ভারতের মার্ক্সপন্থী কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআইএম) পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ভোট প্রভাবিত করার জন্য বিজেপি ও তৃণমূল—দুই দলই বিদেশি অনুদান ব্যবহার করেছে।

২৭তম রাজ্য সম্মেলনের মধ্যে গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ প্রসঙ্গে সেলিম এ কথা বলেন।

সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছে। তাঁর এ মন্তব্যের পর ভারতের রাজনীতিতে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি বিষয়টিকে ‘বাইরের দেশের নাক গলানো’ বলে চিহ্নিত করেছে। কংগ্রেস অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে।

এ অবস্থায় রাজ্য সম্মেলনের মধ্যে সিপিআইএমের পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক বললেন, অর্থ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল—দুই দলই ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।

মহম্মদ সেলিম বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে দেখা গেছে, নির্বাচনে ভোট লুটের নামে টাকা ব্যবহৃত হয়েছে। প্রথমে তৃণমূল ‘যুবা’র নামে। বিদেশের টাকা চিট ফান্ডের নামে রাজ্যে তৃণমূলের ঘরে ঢুকেছে। সেই টাকা গুন্ডা কিনতে, ভোট লুটের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। মানুষের ভোট প্রভাবিত করার জন্য বিজেপি ও তৃণমূল—উভয়েই বিদেশি টাকা ব্যবহার করেছে। তাই তারা একে অন্যকে দোষারোপ করে না।

শনিবার সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে। প্রতি তিন বছর পরপর এ সম্মেলন হয়, যা এখন অন্য রাজ্যেও চলছে। এ সম্মেলনের পর আগামী এপ্রিলে জাতীয় স্তরে দলের পার্টি কংগ্রেস হবে।

দেশের রাজনীতিতে অন্য দেশের অর্থ ব্যবহার করার প্রসঙ্গে সেলিম গতকাল রোববার আরও বলেন, ‘সিপিআইএম বরাবরই এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছে। বিদেশি অর্থ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরাল সরকারের সময় একটি কমিটি হয়েছিল। সেই কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করেছিলাম। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর আর কোনো কমিটি করেনি। সেই কমিটি তুলে দিয়েছে। সাহস থাকলে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক, কীভাবে অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করতে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করতে এই টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।’

সেলিম অভিযোগ করেন, বিজেপি একাই এ কাজ করছে না, তৃণমূলও অনুদান নিচ্ছে। ট্রাম্প বলছে, ২ কোটি ১০ লাখ ডলার মোদিকে দেওয়া হয়েছে ভোটের হার বাড়ানোর জন্য। ২০১১ সালে কালীঘাটের ওপর একটা হোর্ডিং দেখা গিয়েছিল, তারপর তৈরি হলো ‘তৃণমূল যুবা’। তখন বলা হয়েছিল, বামপন্থীদের সময় রাজ্যে গণতন্ত্র কমে গিয়েছিল, তা আবার গড়ে তুলতে হবে। তখন টাকা ঢালা হয়েছিল।

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যায় সিপিআইএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট। এর আগে তারা ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল। সেলিম অভিযোগ করেন, বিদেশি অর্থ এনে বামফ্রন্টকে হারানোর চেষ্টা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।

তবে তৃণমূল কংগ্রেস বরাবরই এ ধরনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে আসছে।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও এই টাকা রাজ্যে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সেলিম বলেন, টাকা ছড়িয়ে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরি করা হয়েছিল। গণনাকেন্দ্র কেনা হয়েছিল। বেলডাঙ্গায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র র জন হয় ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার কারা

আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরু বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে দুই টেস্টের সিরিজ। প্রায় চার বছর পর টেস্টে মুখোমুখি হতে চলা দুই দলের আগের লড়াইয়ে বাংলাদেশের কারা ছিলেন সেরা পারফরমার, কতটা ভালো করেছেন, সেটিই দেখুন সংখ্যায় সংখ্যায়।১৮

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে ১৮টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৮টিতে, জিম্বাবুয়ে ৭টি। বাকি তিনটি শেষ হয়েছে ড্রতে।

২০০১ সালে হোম ও অ্যাওয়ে মিলিয়ে মোট ৪টি টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে। তবে ২০২১ সালের জুলাইয়ের পর সাড়ে তিন বছরের বেশি সময়ে দুই দল একবারও মুখোমুখি হয়নি।

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সেরা ৫

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে লড়াইয়ে দুই দল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি রান জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলরের (২৪ ইনিংসে ১২৩৯)। এমনকি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৮৩ রানও জিম্বাবুয়ের হ্যামিল্টন মাসাকাদজার। বাংলাদেশের পক্ষে মুশফিকুর রহিম সর্বোচ্চ রানের মালিক হলেও দুই দল মিলিয়ে তিনি তৃতীয় স্থানে। তবে এবারের সিরিজেই মাসাকাদজাকে টপকে যাওয়ার সুযোগ তাঁর সামনে।

বাংলাদেশের হয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ৩টি সেঞ্চুরি আছে মুমিনুল হকের, যিনি এবারের সিরিজের দলেও আছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ফিফটি করা হাবিবুল বাশার (৭টি) অবসর নিয়েছেন দেড় যুগ আগেই।

বোলিংয়ে সেরা ৫

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ের লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন এলটন চিগম্বুরা, তবে ১৬ ইনিংস বলা করা এই মিডিয়াম পেসার উইকেটশিকারের দিক থেকে বেশ পেছনে (১৮ উইকেট)। ১২ ইনিংসে হাত ঘুরিয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট তাইজুল ইসলামের—৪১ উইকেট। দুই দলের সম্মিলিত তালিকার শীর্ষ ৫ উইকেট সংগ্রাহকের ৩ জনই বাংলাদেশের।

১০

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে টেস্টে ম্যাচে দশ উইকেট নিয়েছেন এখন পর্যন্ত তিনজন বোলার। তিনজনই বাংলাদেশি—এনামুল হক জুনিয়র (১২ উইকেট, ২০০৫ সালে ঢাকায়), সাকিব আল হাসান (১০ উইকেট, ২০১০ সালে খুলনায়), তাইজুল ইসলাম (১১ উইকেট, ২০১৮ সালে সিলেটে)।

৫৬০

মুখোমুখি লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় ইনিংসটি বাংলাদেশের। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে ৫৬০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল মুমিনুল হকের দল।

১০৭

দুই দলের লড়াইয়ে সর্বনিম্ন ইনিংসটিও বাংলাদেশের। ২০০১ সালের নভেম্বরে জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৭ রানে অলআউট হয়েছিল নাইমুর রহমানের নেতৃত্বাধীন দল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ