কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট করা হয়েছে। আজ সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তথ্য জানানো হয়। এর ২৩ দিন আগে ২ ফেব্রুয়ারি আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাকারিয়া তাহেরকে (সুমন)। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদকের পদে আছেন। এ ছাড়া সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আশিকুর রহমান মাহমুদকে। তিনি সর্বশেষ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

৪১ সদস্যের কমিটিতে ১১ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। বাকিরা সবাই সদস্য। কমিটির প্রথম সদস্য করা হয়েছে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদকে। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক।

প্রথমে আংশিক কমিটিতে দুজনকে যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম এবং কুমিল্লা মহানগর বিএনপির প্রথম আহ্বায়ক মো.

আমিরুজ্জামান আমীর। নতুন করে দায়িত্ব পাওয়া অপর ৯ জন যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন আলী আক্কাস, মোস্তফা জামান, মোহাম্মদ মাহবুব আলম চৌধুরী, কামরুল হুদা, সরওয়ার জাহান (দোলন), নজির আহমেদ ভূঁইয়া, রেজাউল কাইয়ুম, নজরুল হক ভূঁইয়া ও জামাল খন্দকার। তাঁদের মধ্যে নজরুল হক ভূঁইয়া ও জামাল খন্দকার বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ছিলেন। বাকিরা বিলুপ্ত কমিটিতে একই পদে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

দলীয় সূত্র জানায়, জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে দক্ষিণের ১০টি উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক ইউনিট। ২০২২ সালের ৩০ মে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে আমিন উর রশিদকে আহ্বায়ক এবং জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিনকে সদস্যসচিব করা হয়। এ ছাড়া নয়জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে বাকিদের সদস্য করা হয়। ওই কমিটি দীর্ঘ দুই বছর সাত মাস দায়িত্ব পালন করে। সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি রাতে ওই কমিটি বিলুপ্ত হয়।

নবঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ইচ্ছায় আমাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি চেষ্টা করব সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য। আমরা প্রথম লক্ষ্য দক্ষিণ জেলার আওতাধীন উপজেলাগুলোর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করা। দীর্ঘদিন অনেক উপজেলায় সম্মেলন হয়নি। এরপর দক্ষিণ জেলার সুন্দর একটি সম্মেলন উপহার দেওয়া।’

সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপিকে শক্তিশালী করা। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায় সম্মেলন করতে চাই। এতে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র কম ট র ক কম ট কম ট ত উপজ ল সদস য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

চবির এক বিজ্ঞপ্তিতেই ৩৮ ভুল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রমজান মাস উপলক্ষ্যে ক্লাস ও অফিসের সময়সূচি নিয়ে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৮টি বানান ভুল ও অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এসএম আকবার হোছাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব ভুল চিহ্নিত করা হয়েছে। 

বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী, এ বিজ্ঞপ্তিতে পাওয়া ভুল এবং সেগুলোর প্রমিতরূপ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে থাকা একাডেমিক শব্দটি অ্যাকাডেমিক হবে (বিদেশি ও বিদেশি উৎসজাত শব্দকে বাংলা বর্ণমালায় লেখার জন্য সংশ্লিষ্ট বিদেশি শব্দটির উচ্চারণ প্রধান বিবেচ্য, উচ্চারণ ‘অ্যা’-এর মতো হলে ‘অ্যা’ ব্যবহৃত হবে; ‘এ্যা’ বা ‘এ’ নয়)। তবে অ্যাকাডেমি হিসেবে ব্যবহার সঠিক হলেও একাডেমি বহুল ব্যবহৃত।)

‘তারিখঃ’ লেখা হলেও ‘তারিখ:’ হবে (বিসর্গ (ঃ) কোনো যতিচিহ্ন নয়, এটি বাংলা বর্ণমালার একটি স্বাধীন বর্ণ, এর নিজস্ব উচ্চারণ আছে, পদান্তে অবস্থিত বিসর্গ বর্ণের উচ্চারণ- হ্, যতিচিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত কোলন ( : ) বা সংক্ষেপণচিহ্নের ( . ) স্থলে বিসর্গ বিধেয় নয়)।

বিজ্ঞপ্তিতে ‘উপলক্ষে’ এর স্থলে উপলক্ষ্যে হবে (‘লক্ষ্য’ থেকে ‘উপলক্ষ্য’, কিন্তু ‘উপলক্ষ’ হয় না)। আবার ‘সময়সূচি সংক্রান্ত’ এর স্থলে সময়সূচিসংক্রান্ত হবে (‘-সংক্রান্ত’ শব্দাংশের স্বাধীন ব্যবহার নেই, এটি সর্বদা অন্য শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বসে)।

‘এতদ্বারা’ শব্দটিও ভুল লেখা হয়েছে, এর স্থলে এতদ্দ্বারা হবে (এতদ্বারা=এত+দ্বারা; ‘এত’ অর্থ অতিরিক্ত, বিশাল বা বেশি পরিমাণ হওয়ায় ‘এতদ্বারা’ শব্দের অর্থ  অতিরিক্ত দ্বারা, বিশাল দ্বারা বা বেশি পরিমাণ দ্বারা; কিন্তু এতদ্দ্বারা=এতদ্‌+দ্বারা, ‘এতদ্’ অর্থ এটা, ইহা বা এর হওয়ায় ‘এতদ্দ্বারা’ অর্থ এর দ্বারা, এটার দ্বারা বা এর দ্বারা)।

এছাড়া, ‘যাচ্ছে যে ২০২৫ সাল’ এর স্থলে ‘যাচ্ছে যে, ২০২৫ সাল’ লেখা যুক্তিযুক্ত (‘যে’-এর পর কমা দেওয়া উচিত ছিল)। ‘যোহরের’ স্থলে ‘জোহরের’ এবং ‘নামাযের’ স্থলে ‘নামাজের’ হবে (আরবি ও ফারসি বানানে ‘য’-এর স্থলে ‘জ’ হয়)।

বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামেই ভুল দেখা গেছে। ‘চ.বি.’ স্থলে ‘চবি’ হবে। কারণ, বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান বলছে, ‘ডিগ্রি’-র নামের বানানের সংক্ষেপণে ডট (.) থাকবে না। লিখতে হবে ডট (.) ছাড়া এবং নিরেটভাবে। যেমন- এইচএসসি, এসএসসি, এমএ, এমএসসি, এমডি, এমকম, বিএ, বিএল, বিএসসি, বিকম; ব্যতিক্রম: এম বি বি এস। অন্যান্য সংক্ষেপণের ক্ষেত্রেও ‘মুণ্ডমাল শব্দের’ ন্যায় একই রীতি অনুসৃত হবে। যেমন- এসএমএস, ঢাবি, রাবি, চবি, ইউএনও ইত্যাদি। কিন্তু নোটিশের সব জায়গায় ‘চ.বি.’ লেখা হয়েছে; যা ভুল। 

অনেক জায়গায় ‘ডেপুটি’ ও ‘রেজিস্ট্রার’ শব্দের বানানে শুরুতে থাকা ‘এ’-কারের উপর মাত্রা রয়েছে; যা ভুল।

একই বানান বারবার ভুল হওয়ায় পুনরাবৃত্তি এড়াতে সেগুলো একবার করে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে 'চবি' শব্দটির ভুল সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।

এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এসএম আকবার হোছাইন রাইজিংবিডিকে বলেন, “আসলে আমরা গতানুগতিক যে বানান দেখে আসছি, সে অনুযায়ীই বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া হয়েছে। তবে ভুল তো ভুলই। আমরা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। সামনে আমরা এগুলো সংশোধন করে নেব।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ