শহীদ সেনা দিবস করার উদ্দেশ্য ভালো নয়: ইনকিলাব মঞ্চ
Published: 24th, February 2025 GMT
শহীদ সেনা দিবস ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়নি বলে দাবি করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। এ সময় তারা জনগণের চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে জুলাইয়ের বাংলাদেশকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানান।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী।
তিনি বলেন, “২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করা খুব একটা ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে বলে আমাদের মনে হয় না। বাংলাদেশে যত দিবস আছে, তার তিনটা ক্যাটাগরি ক,খ ও গ আছে। দিবসটি বাংলাদেশের শোক দিবস ঘোষণা করার মতো একটি বিষয়। এদিন ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে, হিন্দিসহ বিভিন্ন বিদেশী ভাষায় কথা বলা হয়েছে, কারা অধিদপ্তরে ঢুকে সেনা অফিসারদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তার ডকুমেন্টেশন রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “সেখানে ক ও খ বাদ দিয়ে সবচেয়ে নিম্নমানের গ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ক ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হলে প্রত্যেকটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান সেটি পালন করতে বাধ্য। কিন্তু গ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করলে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো সেটি করতে বাধ্য নয়। অর্থাৎ তাদেরকে জবাবদিহি করা লাগবে না। আমরা এর নিন্দা জানাই। অবিলম্বে প্রজ্ঞাপনে সংশোধন করে এ দিবসকে ক ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে “
বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনে মুক্ত করায় উপদেষ্টা ড.
তিনি আরো বলেন, “হাজারীবাগ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন, কিলার আব্বাস হিসেবে পরিচিত মিরপুরের আব্বাস আলী, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চু হেলাল, খন্দকার নাইম আহমেদ ওরফে লিটন, রাজারবাগ এলাকার ২২ মামলায় হত্যার আসামী সুইডেন আসলাম- এরা প্রত্যেকে কিভাবে জামিনে মুক্ত হয়েছে, তা আমারা জানতে চাই। এ দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নয়। এ দায় বাংলাদেশের সবচেয়ে সুশীল আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের আসিফ নজরুল স্যার এলাউ না করলে কিভাবে সন্ত্রাসীরা জামিন পেয়েছে, জানতে চাই।”
শরিফ বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের ফলে কোলে করে আদালতে নিয়ে আসা হত, সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের দেখলে মনে হয় তারা মামা বাড়ি এসেছে। যে মাহমুদুর রহমানদের আইন মানার কারণে জেলে যেতে হয়, সেখানে সন্ত্রাসীদের জামিন দিতে আসিফ নজরুল স্যার কত কোটি টাকার প্রলোভন পেয়েছেন, সামনে নির্বাচনে কোন পদের আশা করেছেন, জানতে চাই।”
এ সময় তিনি দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের, ঢাবি আহ্বায়ক আবু সাঈদ প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চবির এক বিজ্ঞপ্তিতেই ৩৮ ভুল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রমজান মাস উপলক্ষ্যে ক্লাস ও অফিসের সময়সূচি নিয়ে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৮টি বানান ভুল ও অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এসএম আকবার হোছাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব ভুল চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী, এ বিজ্ঞপ্তিতে পাওয়া ভুল এবং সেগুলোর প্রমিতরূপ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে থাকা একাডেমিক শব্দটি অ্যাকাডেমিক হবে (বিদেশি ও বিদেশি উৎসজাত শব্দকে বাংলা বর্ণমালায় লেখার জন্য সংশ্লিষ্ট বিদেশি শব্দটির উচ্চারণ প্রধান বিবেচ্য, উচ্চারণ ‘অ্যা’-এর মতো হলে ‘অ্যা’ ব্যবহৃত হবে; ‘এ্যা’ বা ‘এ’ নয়)। তবে অ্যাকাডেমি হিসেবে ব্যবহার সঠিক হলেও একাডেমি বহুল ব্যবহৃত।)
‘তারিখঃ’ লেখা হলেও ‘তারিখ:’ হবে (বিসর্গ (ঃ) কোনো যতিচিহ্ন নয়, এটি বাংলা বর্ণমালার একটি স্বাধীন বর্ণ, এর নিজস্ব উচ্চারণ আছে, পদান্তে অবস্থিত বিসর্গ বর্ণের উচ্চারণ- হ্, যতিচিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত কোলন ( : ) বা সংক্ষেপণচিহ্নের ( . ) স্থলে বিসর্গ বিধেয় নয়)।
বিজ্ঞপ্তিতে ‘উপলক্ষে’ এর স্থলে উপলক্ষ্যে হবে (‘লক্ষ্য’ থেকে ‘উপলক্ষ্য’, কিন্তু ‘উপলক্ষ’ হয় না)। আবার ‘সময়সূচি সংক্রান্ত’ এর স্থলে সময়সূচিসংক্রান্ত হবে (‘-সংক্রান্ত’ শব্দাংশের স্বাধীন ব্যবহার নেই, এটি সর্বদা অন্য শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বসে)।
‘এতদ্বারা’ শব্দটিও ভুল লেখা হয়েছে, এর স্থলে এতদ্দ্বারা হবে (এতদ্বারা=এত+দ্বারা; ‘এত’ অর্থ অতিরিক্ত, বিশাল বা বেশি পরিমাণ হওয়ায় ‘এতদ্বারা’ শব্দের অর্থ অতিরিক্ত দ্বারা, বিশাল দ্বারা বা বেশি পরিমাণ দ্বারা; কিন্তু এতদ্দ্বারা=এতদ্+দ্বারা, ‘এতদ্’ অর্থ এটা, ইহা বা এর হওয়ায় ‘এতদ্দ্বারা’ অর্থ এর দ্বারা, এটার দ্বারা বা এর দ্বারা)।
এছাড়া, ‘যাচ্ছে যে ২০২৫ সাল’ এর স্থলে ‘যাচ্ছে যে, ২০২৫ সাল’ লেখা যুক্তিযুক্ত (‘যে’-এর পর কমা দেওয়া উচিত ছিল)। ‘যোহরের’ স্থলে ‘জোহরের’ এবং ‘নামাযের’ স্থলে ‘নামাজের’ হবে (আরবি ও ফারসি বানানে ‘য’-এর স্থলে ‘জ’ হয়)।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামেই ভুল দেখা গেছে। ‘চ.বি.’ স্থলে ‘চবি’ হবে। কারণ, বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান বলছে, ‘ডিগ্রি’-র নামের বানানের সংক্ষেপণে ডট (.) থাকবে না। লিখতে হবে ডট (.) ছাড়া এবং নিরেটভাবে। যেমন- এইচএসসি, এসএসসি, এমএ, এমএসসি, এমডি, এমকম, বিএ, বিএল, বিএসসি, বিকম; ব্যতিক্রম: এম বি বি এস। অন্যান্য সংক্ষেপণের ক্ষেত্রেও ‘মুণ্ডমাল শব্দের’ ন্যায় একই রীতি অনুসৃত হবে। যেমন- এসএমএস, ঢাবি, রাবি, চবি, ইউএনও ইত্যাদি। কিন্তু নোটিশের সব জায়গায় ‘চ.বি.’ লেখা হয়েছে; যা ভুল।
অনেক জায়গায় ‘ডেপুটি’ ও ‘রেজিস্ট্রার’ শব্দের বানানে শুরুতে থাকা ‘এ’-কারের উপর মাত্রা রয়েছে; যা ভুল।
একই বানান বারবার ভুল হওয়ায় পুনরাবৃত্তি এড়াতে সেগুলো একবার করে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে 'চবি' শব্দটির ভুল সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।
এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এসএম আকবার হোছাইন রাইজিংবিডিকে বলেন, “আসলে আমরা গতানুগতিক যে বানান দেখে আসছি, সে অনুযায়ীই বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া হয়েছে। তবে ভুল তো ভুলই। আমরা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। সামনে আমরা এগুলো সংশোধন করে নেব।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী