্ট্যান্ডসহ বাজারের গুরুত্বপুর্ণ স্থানে স্থাপন করা ২৮টি সিসিটিভি ক্যামেরাই বিকল।
মির্জাপুর পৌর এলাকার পুরোনো ও নতুন বাসস্ট্যান্ড, বংশাই রোড, কালীবাড়ি রোড, কলেজ রোড, মির্জাপুর কলেজগেট, কুমুদিনী হাসপাতাল রোড, থানা রোডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি ও নভেম্বরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল থাকায় এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে পুলিশকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ওই ঘটনাগুলোর কোনো তথ্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। এ ছাড়া বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, স্বর্ণের দোকানে চুরি, রড-সিমেন্টের দোকানে চুরিসহ বিভিন্ন বাসাবাড়িতে অনেক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসবের তথ্য উদ্ঘাটনে পুলিশ বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি।
পুলিশ জানায়, আগে চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেক অপরাধী শনাক্ত হয়েছে থানার নিয়ন্ত্রণাধীন সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে, যা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। থানার নিয়ন্ত্রণাধীন ২৮টি ক্যামেরা বিকল থাকায় অপরাধী শনাক্তের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিমালিকানাধীন সিসিটিভি ক্যামেরার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো দরকার।
মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী বলেন, ‘থানার নিয়ন্ত্রণাধীন সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বিকল থাকায় আমরা ব্যবসায়ীরা খুবই শঙ্কিত। ইতোমধ্যে বাজারে অনেক চুরির ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া প্রায়ই বাজারের বিভিন্ন সড়কে ছিনতাইয়ের কথা শুনি। অতিদ্রুত বিকল সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করা দরকার।’
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বিকল থাকায় এখন অপরাধী শনাক্ত করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। তাঁর দাবি, তিনি মির্জাপুর থানায় যোগদানের পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গোড়াই স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল থেকে জামুর্কী পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য অন্তত ৩০০ চিঠি দিয়েছেন। সাড়াও পাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে। পৌর এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা সচলের বিষয়ে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
মির্জাপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমানের ভাষ্য, সিসিটিভি ক্যামেরা বিকলের বিষয়ে জানতে পেরেছেন তিনি। ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করতে ইতোমধ্যে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যামেরাগুলো সচল করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পৌর এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা বিকলের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী করা যায় তা নিয়ে ভাবছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ